০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`


উচ্চ ফলনশীল গাজরের জাত উদ্ভাবন

- ছবি - ইউএনবি

দেশী ও বিদেশী ৮০টি জাত নিয়ে গবেষণা করে উচ্চ ফলনশীল গাজরের জাত উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. ম. হারুন অর রশিদ ও তার গবেষকদল।

ইউএসএআইডি, ইউএসডিএ/এআরএস ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের যৌথ অর্থায়নে যুক্তরাষ্ট্রের ৫৬টি ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ২৪টি জাতের গাজর নিয়ে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়েছে।

দেশে প্রচলিত পদ্ধতিতে গাজরের হেক্টরপ্রতি ফলন গড়ে ১০ টন হলেও গবেষণায় উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল গাজরগুলোর জাত থেকে হেক্টরপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টন ফলন পাওয়া যাবে। এছাড়া গাজরগুলো দেশের উষ্ণ ও খরাপ্রবণ অঞ্চলেও চাষের উপযোগী।

উচ্চ ফলনশীল এসব জাতের গাজর চাষ সম্পর্কে অধ্যাপক বলেন, ৭০ থেকে ৮০ দিনেই গাজরগুলোর ফলন পাওয়া যায় এবং এক একটি গাজরের ওজন প্রায় দুই শ’ থেকে আড়াই শ’ গ্রাম পর্যন্ত হয়।

তিনি আরো বলেন, ‘গাজরগুলো দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন খরাপ্রবণ এলাকায় যেমন রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা, লালমনিরহাট ও পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় মাঠ পর্যায়ে চাষ করে সফলতা পেয়েছি। তাছাড়া যেসব অঞ্চলে আলুর ফলন বেশি হয় সেখানে এসব গাজরের চাষ কৃষকদের ভাগ্য বদলাতে সাহায্য করবে।’

অধ্যাপক হারুন অর রশিদ বলেন, ‘দেশে শুধু কমলা রঙের গাজর পাওয়া গেলেও লাল, সাদা, হলুদ ও বেগুনি রঙের বিভিন্ন জাতের গাজর দেশে চাষ উপযোগী করা হয়েছে। লাল ও বেগুনি রঙের হওয়ায় গাজরগুলোতে ভিটামিন এ, অ্যান্থোসায়ানিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি।’

তিনি আরো বলেন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি হৃদরোগ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। রঙিন হওয়ায় গাজরগুলো থেকে প্রাকৃতিক ও নিরাপদ খাবার রঙ পাওয়া যাবে যা পরবর্তীতে কেক, আইসক্রিমসহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রীতে ব্যবহার করা যাবে।

বাংলাদেশের আবহাওয়া গাজরের বীজ উৎপাদনের উপযোগী না হওয়ায় প্রায় ৯৯ শতাংশ বীজ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। আমদানি করা প্রতি কেজি বীজের বাজারমূল্য প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। আমদানিকৃত বীজের অধিকাংশ সঙ্করায়িত বা হাইব্রিড জাতের হওয়ায় উৎপাদিত গাজর থেকে পুনরায় বীজ উৎপাদন সম্ভব হয় না।

এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক বলেন, ‘উচ্চ ফলনশীল গাজরের জাতগুলো থেকে বীজ তৈরির কাজ চলছে। আমাদের দেশের আবহাওয়ায় গাজরগুলো উচ্চ ফলন দেয়ায় আশা করছি গাজরগুলো থেকে বীজ তৈরি সম্ভব হবে।’

বীজ তৈরি হলে কৃষকের হাতে স্বল্পমূল্যে পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি সরকারের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রাও সাশ্রয় হবে বলে জানান তিনি।

সূত্র : ইউএনবি


আরো সংবাদ



premium cement