১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রাম ছাগল ও হুলো বেড়াল

-

রাম ছাগল চলছিল শ্বশুরবাড়ি। পায়ে তার জরির জুতো ঝকমক করছে। গায়ে বাহারি রঙের পাঞ্জাবি।
গলায় গামছা, হাতে দামি হাত ঘড়ি। ঘর থেকে বের হওয়ার আগে সে গায়ে মেখে বের হয়েছে বেলি ফুলের খুশবু। শ্বশুরবাড়ি বলে কথা! মান সম্মান ও শান শওকতের সাথেই যেতে হবে। রাম ছাগলের বাস ছিল রসুলপুর গ্রামে। সে গ্রামের পরেই ছিল একটা গহিন বন। বন পার হলে তবেই কৃষ্ণ গড়াই গ্রাম। আর সেই গ্রামেই তার শ্বশুরবাড়ি।
তার আদরের বউ আর ছেলেমেয়েরা অনেক দিন হলো সেখানে যেয়ে বসে আছে। ফিরে আসার নামটি একেবারেই নেই তাদের। তাই রাম ছাগল এবার নিজেই চলেছে বউ, ছেলেমেয়েদের ফিরিয়ে আনতে। হাঁটতে হাঁটতে সে রসুলপুর গ্রাম পেরিয়ে বনের মাঝে ঢুকে পড়ল। তারপর সে বনের মাঝ দিয়ে হাঁটতে লাগলো। পথ দীর্ঘ হওয়ায় সময় কাটাতে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় রাম ছাগলটা ঠোঙা ভরে বাতাসা নিয়ে এসেছিল। চলার পথে একটা একটা করে সে বাতাসা খেতে খেতে এগুতে লাগল। হাঁটতে হাঁটতে এক সময় সন্ধ্যা হয়ে এলো। সে তখন বনের মাঝখানে। সে দেখলো সামনে একটা বিশাল বটগাছ। আর বটগাছের পিছনেই লতাপাতার জঙ্গল। হাঁটতে হাঁটতে রাম ছাগলের বেশ খিদে পেয়েছিল। সে লতাপাতার জঙ্গলে ঢুকে প্রাণভরে কচি পাতা খেয়ে নিলো। তারপর পাশের একটা ডোবা থেকে পানি খেয়ে তার ছাগলা দাড়িতে তা দিতে দিতে সে ফিরে এলো সেই বট গাছটার কাছে। ততক্ষণে রাত নেমেছে। সে দেখল বট গাছটার নিচে একটা বড় গর্ত বা খোড়ল আছে। ‘বাহ্, বেশ তো’, রামছাগলটা খুশি হয়ে উঠল। সে প্রভুর নাম স্মরণ করে গামছাটা বিছিয়ে সেখানেই শুয়ে পড়ল। আর সারা দিনের ক্লান্তিতে প্রায় সাথে সাথেই নাক ডেকে ঘুমিয়ে গেল। ঘ, ঘ, ঘরর, ঘড়াৎ, ঘরর...
সে কি ভীষণ নাক ডাকা! তার নাক ডাকার আওয়াজে পাশের ছাতিম গাছের ডালে ঘুমিয়ে থাকা বন্য হুলো বিড়ালটার ঘুম ভেঙে গেল। সে আর সারারাত ঘুমাতে পারলো না। হুলো বিড়াল রেগে গিয়ে মনে মনে ভাবল তাকে প্রতিশোধ নিতেই হবে। পরের দিন সূর্য উঠল, সকাল হলো। রাম ছাগল ঘুম ভেঙে উঠে ডোবায় হাতমুখ ধুয়ে লতাপাতার জঙ্গল থেকে নাস্তা খেয়ে আবার পথ ধরে রওনা দিলো শ্বশুরবাড়ির দিকে। ওই দিকে দুষ্টু হুলো বিড়ালটা পথের বাঁকে একটা বাঁশঝাড়ের আড়ালে লুকিয়ে ছিল। রামছাগল বাঁক ঘুরে সামনে আসতেই হুলো বিড়ালটা রামছাগলের মাথায় ঝাঁপিয়ে পড়ে তার চোখে মুখে বড় বড় খামচি দিলো। তার গাল কেটে রক্ত বের হতে লাগল। রামছাগল গেল বেজায় রেগে। সে তার শিং দিয়ে হুলো বেড়ালকে দিলো বেধম ধাক্কা। ধাক্কা খেয়ে হুলো বেড়ালটা জ্ঞান হারিয়ে ফেললো। তার জ্ঞান যখন ফিরে এলো, সে দেখলো রামছাগলটা পথ ধরে চলে যাচ্ছে। লাফ দিয়ে রামছাগলের পিঠে চড়ে হুলো বেড়াল তার পাঞ্জাবিটা আঁচড়ে, কামড়ে ছিঁড়ে দিয়েই দৌড়ে পালাল। রামছাগল আর কী করে, ছেঁড়া পাঞ্জাবি পরে তো আর শ্বশুরবাড়ি যাওয়া যায় না! সে কাঁদতে কাঁদতে নিজের বাসায় ফিরে যাওয়ার পথ ধরল। সেবারের মতো তার আর শ্বশুরবাড়ি যাওয়া হলো না।


আরো সংবাদ



premium cement
শ্রমিকদের অবহেলিত রেখে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব নয় : সেলিম উদ্দিন মহাদেবপুরে যুবকের লাশ উদ্ধার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম মুখ্য সংগঠকসহ ৩ নেতাকে মারধর সিরিয়ায় ইসরাইলের অবৈধ আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ১২ বছর পর দামেস্কে আবার কার্যক্রম শুরু করল তুর্কি দূতাবাস দেশের মানুষকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য আমরাই যথেষ্ট : আসাদুজ্জামান রিপন জনগণের অধিকার রক্ষায় বিএনপি ঐক্যবদ্ধ : খন্দকার মুক্তাদির সব ধরনের ক্রিকেটে নিষিদ্ধ সাকিবের বোলিং ফেনীতে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসায় আর্থিক সহায়তা বিজয় দিবস উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূতের সাথে মঈন খানের বৈঠক

সকল