১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫
`


বিসিএলে সাফল্যই আমার বাকি : আরমান হোসাইন

-

বাংলাদেশের ফুটবলে দেশী কোচরা আলোচনায় আসেন শীর্ষ লেভেলে সাফল্য পেলেই। প্রিমিয়ার লিগ, ফেডারেশন কাপ, স্বাধীনতা কাপ বা সুপার কাপে স্থানীয় কোচদের দল চ্যাম্পিয়ন হলেই তারা খবরের শিরোনাম হন। যেমন মারুফুল হক, কামাল বাবু, সাইফুল বারী টিটু, জাকারিয়া বাবুরা এভাবেই কোচ হিসেবে ব্যাপক পরিচিত পান। তবে জুনিয়র ডিভিশনে সাফল্য পাওয়া কোচদের বলতে গেলে কভারেজটা তেমন জোটেই না। এরা দিনের পর দিন দলকে চ্যাম্পিয়ন করালে বা ওপরের বিভাগে তুললেও তাদের কম মানুষই চেনেন। তেমনই এক কোচ আরমান হোসাইন। প্রতি সিজনেই তার দলের সফলতা।
এবারো তিনি দ্বিতীয় বিভাগ লিগে চ্যাম্পিয়ন করিয়েছেন যাত্রাবাড়ী ঝটিকা সংসদকে। পাইওনিয়ার থেকে তৃতীয় বিভাগ, দ্বিতীয় বিভাগ ও সিনিয়র ডিভিশনে সফল হলেও এখনো বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে (বিসিএলে) ব্যর্থ। বিসিএল থেকে কোনো দলকেই তুলতে পারেননি প্রিমিয়ারে। সেই আফসোসই তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে শ্মশ্রুমণ্ডিত এই কোচকে।
সাবেক মিডফিল্ডার আরমান ২০০২ সাল থেকেই কোচিংয়ে সাফল্য পেয়ে আসছেন। সে বছর তার কোচিংয়ে পাইওনিয়ার লিগে চ্যাম্পিয়ন হয় ঢাকা জুনিয়র। এই পাইওনিয়ার লিগেই ২০১৪ সালে নারিন্দা জুনিয়র লায়ন ক্লাবকে শিরোপা পাইয়ে দেন। ফলে দলও উঠে তৃতীয় বিভাগে। এ ছাড়া ২০১২ সালে মাতুয়াইল জুনিয়রও ২০১৫ সালে টাঙ্গাইল ফুটবল একাডেমি তার কোচিংয়ে পাইওনিয়ারে রানার্সআপ হয়ে তৃতীয় বিভাগে প্রমোশন পায়। ২০০৬ সালে তৃতীয় বিভাগ লিগে পিডব্লিউডিকে চ্যাম্পিয়ন এবং ২০১৮ সালে কদমতলা সংসদকে রানার্সআপ করান।
আরমান হোসাইন এবারই প্রথম চ্যাম্পিয়নশিপের স্বাদ পেল বসুন্ধরা গ্রুপ দ্বিতীয় বিভাগ লিগে। তবে এবার যাত্রাবাড়ী ঝটিকা সংসদকে শিরোপা এনে দেয়ার আগে ২০১৩ সালে পিডব্লিউডি, ২০১৭ সালে কসাইটুলি সমাজ কল্যাণ পরিষদ এবং ২০১৯ সালে ইস্ট অ্যান্ড ক্লাবকে দ্বিতীয় বিভাগে রানার্সআপ করান। যার ফলে তিন দলই সিনিয়র ডিভিশন বা প্রথম বিভাগে উন্নীত হয়। আরমানের কোচিং ক্যারিয়ারে এবারই প্রথম তার দল টানা আট ম্যাচ জিতেছে। এরপর দলও চ্যাম্পিয়ন। এটাকে স্মরণীয় বলছেন তিনি। ২০১৩ সালে ২৪ বছর পর দ্বিতীয় বিভাগ থেকে প্রথম বিভাগ বা সিনিয়র ডিভিশনে উঠে পিডব্লিউডি। ২০১৯ সালে ইস্ট অ্যান্ড ক্লাব ২৬ বছর পর দ্বিতীয় বিভাগ থেকে সিনিয়র ডিভিশনে উঠে। তার কোচিংয়ে দুই দলের এই অপেক্ষার অবসানকেও বিশেষভাবে উল্লেখ করলেন তিনি। যদিও দল দুু’টি রানার্সআপ হয়েছিল। ১৯৯১ সালে ইস্ট অ্যান্ডের হয়ে সিনিয়র ডিভিশনে খেলে অবসরে যান আরমান। এর আগে বাংলাদেশ স্পোর্টিং, জুরাইন জনতা, নবাব কাটরাতে খেলেছেন। ‘বি’ লাইসেন্সধারী এই কোচের দর্শন ফুটবলাররা যেন সহজ খেলাটা মাঠে খেলে। আর তাতেই সাফল্য বলে জানালেন আরমান। মাঠে তার ফরমেশন ৪-৩-৩।
২০১৯ সালে সিনিয়র ডিভিশনেও চ্যাম্পিয়ন আরমান হোসাইনের দল। সেবার তার কোচিংয়ে গড়া কাওয়ানবাজার প্রগতি সংসদ ট্রফি নিয়ে উল্লাস করে। ২০১৪ সালে সিনিয়র ডিভিশনে রানার্সআপ দল টিঅ্যান্ডটি ক্লাবেরও কোচ ছিলেন তিনি।
তবে চারটি ডিভিশনে টিমকে সাফল্য এনে দিলেও বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে এখনো ব্যর্থ এই কোচ। বিসিএলে ১০ বছর কোচিং করিয়েও কোনো দলকে তুলতে পারেননি। টিঅ্যান্ডটি ক্লাবে পাঁচ-ছয় বছর এবং নোফেল স্পোর্টিং ক্লাব ও ঢাকা ওয়ান্ডারার্সে এক বছর কাজ করলেও এরা চ্যাম্পিয়ন বা রানার্সআপ হতে পারেনি, যা এই কোচের এই আফসোস। সে সাথে কখনই জাতীয় দলের কোনো লেভেলে ডাক না পাওয়ার কষ্টও তাড়িয়ে বেড়ায় তাকে।
তবে তার হাত ধরেই ঢাকার ফুটবলে আগমন জাতীয় দলের স্ট্রাইকার মতিন মিয়া, মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদ, রফিকুল ইসলাম ও ডিফেন্ডার ইয়াসিন আরাফাতের। তার তার বড় তৃপ্তি। এখন আরমানের স্বপ্ন জাতীয় দলেও কোচিং করানো।


আরো সংবাদ



premium cement