কথাশিল্পী নাজমুল আলম
- ১৪ মে ২০২৪, ০০:০৫
২০০৮ সালের ১৪ মে প্রখ্যাত ছোটগল্পকার, ঔপন্যাসিক ও নাট্যকার নাজমুল আলম ইন্তেকাল করেন। আজ তার মৃত্যুবার্ষিকী। খোন্দকার নাজমুল আলম একজন সঙ্গীতজ্ঞও ছিলেন। দিলরুবা, এস্রাজ- ক্লাসিক্যাল যন্ত্র বাদনে তার প্রশিক্ষিত পারদর্শিতা ছিল। কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী গ্রামে ১৯২৭ সালের ৮ মার্চ তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম খোন্দকার আশরাফ আলী।
নাজমুল আলম বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করে তৎকালীন ভারতে মহারাষ্ট্রের পুনায় আবহাওয়া বিভাগে চাকরিজীবন শুরু করেছিলেন। পরবর্তীকালে ১৯৫১ সালে তিনি রেডিও পাকিস্তানে যোগ দেন। ১৯৬৮ সালে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের আঞ্চলিক পরিচালকের পদে নিয়োজিত হন এবং পরে বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক পদে উন্নীত হয়েছিলেন।
নাজমুল আলম বাংলাদেশের সাহিত্যে ছোটগল্প লেখক হিসেবে বিপুল খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। বিগত শতাব্দীর ষাটের দশকে এ দেশের ২০ জন প্রখ্যাত লেখকের ছোটগল্প নিয়ে বড় আকারের সঙ্কলন প্রকাশিত হয়েছিল। নাম ছিল শতদল। এতে নাজমুল আলমের গল্প ছাপা হয়েছিল।
১৯৭৮ সালে শুভ্র শিশির প্রকাশনী থেকে তার স্বরচিত ও স্বনির্বাচিত গল্প প্রকাশিত হয়। তাতে ৪১টি সুলিখিত ছোটগল্প স্থান পায়। নাজমুল আলমের ছোটগল্প তার নিজস্ব সরল শৈলীতে রচিত। প্রবৃত্তির জটিল আবিলতার মাঝে ফ্রয়েডীয় আবেশ থাকলেও শিল্পের স্পন্দন আকর্ষণীয়। তার গল্প বাস্তব জীবনের কাহিনী।
ইউরোপের ন্যুট হ্যামসুন, জোহান বোয়ার, গি দ্য মোপাসাঁর গল্পের আঙ্গিক ও শিল্প বাংলা সাহিত্যে বিগত শতাব্দীর তিরিশ ও চল্লিশের দশকের ছোটগল্পে ক্লেদাক্ততার মাঝে যে মানবিক বোধের জন্ম দিয়েছিল, নাজমুল আলমের গল্পে তার প্রতিফলন রয়েছে। বেলেহাঁসের মন নামের মানবিক বোধের রোমান্টিক গল্প মনে দাগ কাটে। আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের ঋণ এতে পাওয়া যায়। নাজমুল আলম উপন্যাস রচনায়ও সাফল্য অর্জন করেছেন। তার উপন্যাস সম্পর্কে বেতার বাংলা, ভাদ্র, ১৪০৯ সংখ্যার এক পত্রে জানিয়েছিলেন- ‘... এ পর্যন্ত আমি ১২টি উপন্যাস লিখেছি। তার মধ্যে ফুলমতি উপন্যাসকে অনেক সমালোচক লাল সালু বা সূর্যদীঘল বাড়ি উপন্যাসের চেয়েও রসোত্তীর্ণ বলে বিবেচনা করেছেন। অথচ পবিত্র উপন্যাসের টিভি নাট্যরূপের জন্য আমি জাতীয় টেলিভিশন পুরস্কার পেয়েছি।...’ (পাঠকের পাতায় ওই চিঠি ছাপা হয়েছিল কোনো এক ভিন্ন লেখার সূত্রে)। নাজমুল আলম বেতার, টিভি ও মঞ্চনাটক রচনায়ও বিশেষ কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন।
খুন ছিল তার প্রথম বেতার নাটক। আগুন তার আর একটি সফল বেতার নাটক। মরা মানুষের পাঠশালা বর্তমান নবপ্রযুক্তিনির্ভর সফল নাটক। দক্ষ, অভিজ্ঞ ও বেতার ব্যক্তিত্ব হিসেবে বহুল আলোচিত জেড এ বোখারী যুগের তিনি ছিলেন মনোমুগ্ধকর, রুচিশীল আরেক উজ্জ্বল এক বেতার ব্যক্তিত্ব। প্রশাসনের ক্ষেত্রে সৎ, পরিচ্ছন্ন, ন্যায়পরায়ণ ও ধৈর্যশীল।
আহমদ-উজ-জামান
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা