রংপুরে হুমকি দাতা ইউপি মেম্বারকে তলব করল রিটার্নিং কর্মকর্তা
- সরকার মাজহারুল মান্নান, রংপুর অফিস
- ১৯ মে ২০২৪, ২৩:০০
পছন্দের প্রার্থীকে ভোট না দিলে জলন্ত আগুনে শিক গরম করে সোজা করার হুমকি দাতা আলোচিত রংপুরের বদরগঞ্জের কালুপাড়া ইউনিয়নের মেম্বার শফিকুল ইসলামকে তলব করেছে রিটার্নিং কর্মকর্তা।
রোববার (১৯ মে) বিকেলে বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহনাজ পারভীন স্বাক্ষরিত ওই চিঠি ইস্যু করা হয়। চিঠিতে আগামীকাল বেলা ১১টায় তার কার্যালয়ে ওই ইউপি মেম্বারকে স্বশরীরে হাজির হয়ে শুনানীতে অংশ নিতে বলা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, আচরণবিধি লংঘন করে গত ১৫ মে চেয়ারম্যান প্রার্থী ফজলে রাব্বী সুইটের উপস্থিতিতে বৈরামপুর বাজার-সংলগ্ন স্কুল মাঠে উঠান বৈঠকে কালুপাড়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার শফিকুল ইসলাম ভোটারদের ভয়ভীতি ও বিভিন্ন হুমকি প্রদান করেছেন মর্মে অভিযোগ হয়েছে। যা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধা।
শুনানীতে অভিযোগকারী অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী হাসান তবিকুর চৌধুরী পলিনকেও উপস্থিত হতে বলা হয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহানা পারীভন জানান, নির্বাচনি আচরণবিধিমালা মানতে সবাই বাধ্য। এ বিষয়ে অভিযোগের পাশাপাশি মিডিয়ায় খবর ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর বিষয়ে ওই মেম্বারকে শুনানীর জন্য ডাকা হয়েছে। এরপর বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা যায়, বুধবার (১৫ মে) রাতে বদরগঞ্জের কালুপাড়া ইউনিয়নের বৈরামপুর বাজার-সংলগ্ন হাইস্কুল মাছে ফজলে রাব্বি সুইটের উপস্থিতিতে উঠান বৈঠকে স্থানীয় মেম্বার শফিকুল ইসলাম ভোটারদের হুমকি দেন। ওই ভিডিওটি বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
এ সময় বক্তব্যে শফিকুল বলেন, ‘সুইট এলাকার সন্তান। গত নির্বাচনে এলাকার দুই কেন্দ্রে সুইটের বিপক্ষ প্রার্থীরা ভোট পেয়েছিলেন ৩৩টি। আশা করি, এবার যেন সেটাও না পান।’
এরপর উপস্থিত ভোটারদের উদ্দেশে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এবার শনাক্ত করব সুইটের অ্যাগেইনেস্টকে। আমরা প্রথমে তাদের আদর করব, হাত ধরব, প্রয়োজনে পা ধরব। তবু যদি সোজা না হয়, তাহলে কী করব?’
ইউপি সদস্যের এমন প্রশ্নের জবাবে উপস্থিত কয়েকজন বলেন, ‘ঢাশি ধরব।’ এ সময় শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘না, প্রয়োজনে জ্বলন্ত আগুনে শিক গরম করে সোজা করব।’
ফজলে রাব্বি সুইট পর পর দুইবার উপজেলা চেয়ারম্যান। এবারো তিনি চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি বদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং রংপুর জেলা যুবলীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি। এখানে তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হাসান তবিকুর চৌধুরী ওরফে পলিন চৌধুরী। তিনি স্থানীয় এমপি যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসানুল চৌধুরী ডিউক এমপির চাচাত ভাই। চতুর্থ দফায় হ্যালো আগামী ৫ জুন এ উপজেলায় ভোট হবে।
ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওটা (বৈরামপুর এলাকা) হামার বাড়ি। সুইটকে ভোট দিতে ভাই-ভাতিজাদের নিয়ে হাইস্কুল মাঠে ঘরোয়া বৈঠক করেছি। সেখানে যদি পরিবারের মধ্যে দু-একজন ট্যারি হয়, তাহলে হামরা ডাংগাই না মারি সেটা হামার ব্যাপার। হামরা কি অন্য এলাকাত গিয়ে সেটা করোছি?’
তিনি বলেন, ‘প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মীর বাড়িতে হামলা চালাইনি। ওই কর্মীর বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারকে সুইটের পক্ষে ভোট করার কথা বলেছি।’
১৬ মে বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞাকে বদলির সিদ্ধান্ত দিয়ে চিঠি ইস্যু করে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপ সচিব মিজানুর রহমান। তাকে রংপুর পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
নিজের উপস্থিতিতে একজন কর্মীর এ ধরনের বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফজলে রাব্বি সুইটের সাথে টেলিফোনে একাধিকার ফোন করা হলেও তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা