১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রফতানির হিসাবে গরমিল, নানা প্রশ্ন

-


ভারত, পাকিস্তান, ভুটান ও শ্রীলঙ্কার চেয়েও বাংলাদেশের তথ্যের মান দুর্বল। জানিয়েছে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী বিশ্বব্যাংক। সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্ট্যাটিসটিক্যাল ক্যাপাসিটি স্কোরে ২০১৯ সালে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৬২ দশমিক ২ শতাংশ যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুধু আফগানিস্তানের ওপরে। এরপর গত পাঁচ বছরে এই স্কোর কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে তা পরবর্তী প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে জানা যাবে।
তথ্য-উপাত্তের অসততা বিভিন্ন সময় আলোচিত হয়েছে। জিডিপি ও মাথাপিছু আয় নির্ণয়ে তথ্য বিকৃতির মাধ্যমে অতিরঞ্জিত করার ইতিহাস অনেক পুরনো। বিবিএসের হিসাবের সাথে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হিসাবের সবসময় পার্থক্য থাকে। অথচ বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও এডিবির মতো প্রতিষ্ঠানগুলো খুবই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করে থাকে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক সচিব রীতি ইব্রাহিম বলেছেন, আমি তরুণ বয়সে দেখেছি, জিডিপি কত হবে, তা আগে ঠিক করা হয়। পরে ‘ব্যাক ক্যালকুলেশন’ করে হিসাব ঠিক করা হয়। মাথাপিছু আয়ের সরল হিসাব নিয়ে রয়েছে অনেক বিতর্ক। ২০২২ সালের শুমারি অনুযায়ী, দেশের জনসংখ্যা সাড়ে ১৬ কোটির কিছুটা বেশি, যা ২০২১ সালের অনুমিত জনসংখ্যা থেকে প্রায় ৮০ লাখ কম। জল্পনা হলো, মাথাপিছু আয় বেশি দেখানোর জন্যই জনসংখ্যা কমিয়ে দেখানো হয়েছে।
তথ্য বিকৃত করা বা গরমিলের স্মরণকালের সবচেয়ে বড় উদাহরণ দেখা গেল রফতানি খাতের সাম্প্রতিক তথ্যে। ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানো রফতানি তথ্য সংশোধনের পর দেশের অর্থনীতির সূচকগুলোর গ্রহণযোগ্যতা আবারো বড় ধরনের প্রশ্নের মুখে। সরকারি তথ্য-উপাত্তের ওপর এতদিন দেশী-বিদেশী গবেষক ও বিনিয়োগকারীদের যে অবিশ্বাস ছিল তা সত্য প্রমাণিত হলো।

রফতানির তথ্যে গরমিলের কারণ
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত গত অর্থবছরের ১০ মাসে পণ্য জাহাজীকরণের ভিত্তিতে রফতানির যে তথ্য প্রকাশ করেছিল, প্রকৃত রফতানি তার চেয়ে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার কম। ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে ইপিবির তথ্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। বিভিন্ন সময়ে আইএমএফ থেকেও প্রশ্ন তোলা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইপিবির তথ্যের মধ্যে বড় পার্থক্য নিয়ে গণমাধ্যমে রিপোর্টও হয়েছে। বর্তমানে আইএমএফের ঋণের কিস্তির শর্তমাফিক তাদের পরামর্শ মানতে গিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও ইপিবি কয়েক দফা বৈঠক করে। মূলত ইপিবি কাস্টমস হাউজের তথ্যের ভিত্তিতে পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। পদ্ধতিগত কারণে কাস্টমস হাউজের তথ্যে একই রফতানির ডাবল বা ট্রিপল কাউন্টিংয়ের ঘটনা ঘটেছে। পণ্যের গুণগত মান বা অন্য কারণে কাস্টমস হাউজের শিপমেন্ট বাতিলের পরও রফতানির জন্য দুইবার গণনা করা হতো। ইপিবি মূলত এনবিআরের কাস্টম হাউসের তথ্যের ভিত্তিতে পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রফতানির জন্য জাহাজীকরণের আগে পণ্য যাচাইয়ের পর বিল অব এক্সপোর্ট ইস্যু করে। এটি ধরেই তারা রফতানি হিসাব করে থাকে। তবে বিল অব এক্সপোর্ট ইস্যুর পর কোনো ত্রুটি বা অন্য কোনো কারণে রফতানি বাতিল হলেও হিসাব থেকে আর বাদ দেয়া হতো না। আবার কাউকে উপহার বা স্যাম্পল হিসেবে পণ্য পাঠালে রফতানি হিসেবে গণ্য করা হতো। এসব কারণে প্রকাশিত রফতানির পরিমাণ প্রকৃত রফতানির চেয়ে অনেক বেশি দেখা যেত।

নীতিগতভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকের মূল্য পরিশোধের ভিত্তিতে রফতানি তথ্য সঙ্কলন করে। বিবির নীতিমালা অনুযায়ী, বন্দর থেকে পণ্য রফতানির পরপরই তা বিবির ড্যাশ বোর্ডে রিপোর্ট করতে হয়। এর ১২০ দিনের মধ্যে রফতানি মূল্য দেশে আনার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু প্রায়ই ওই সময়ের মধ্যে রফতানি আয় না আসার নজির রয়েছে। অন্যদিকে ইপিবি এনবিআরের অ্যাসাইকোডা থেকে রফতানি আয়ের তথ্য সংগ্রহ করে। ইপিজেডের বাইরে রফতানিমুখী কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে কাঁচামাল বিক্রি হলে তা কাস্টমসের অ্যাসাইকোডাতে স্থানীয় রফতানি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। তা থেকে পণ্য উৎপাদনের পর রফতানি হলে অ্যাসাইকোডাতে পুনঃরফতানি হিসেবে ধরা হয়। এভাবে রফতানির ডাবল এন্ট্রি হয়। কিন্তু ইপিবি আসলে এনবিআর ও কাস্টমসের অ্যাসাইকোডা ওয়ার্ল্ড থেকে অপরিপক্ব তথ্য সংকলন করে। এর ফলে ইপিবির তথ্যের সাথে বিবির প্রত্যাবাসিত রফতানি আয়ের তথ্যে দীর্ঘদিন ধরে গরমিল চলে আসছে।

এ ছাড়াও এনবিআর রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) থেকে কোনো পণ্য স্থানীয়ভাবে বিক্রয় হলে তাকে রফতানি হিসেবে গণ্য করে। সে কাপড় দিয়ে পোশাক প্রস্তুত করে বিদেশে রফতানি করলে সেটি দ্বিতীয় দফায় রফতানির খাতায় যুক্ত হয়। কিন্তু বিবি তা না করে শর্ট শিপমেন্ট সমন্বয় করে। এনবিআর ও ইপিবি শর্ট শিপমেন্ট সমন্বয় করে না। আবার একই ইনভয়েসের বিপরীতে ভিন্ন ভিন্ন এইচএস কোডে একই মূল্যমানের ভিন্ন ভিন্ন তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বিল অব এক্সপোর্ট হওয়ার পর অনেক সময় পণ্য জাহাজীকরণ হয় না, যা এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে বাদ দেয়া হয়। কিন্তু রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর হিসাব থেকে বাদ দেয়া হয় না। আবার অনেক সময় যে পরিমাণ মূল্যের পণ্য রফতানি হয়, সেই পরিমাণ ডলার প্রত্যাবাসিত হয় না। এ কারণে ইপিবি, এনবিআর ও বিবির তথ্যের মধ্যে বড় ধরনের অসামঞ্জস্য তৈরি হয়। ইপিবির তথ্যের ভিত্তিতে রফতানির আড়ালে ব্যবসায়ীরা টাকা পাচার করছেন বলে বিভিন্ন পক্ষ দোষারোপ করে আসছিল। আলোচনায় দেখা যায়, কেবল ইপিবি নয় বরং বিবি এবং এনবিআর এর দায় রয়েছে তথ্য-উপাত্তের এই গরমিলের পেছনে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আইএমএফের চাপে সংস্থাগুলো সঠিক তথ্য প্রদান করা শুরু করেছে। ফলে রফতানির হিসাব যত বড় করে দেখানো হতো, আসলে রফতানি এত বেশি নয়। রফতানির হিসাব বেশি দেখানোর কারণেই চলতি হিসাব উদ্বৃত্ত আসত।’ এখন আইএমফের চাপে রফতানির হিসাবে ফাঁকি বন্ধ হয়েছে। যে কারণে চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থেকে বড় ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

