১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রাইসির মৃত্যুতে ইরানে উত্তরাধিকার সঙ্কট

-

ইরানিরা সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে রাইসির হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে জল্পনা-কল্পনার বন্যা বইয়ে দিচ্ছে। হাজারো মানুষ বর্তমান সর্বোচ্চ নেতা, ৮৫ বছর বয়সী ইমাম খামেনির ছেলে মোজতাবা খামেনির দিকে আঙুল তুলেছেন। বয়োবৃদ্ধ খামেনির পর-পরবর্তী সর্বোচ্চ ইমাম হিসেবে রাইসিকে বিবেচনা করা হচ্ছিল। তিনি সে হিসেবে সব যোগ্যতা নিয়ে এগোচ্ছিলেন। খামেনির দ্বিতীয় ছেলে মোজতাবা খামেনিও কম যোগ্য নন। মোজতবা তার পিতার উত্তরসূরি হওয়ার দৌড়ে বেশ এগিয়ে রয়েছেন। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি পশ্চিমাদের সাথে আপস করতে চাইতেন কিন্তু রাইসি ছিলেন সম্পূর্ণ বিরোধী। তবে তার শক্তিমত্তার ভিত্তি ছিলেন সুপ্রিম লিডার খামেনি। রাইসি সর্বোচ্চ নেতা হওয়ার দৌড়ে সবার আগে, শুধু ঘোষণার বাকি ছিল যে তৃতীয় সুপ্রিম লিডার হচ্ছেন ইব্রাহিম রাইসি। ইরান বিশ্লেষক ও বিশেষজ্ঞ করিম সাজ্জাদপুর বলেন, রাইসির মৃত্যু দেশে অবশ্যই উত্তরাধিকার সঙ্কট তৈরি করবে।
রাইসিকে বলতে গেলে হাতে ধরে প্রেসিডেন্ট বানান খামেনি। প্রথমবার তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন হাসান রোহানির সাথে সেখানে বড় ব্যবধানে পরাজিত হন। খামেনিও একসময় প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। রাইসিকে এই পদে আনা কষ্টকর ছিল খামেনির জন্য। দ্বিতীয়বারে যখন রাইসি প্রেসিডেন্টের জন্য প্রার্থী হন, তার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জনপ্রিয় প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আহমদিনেজাদ। তখন সুপ্রিম লিডার তার ক্ষমতাবলে আহমদিনেজাদের প্রার্থিতা বাতিল করে দেন। এতে নিশ্চিত হয়ে যায় রাইসির জয়। বিষয়টি তার দ্বিতীয় ছেলে মোজতবা খামেনি মানতে পারেননি। ইরানে তৃতীয় সুপ্রিম লিডার হওয়ার যোগ্য ছিলেন মোজতবা খামেনিও, রাজনৈতিক নেতাদেরও পছন্দ মোজতবা। রাইসির মৃত্যুতে খামেনিপুত্র মোজতবা খামেনিই সে বিবেচনায় বেশি লাভবান হয়েছেন। মোজতবা ইরানি বিপ্লবী গার্ডের পাঁচটি শাখার একটির প্রধান, যার সৈন্যসংখ্যা ছয় লাখ, যারা ইরানের বিভিন্ন স্তরে কর্মরত। সুপ্রিম লিডার ও প্রেসিডেন্ট রাইসির নিরাপত্তা তিনিই দেখভাল করেন। খামেনি যতটুকু ক্ষমতাবান তদীয় পুত্র মোজতবা তার চেয়েও বেশি ক্ষমতাধর সেনানিয়ন্ত্রণের কারণে। খামেনি চেয়েছিলেন ইরানে যেন পরিবারতন্ত্র চালু না হয়, গণতন্ত্রের পথ সমুজ্জ্বল হয়। সেজন্য তিনি ছেলের পরিবর্তে রাইসিকে পছন্দ করেন।

ইসরাইল বা তার মিত্রদের মধ্যে কেউ এমন কাজ করতে পারে- নিশ্চিতভাবে উড়িয়ে দেয়া যায় না। গুপ্তচরবৃত্তি, টার্গেট গুপ্তহত্যা, নাশকতা, ড্রোন হামলা এবং সাইবার হামলাসহ ইরানের অভ্যন্তরে অভিযানের ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে মোসাদের। তবে রাইসি ও আমির-আবদুল্লাহিয়ানকে হত্যায় ইসরাইলের জড়িত থাকার সম্ভাবনা বেশ কয়েকটি কারণে কম। ঐতিহাসিকভাবে, মোসাদ রাজনৈতিক নেতাদের পরিবর্তে আইআরজিসির সামরিক নেতাদের বা তার ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র এবং পারমাণবিক কর্মসূচির সাথে সম্পর্কিত ইরানি সম্পদ লক্ষ্য করে মিশন পরিচালনা করে।
এই পরিস্থিতিতে, ক্ষমতা কাঠামোর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী উপাদান অন্তর্ঘাতমূলক কাজের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে। খামেনির ছেলে মোজতবার সাথে সম্পর্কিত দলগুলো অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে, যিনি নেতৃত্বের জন্য একজন গুরুতর প্রতিদ্বন্দ্বী; পার্লামেন্টের কট্টরপন্থী স্পিকার মোহাম্মাদ বাঘের গালিবাফের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি, যার সাথে আইআরজিসির সম্পর্ক রয়েছে; অথবা যারা গৃহায়ন ও পরিবহনমন্ত্রী মেহেরদাদ বাজরপাশের সাথে যুক্ত, যিনি নিরাপদে ফিরে আসা হেলিকপ্টারগুলোর একটিতে ছিলেন। এখানে মোদ্দাকথা হলো, রাইসি ছিলেন ইসলামী প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির সম্ভাব্য উত্তরসূরি এবং এই পদের জন্য মোজতবা একজন শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী। তারপরও কথা থাকতে পারে, শুধু ক্ষমতা ও পদের জন্য একজন ধর্মগুরু আরেকজন ধর্মগুরুকে হত্যা করে যাত্রাপথ রক্তিম করবেন কি না সেটি নিশ্চিত হওয়া কষ্টকর।
একটি হেলিকপ্টার উড়িয়ে দেয়া তার জন্য খুবই সহজ। যে দু’টি কপ্টার ফিরে আসে সেগুলো তারই নিয়ন্ত্রণাধীন। এখন সবাই প্রশ্ন করছেন নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত থেকে প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার রেখে কিভাবে দু’টি কপ্টার চলে আসে? চলে আসার পর কেন আবার ফিরে যায়নি? কেন তুরস্কের ড্রোন দিয়ে দুর্ঘটনাস্থল শনাক্ত করা হলো? কেন তেহরান যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করেছিল উদ্ধার কাজে সাহায্য করতে, যা যুক্তরাষ্ট্র পারেনি? রাইসির মৃত্যুতে সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বলেছেন, তাকে ছাড়া ‘পৃথিবী একটি নিরাপদ জায়গা’।
ঘটনাস্থল শনাক্ত করতে ১৫ ঘণ্টা ব্যয় হয়। পাহারাদার বিমানগুলো ঠিকভাবে কাজ করলে অনেকে প্রাণে বাঁচতেন। মৃতদেহ পরীক্ষা করে দেখা গেছে, অনেকে দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরও বেঁচে ছিলেন। এসব বিষয় এখন সামনে চলে আসছে এবং বিশ্লেষিত হচ্ছে।

