ছাত্রদল নেতা রাসেলকে মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি রিজভীর

অবিলম্বে নিখোঁজ ছাত্রদল নেতা আতিকুর রহমান রাসেলকে তার মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেছেন, ‘গত ১ জুলাই (সোমবার) তাকে গোয়েন্দা পরিচয়ে তুলে নেয়া হয়েছে। আট দিন অতিবাহিত হলেও এখনো তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়নি বা আদালতে হস্তান্তর করা হয়নি। ফলে পরিবার, তার মা, তার বাবা, তার আত্মীয়স্বজন ও দলের নেতাকর্মীর প্রত্যেকে গভীর উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন।’

মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘মা-বাবার যে আকুতি তা ভাষায় বর্ণনা করার মতো নয়। তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে তুলে নিয়ে গেছে তা অনেকে দেখেছেন।’

আতিকুর রহমান রাসেল গোয়েন্দা হেফাজতে রয়েছে বলে দাবি করেন রিজভী।

বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, ‘এই ধরনের তরুণদেরকে নিরুদ্দেশ করে দেয়া হচ্ছে, কারণ তারা মানুষের পক্ষে কথা বলে, গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলে, গণতন্ত্রের পক্ষে স্লোগান দেয়। তাদের স্লোগান স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে নিষ্ঠুর দমন-নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে আতিকুর রহমান রাসেলদের মতো তরুণদের নিরুদ্দেশ করে দেয়া হচ্ছে, নিখোঁজ করে দিচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘দেশ এক শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা অতিক্রম করছে। মানুষের অধিকারগুলো দখলদার সরকার একের পর এক হরণ করেছে। মানুষ অধিকারবঞ্চিত, গণতন্ত্রে মানুষের যে অধিকারগুলো স্বীকৃত সে অধিকারগুলোকে মানুষ যাতে প্রয়োগ করতে না পারে তার জন্য রাষ্ট্রশক্তিকে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে সরকার ইচ্ছে পূরণ করতে পারে, দেশে সরকারের বিরুদ্ধে কেউ যেন কথা না বলতে পারে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধান কাটাছেঁড়া করার পরেও গণতন্ত্রের যে অধিকারগুলো আছে সেই অধিকারগুলো সরকারি যন্ত্র দিয়ে নানাভাবে দমন করছে। এই দমন পৈশাচিক, এই দমন নিষ্ঠুর, এই দমন রক্তাক্ত।’

তিনি আরো বলেন, ‘যত দিন যাচ্ছে, তত একের পর এক সরকারের কুকীর্তি বেরিয়ে আসছে। সরকার যাদের দিয়ে বিরোধী দমন করেছে, তারা এদেশের জনগণের সম্পদ-অর্থ লুট করে বিদেশে টাকা পাচার করেছে এবং দেশের মধ্যেও অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছে। নবাবদেরও এত সম্পদ ছিল না। লুটপাট ও দুর্নীতির কারণে দেশের আর্থিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, রাজকোষ শূন্য হয়ে গেছে। দেশটা তিন মাস যে চলবে সেই প্রয়োজনীয় অর্থ এখন ব্যাংকে নেই। যারা ঋণখেলাপি হয়েছে, এক লাখ বিরানব্বই হাজার কোটি টাকার তাদেরকে নিয়ম করে সুদ মওকুফ করা হয়েছে। যারা লুটপাট করেছে, টাকা পাচার করেছে তারা সকলেই ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠ লোক।’

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির প্রমুখ।