১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
মাদরাসায় খেদমতের পাশাপাশি

খাঁটি পণ্যের ব্যবসা করে যেভাবে সফল এই আলেম

মাত্র তিন বছরে অন্তত ৫০ হাজার ঠিকানায় আম পাঠিয়েছেন মাওলানা আহমাদ মহিউদ্দীন - ছবি : সংগৃহীত

চারিদিকে যখন ভ্যাজালে ভরা, তখন ক্রেতাদের আশার আলো হয়ে খাঁটি পণ্যের পসরা সাজিয়ে ব্যবসা করছেন তরুণ আলেম মাওলানা আহমাদ মহিউদ্দীন। আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে অবাককরা ব্যাপার হলো- অল্প দিনেই তিনি তার ব্যবসায় সাফল্য পেয়েছেন।

দেশের কওমি ধারার ব্যবসায়ী আলেমদের সঙ্ঘবদ্ধ প্লাটফর্ম ‘কওমি উদ্যোক্তা’র হাত ধরে মাওলানা আহমাদ মহিউদ্দীনের ব্যবসায় পদার্পণ। শুরুতে ছিল শুধু আমের ব্যবসা। অল্প সময়েই তিনি এতে বাজিমাত করেন। মাত্র তিন বছরে অন্তত ৫০ হাজার ঠিকানায় আম পাঠান তিনি।

নয়া দিগন্তকে তিনি বললেন, গুণমান ঠিক রেখে ক্রেতাদের কাছে ফ্রেশ আম পৌঁছে দেয়ার কারণে খুব শিগগিরই আমি তাদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হই এবং মাত্র তিন বছরে অন্তত ৫০ হাজার ঠিকানায় আম পাঠাই।

আমের ব্যবসায় ঈর্ষণীয় এই সাফল্য পেয়ে বসে থাকেননি এই তরুণ আলেম উদ্যোক্তা; বরং ব্যবসার পরিধি আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়ে গড়ে তোলেন ‘আহমাদ অয়েল মিল অ্যান্ড অর্গানিক শপ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। আনুষ্ঠানিকভাবে মিলটি চালু হওয়ার পর খাঁটি সরিষার তেলের ব্যবসায়ও ক্রেতাদের বিপুল সাড়া পান তিনি।

‘আমার সরিষার তেলের ব্র্যান্ডটিকে এমন স্তরে নিয়ে যেতে চাই যে, মানুষ যাতে সরিষার তেল বললেই ‘আহমাদ সরিষার তেল’ বুঝতে পারে। আমি আমার নামের প্রতিষ্ঠানটিকে একটি গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিতে দাঁড় করাতে চাই এবং অন্তত এক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চাই।’- যোগ করেন মাওলানা আহমাদ মহিউদ্দীন।

তিনি জানান, এর মধ্যে তিনি তার ব্যবসায় খাঁটি ঘি, মধু, কালোজিরার তেল, নারিকেল তেল, হলুদ, মরিচ, ধনিয়া ইত্যাদি পণ্যগুলোও নিয়ে এসেছেন এবং এক্ষেত্রে সাফল্য পাচ্ছেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রথমে তেমন সিরিয়াস ছিলাম না, এখন চিন্তা করছি মাদরাসায় খেদমতের পাশাপাশি ব্যবসাটাকেও আরো ভালোকরে দাঁড় করাব। যেহেতু মানুষের আগ্রহ খাঁটি পণ্যের প্রতি, এজন্য আমি মনে করি- খাঁটি পণ্যের ব্যবসাটা ধরে রাখতে পারলে আমি আরো অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারব।

ব্যবসাকে ইবাদত হিসেবে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মাওলানা আহমাদ মহিউদ্দীন। তার মতে- ভ্যাজালের যুগে খাঁটি পণ্য দেয়াটাও পুণ্যের কাজ।

তিনি বলেন, আমার কোম্পানির কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি সততা, বিশ্বস্ততা ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আস্থা অর্জন করতে পারে, তাহলে তার চাকরি পাঁচ বছর পূর্ণ হলে তাকে কোম্পানির পক্ষ থেকে তাকে ওমরাহ করানো হবে।

এরই মধ্যে তার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে একটি মাদরাসা পরিচালনার পাশাপাশি অন্য একটি মাদরাসার একজন শিক্ষকের বেতনের দায়িত্ব নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ‘আহমাদ অয়েল মিল অ্যান্ড অর্গানিক শপ’ বেশ কয়েকজনের এতিম শিক্ষার্থীর খরচও বহন করছে বলে জানালেন এই আলেম।

হাজারো পেশা থাকতে ব্যবসায় কেন আসলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে মাওলানা আহমাদ মহিউদ্দীন বলেন, মূলত উস্তাদদের পরামর্শে ও কওমি উদ্যোক্তার অনুপ্রেরণায় এ পেশায় আসা। তাছাড়া এটি একটি সম্মানজনক উপার্জন ক্ষেত্রও বটে। ইতিবাচক এরকম নানা বিষয় চিন্তা করে এ পথে পা বাড়িয়েছি। আমি যেন সাফল্যের সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছতে পারি- সেজন্য সবার কাছে দোয়া চাই!


আরো সংবাদ



premium cement