রফতানিতে গরমিলের চিত্র, অর্থনীতিতে প্রভাব
রফতানি হওয়া পণ্যের মূল্য দেশে ঠিকমতো আসছে না। রফতানির তথ্য নিয়েও রয়েছে অতিরঞ্জনের অভিযোগ। এ দুইয়ের প্রভাবে দেশের প্রকৃত রফতানি আয়ের তথ্য নিয়ে তৈরি হয়েছিল বিভ্রান্তি। বিষয়টি নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর বক্তব্যও ছিল পরস্পরবিরোধী। প্রাক্কলনে ইপিবির হিসাবে গত অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে রফতানি হয়েছে ৪ হাজার ৭৪৭ কোটি ডলারের পণ্য। যা আগের বছরের তুলনায় ৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে এনবিআর বলেছে, তাদের হিসাবে ওই সময়ে দেশ থেকে সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৩৬৭ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা ৬ দশমিক ৮০ শতাংশ কম। এর মানে পণ্য জাহাজীকরণের তথ্যেই পার্থক্য ১৩ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। এনবিআরের এই হিসাব গ্রহণ করেছে বিবি। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরের ইপিবি জুলাই-এপ্রিল সময়ে ৪ হাজার ৫৬৮ কোটি ডলার রফতানি দেখিয়েছিল। সংশোধিত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, আসলে পণ্য জাহাজীকরণ হয় মাত্র ৩ হাজার ৬১৪ কোটি ডলার। এর মানে ইপিবির তথ্যের সাথে পার্থক্য ৯৫৪ কোটি ডলারের।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য সংশোধনের ফলে গত দুই বছরের ১০ মাস করে মোট ২০ মাসে প্রায় ২৩ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা উধাও। রফতানি তথ্যের এই গরমিলের প্রভাব ব্যালান্স অব পেমেন্ট, বাণিজ্যের হিসাব, চলতি আমানতের হিসাব, আর্থিক হিসাব এবং সার্বিক লেনদেন ভারসাম্যে পড়েছে। প্রভাব পড়েছে জিডিপি, জিএনপি এবং জিএনআই হিসাবেও।
মার্চ পর্যন্ত বিওপিতে দেশের বাণিজ্য ঘাটতি দেখানো হয়েছিল মাত্র ৪ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু এপ্রিলে এসে এ ঘাটতি ১৮ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন দেখানো হয়েছে; অর্থাৎ রফতানি আয়ের পরিসংখ্যানে বিওপির থেকে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার বাদ পড়েছে। ফলে বাণিজ্যে ঘাটতি হয়েছে এক হাজার ৮৬৯ কোটি ডলার। এক ধাক্কায় বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় চার গুণ বেড়ে যাওয়ার প্রভাবে উদ্বৃত্ত থেকে ঘাটতিতে রূপ নিয়েছে চলতি হিসাবের ভারসাম্য। মার্চ পর্যন্ত চলতি হিসাবে প্রায় ৫ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত দেখানো হলেও এপ্রিলে এসে সেটি প্রায় ৫ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতিতে রূপ নিয়েছে।