এ ধরনের অধিকাংশ সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে রাইসি ইসলামী প্রজাতন্ত্রের পরবর্তী শাসক ও নেতা হওয়ার জন্য একজন যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী। সমালোচকরা মনে করেন, জনাব রাইসিকে ‘অপসারণ’ বা ‘মুছে ফেলা’ না হলে অন্যদের নেতা হওয়ার সুযোগ থাকত না। রাইসির মৃত্যু কোনো দুর্ঘটনা ছিল না বা মোজতবা জড়িত ছিল না এমন সব দাবি প্রমাণ করার জন্য কোনো চূড়ান্ত প্রমাণ বা পরিস্থিতিগত ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে না। এভাবে ইরানের রাজনৈতিক পরিবেশে এসব গুজব, শোনা কথা এবং ষড়যন্ত্র পাখা বিস্তার করছে।
কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর পিসের করিম সাজ্জাদপুর রাইসির মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে রোববার রাতে এক পোস্টে বলেন, ‘ইরানের ষড়যন্ত্রমূলক রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে খুব কম লোকই বিশ্বাস করবে রাইসির মৃত্যু দুর্ঘটনাবশত।’ আর একটি সংস্থা দাবি করে যে, ‘রাইসির মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর তারা দুর্ঘটনাস্থলের ছবি প্রকাশ করে যা কয়েক বছর আগের আরেকটি দুর্ঘটনার বলে জানা গেছে। আপনি কেন এটি করবেন যদি আপনি মনে না করেন যে ক্র্যাশ সাইটের আসল ফটোগুলোতে ক্লু থাকতে পারে যা বিশেষজ্ঞদের নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে যে এটি কোনো দুর্ঘটনা ছিল না? সামাজিক প্রচার মাধ্যমে অনেক ইরানি নাগরিক এই প্রশ্নটি বারবার তুলছেন যে, কেন আরেকটি ভিন্ন দুর্ঘটনার ছবি প্রকাশ করা হচ্ছে যদি লুকানোর কিছু না থাকে?
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সহায়তা চেয়েছিল তেহরান। গত সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এ তথ্য জানান। তিনি জানান, রোববার দুপুরে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর সেটিকে দ্রুত খুঁজে পেতে সাহায্য চেয়েছিল ইরান। শেষ পর্যন্ত মূলত ব্যবস্থাপনাগত কারণে সেই সহযোগিতা তারা দিতে পারেননি। তবে দেশটি এ নিয়ে বিস্তারিত আর কিছু জানায়নি। মিলার বলেন, রোববার রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যোগাযোগ করে ইরান। ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে তেহরানের সাথে ওয়াশিংটনের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। দুই দেশের মধ্যে কিভাবে যোগাযোগ হলো- এ নিয়ে জানাতে অস্বীকৃতি জানান মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র।

রাইসির মৃত্যু অন্তত কাগজে-কলমে এটি মোজতবাকে সর্বোচ্চ নেতার দায়িত্ব গ্রহণের সহজ পথ দেখাতে পারে। অন্যদিকে, রাইসির অনুপস্থিতিতে বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বী সামনে এগিয়ে আসবে। সম্ভাব্য অনেক প্রতিদ্বন্দ্বীর গোয়েন্দা বিভাগে বড় প্রভাব রয়েছে। এই বিপজ্জনক ক্ষমতার লড়াই মাঝারি থেকে দীর্ঘমেয়াদে প্রকাশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ ধরনের তিক্ত অন্তর্দ্বন্দ্ব খামেনি এবং তার ক্ষমতার ক্লেপটোক্রেটিক কাঠামোর জন্য বিপজ্জনক যা তিনি ইরানে সংহত করতে সক্ষম হয়েছেন। যদি তা ঘটে তবে এটি খামেনি-পরবর্তী যুগে ইরানে সুশৃঙ্খল ক্ষমতা হস্তান্তরকে বাধাগ্রস্ত করার সম্ভাবনা রয়েছে, যা হতে পারে সোভিয়েত ইউনিয়নে লেনিন এবং স্ট্যালিনের মৃত্যুর পরে দেখা দেয়া বিশৃঙ্খলার মতো।
রাইসির মৃত্যু ৪৫ বছর আগে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইসলামিক প্রজাতন্ত্রকে তার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর এবং বিপজ্জনক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করেছে। খামেনি যখন তার মৃত্যুর পর একটি সুশৃঙ্খল ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিকল্পনা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছিলেন, সেই মুহূর্তে শাসকগোষ্ঠী এখন পরপর দু’টি সঙ্কটের মুখোমুখি। প্রাথমিক সঙ্কটের ফলাফল পরবর্তী সঙ্কটের মাপকাঠি নির্ধারণ করবে এবং এই দুই সঙ্কটের মধ্যে বিস্ময়কর অসংখ্য অপ্রত্যাশিত ঘটনা আবির্ভূত হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।
ইরানি প্রশাসনে বিশেষজ্ঞ পরিষদ রয়েছে যেটি আলেম বা ধর্মীয় পণ্ডিত ও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে গঠিত। পরবর্তী সুপ্রিম নেতা নির্বাচনের দায়িত্ব এই পরিষদের। ইসলামী প্রজাতন্ত্রের পরবর্তী নেতা নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা এই বিশেষজ্ঞ পরিষদের নতুন অধিবেশন ২১ মে ২০২৪ মঙ্গলবার শুরু হওয়ার কথা ছিল, অর্থাৎ মৃত্যুর এক দিন পর যদিও খামেনি পাঁচ দিনের শোক ঘোষণা করেছেন, মজলিস ঘোষণা করেছে যে, তারা মঙ্গলবার যথারীতি অধিবেশন করবে। তবে, বিশেষজ্ঞ পরিষদের মঙ্গলবারের অধিবেশনটি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ ছিল, কারণ অ্যাসেম্বলির নতুন চেয়ারম্যান এবং তার ডেপুটিদের নির্ধারণের জন্য উদ্বোধনী দিনে একটি অভ্যন্তরীণ ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
ইরানি সংবাদ বিশ্লেষকদের মতে, ইব্রাহিম রাইসি, পরিষদের সবচেয়ে সিনিয়র ডেপুটি চেয়ারম্যান ছিলেন, চেয়ারম্যান পদের জন্য সবচেয়ে সম্ভাব্য প্রার্থী ছিলেন। রোববার যখন রাইসির লাশ তল্লাশি চলছিল, তখন ইরান আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক মোরাদ ভেইসি এই অধিবেশনের তাৎপর্য এবং এতে রাইসির অভিপ্রেত ভূমিকা তুলে ধরেন। যেহেতু পরবর্তী সুপ্রিম লিডারের নির্বাচন তুলনামূলকভাবে আলেম এবং রাজনীতিবিদদের একটি ছোট গ্রুপের ওপর নির্ভর করবে, তাই চেয়ারম্যানের ভূমিকা একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। এদিকে, হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার ষড়যন্ত্র তত্ত্বের দিকে ইঙ্গিত করে আরেকজন ইরানি বিশ্লেষক হোসেইন বাস্তানি ইরানে উত্তরাধিকার সম্পর্কে জোর দিয়ে বলেছেন, খামেনির বার্ধক্য বিশেষজ্ঞদের সমাবেশের আসন্ন রাউন্ডে উত্তরাধিকারের বিষয়টি সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

