বগুড়ায় স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা : মামলা দায়ের, পাওয়া যায়নি শিশুর মাথা
- বগুড়া অফিস
- ০৩ জুন ২০২৪, ১৯:২৮
বগুড়ার শাজাহানপুরে আবাসিক হোটেলে আশামনি (২১) ও তার ১১ মাস বয়সী শিশু আব্দুল্লাহকে গলা কেটে হত্যায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় হত্যার কারণ অজানা দেখিয়ে আশামনির স্বামী সেনা সদস্য আজিজুল হক ও তার বাবা হামিদুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্ত দু’জনই শাজাহানপুর থানা হেফাজতে রয়েছেন। এছাড়া করতোয়া নদীতে অভিযান পরিচালনা করেও শিশু রাফির শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার করা যায়নি।
সোমবার বেলা ১১টা থেকে আজিজুল হককে নিয়ে মাথা উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। কিন্তু বেলা ৩টা পর্যন্ত তা উদ্ধার করা যায়নি।
এর আগে, রোববার বেলা ১১টার দিকে বগুড়া শহরের উপকণ্ঠ বনানীর শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেল থেকে আশামনি ও আব্দুল্লাহ আল রাফির গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার শুভেচ্ছা হোটেলে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে একটি কক্ষ বুকিং করেন আজিজুল হক। এরপর বগুড়া শহর থেকে গরু জবাই করার চাকু কেনেন তিনি। কেনাকাটা করে দেয়ার কথা বলে শনিবার বিকেলে শ্বশুরবাড়ি থেকে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে শহরে বের হন আজিজুল। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হোটেলে ওঠে তারা। রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে প্রথমে স্ত্রীকে বাথরুমে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন। এরপর শিশু রাফিকে গলা কেটে হত্যা করতে গিয়ে শরীর থেকে মাথা আলাদা হয়ে যায়। পরে সন্তানের মাথা ব্যাগে নিয়ে হোটেলকক্ষে তালা দিয়ে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে বগুড়া শহরের ফতেহ আলী রেলসেতু থেকে করতোয়া নদীতে ফেলেন।
আরো জানা গেছে, স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার পর আজিজুল হক শ্বশুরবাড়িতে ফিরে স্ত্রী-সন্তানকে হারানোর মিথ্যা নাটক সাজান। তিনি শ্বশুরকে সাথে নিয়ে রাতভর শহরে খোঁজাখুঁজি করে থানায় অভিযোগ নিয়ে যান। রোববার সকালে স্ত্রী-সন্তানের সন্ধান চেয়ে শহরে মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করেন। পরে বেলা ১১টার দিকে ভাড়া পরিশোধ করতে আজিজুল হোটেলে গেলে তার কথাবার্তায় কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। পরে তাকে আটক করে থানায় খবর দিলে পুলিশ তাদের হেফাজতে নেয়। একপর্যায়ে আজিজুলে স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হোটেলটির ৩০১ নম্বর কক্ষ থেকে তার স্ত্রী ও সন্তানের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করা হয়।
এদিকে রোববার রাজশাহী থেকে যাওয়া ডুবুরি দল করতোয়া নদীতে আজিজুলের দেখানো জায়গায় অভিযান চালিয়েও ব্যর্থ হয়। সোমবার বেলা ১১টা থেকে আবারো শিশুটির মাথা উদ্ধারে অভিযান শুরু করে।
শাজাহানপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, গ্রেফতার আজিজুল ও তার বাবা হামিদুল ইসলামকে আদালতে সোপর্দ করা হচ্ছে। এছাড়াও শিশুটির মাথা উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।