তবে বিপরীত পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে দেশের ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে; অর্থাৎ ঘাটতি থেকে উদ্বৃত্তে আর্থিক হিসাব। আর্থিক হিসাবে বিদেশী ঋণ ও সহায়তা, এফডিআই এবং পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট প্রভৃতি বিষয় থাকে। আগের প্রতিবেদনে গত মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে আর্থিক হিসাবে রেকর্ড ৯২৫ কোটি ৮০ লাখ ডলারের ঘাটতি দেখা যায় যা সংশোধিত হিসাবে উল্টো ৬৫ কোটি ৩০ লাখ ডলারের উদ্বৃত্ত দেখা যাচ্ছে। এই ঘাটতির জন্য বিদেশী ঋণ পরিশোধের চাপ বেড়ে যাওয়া, নতুন ঋণ ও বিদেশী বিনিয়োগ কমে যাওয়াকে মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করে আসছিলেন বিবির কর্মকর্তারা। এ সময়ে সার্বিক লেনদেন ভারসাম্যেও ঘাটতি কমেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-এপ্রিলে সার্বিক লেনদেন হিসাবে ঘাটতি দেখা দিয়েছে ৫ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরের এপ্রিল শেষে যা ছিল ৮ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। এ হিসাবে ঘাটতি কমেছে ৩৬ দশমিক ৮১ শতাংশ।
জিডিপির হিসাব-নিকাশেও ওলটপালট হবে রফতানি তথ্যের পরিবর্তনে। উল্লেখ্য, জিডিপি ক্যালকুলেশনে জনগণের ভোগ ব্যয়, সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ এবং সরকারি ব্যয়ের সাথে নিট রফতানি একটি ফ্যাক্টর। যদি আমদানির চেয়ে রফতানি বেশি হয়, তবে জিডিপিতে বেশি অংশ যোগ হয়; এর বিপরীত হলে বিয়োগ হয়। সুতরাং রফতানির এই হিসাব-নিকাশের গরমিলে ১৪ বিলিয়ন ডলার কমে যাওয়ায় জিডিপির হিসাবেও পরিবর্তন আসবে। রফতানি আয় জিএনপি বা জিএনআই-এর একটি প্রধান উপাদান, কারণ এটি দেশের জন্য একক-বৃহত্তর উৎপাদন খাত এবং বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনকারীকে জড়িত করে। একবার রফতানি আয় কমে গেলে, পরবর্তীকালে জিএনপি/জিএনআইও কমে যায়। অবশ্যই জিএনপি ও জিএনআই উভয়ই রফতানি আয়ের সঠিক তথ্যের ফলে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। কারণ পেমেন্টের ভারসাম্য সম্পর্কিত আগের সব তথ্য ভুল মনে হচ্ছে।

এখন যা করণীয় তা হলো, ভুল তথ্যের ভিত্তিতে দেশের অর্থনীতির নাজুক সময়ে নীতিনির্ধারকরা যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেগুলো পুনর্বিবেচনায় নেয়া। রফতানির ভুল তথ্যের ভিত্তিতে হিসাব করা অর্থনীতির অন্য সূচকগুলোও সংশোধন করা। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের পুনরাবৃত্তি না হয়, সে জন্য একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ পরিসংখ্যান কমিশন গঠন করা এখন সময়ের দাবি। তবে কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে এ ভুল তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপনের বিষয়টি নিছক ভুল হিসেবে বিবেচনা করতে নারাজ দেশের অর্থনীতিবিদ ও গবেষকগণ। প্রকৃত অর্থে রফতানির ক্ষেত্রে আসলেই কী ঘটেছে তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে সেটি যদি ভুল হয়, তাহলে ভুলের সাথে জড়িতদের নাম প্রকাশসহ জবাবদিহির আওতায় আনা দরকার। রফতানির বিপরীতে জনগণের অর্থে সরকার নগদ সহায়তা দেয়। রফতানির পরিমাণ বেশি দেখিয়ে নগদ সহায়তা তছরুপ হয়েছে কি না, সেটিও খতিয়ে দেখতে হবে। আবার রফতানি হওয়ার পরও ভুলের অজুহাতে অর্থ পাচারের তথ্য মুছে ফেলার সম্ভাবনাও আছে। প্রকৃত সত্য কী, সেটি তদন্ত করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা দরকার। ভবিষ্যতে যাতে একই ভুল বা অপরাধের পুনরাবৃত্তি না হয়, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে, একক কোনো সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে ইপিবি তথ্য প্রকাশ না করে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের তথ্য যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত রফতানির তথ্য প্রকাশ করা দরকার।
লেখক : অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও কলামিস্ট
[email protected]

 

 

 

 


আরো সংবাদ



premium cement