বাস্তানি লিখেছেন- ‘নেতা এমন বয়সে পৌঁছেছেন যে ভবিষ্যতে তাদের স্বার্থের জন্য উদ্বিগ্ন অভ্যন্তরীণরা একে অপরকে ছিঁড়ে ফেলা ছাড়া অন্য কোনো সমাধান দেখতে পাচ্ছেন না।’ সোশ্যাল মিডিয়াতে বেশির ভাগ সদস্য বলেছেন, হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা ছিল ‘পরিকল্পিত’। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মেহদি খালাজিসহ বেশ কয়েকজন ইরানি বিশ্লেষক বলেছেন, রাইসি বিশেষজ্ঞ পরিষদে কিংমেকার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন বলে আশা করা হয়েছিল, সম্ভবত খামেনির ছেলে মোজতবা দেশের নেতৃত্বের জন্য একদল আলেমকে গড়ে তুলবেন!
আইআরজিসির অভ্যন্তরের উপাদানগুলোর মতো মূল খেলোয়াড়রা রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের জন্য অন্যদের সাথে চুক্তিও করতে পারে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সঙ্কট সমাধানে অনেক বেশি সময় লাগতে পারে। এমনকি এই সরকারের পতনেরও কারণ হতে পারে। যার জন্য নতুন শাসন শুরুর ঘোষণা প্রয়োজন। চূড়ান্তভাবে, খামেনির স্থলাভিষিক্ত কে হবেন সে সিদ্ধান্তের জন্য সম্ভবত শক্তিশালী আইআরজিসির অনুমোদনের প্রয়োজন হবে, যা খামেনিকে প্রায় ৩৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকতে সহায়তা করেছে এবং দেশের ওপর তার কঠোর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার স্বার্থ রয়েছে।
তিনি পরামর্শ দিয়েছেন, অর্থনৈতিক উচ্চাকাক্সক্ষাসহ আইআরজিসির দলটি বর্তমান মতাদর্শ বজায় রাখার সম্ভাবনা বেশি। তবে মেহদি খালাজি সতর্ক করে দিয়েছেন, ‘যার এক হাতে অস্ত্র এবং অন্য হাতে কারাগারের চাবি রয়েছে তার হাতে ক্ষমতা চলে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।’ যেকোনো সময় ইরানে উত্তরাধিকার প্রশ্নে নাটকীয় ঘটনা ঘটতে পারে যা ইরানের ধর্মীয় প্রশাসন, মধ্যপ্রাচ্য ও গাজা সঙ্কট, আরব ইরান ও ইসরাইল সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব ও গ্রন্থকার


আরো সংবাদ



premium cement