১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

কোটা ও পেনশন আন্দোলন সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে : ওবায়দুল কাদের

ওবায়দুল কাদের - ছবি - ইন্টারনেট

কোটা ও পেনশন আন্দোলন সর্তকভাবে পর্যবেক্ষণ করার কথা জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের কোটা বাতিলের আন্দোলন চলছে। পাশাপাশি পেনশনের বিষয়ে শিক্ষকরা একটা আন্দোলন ও কর্মসূচি পালন করছেন। এই দু’টি কর্মসূচিকে আমরা সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’

তিনি বলেছেন, ‘সময়মতো সব সমাধান হয়ে যাবে।’

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক যৌথ সভায় এ কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগ কি সরকারের পক্ষে, নাকি আদালতের পক্ষে- এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সরকার সরকারের পক্ষে, আওয়ামী লীগও সরকারের পক্ষে। কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। পাশাপাশি পেনশনের বিষয়ে শিক্ষক সমাজেরও আন্দোলন, কর্মবিরতি চলছে। এ দু’টি কর্মসূচি চলমান অবস্থায় আমরা খুব সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। যতটুকু জানি, সংস্কারের জন্য কোটাবিরোধী যে আন্দোলন শিক্ষার্থীরা করছে- তাদের আজ নির্ধারিত কোনো কর্মসূচি নেই, সে জন্য আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

তিনি বলেন, ‘এমনও শুনেছি, উচ্চ আদালতে যে মামলা আছে, সেখানে তাদের পক্ষ থেকে তারা ল’ইয়ার নিয়োগ করেছে এবং তারা আদালতে যথাসময়ে হাজির হবেন। এটা একটা যোক্তিক সিদ্ধান্ত। সে জন্য ধন্যবাদ জানাই।’

আপনাদের আন্দোলনরত শিক্ষকদের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে বসার কথা ছিল, সেটা কবে বসবেন- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকে বসব আমরা কি বলেছি?।’

সাংবাদিকদের শিক্ষকরা বলেছেন- এমন উত্তরে তিনি বলেন, ‘এখন তারা কি বললেন সেটা তো আমাদের দেখার বিষয় নয়।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদেরও তো অসুবিধার বিষয় থাকতে পারে। আমরা তাদের প্রতি কোনো প্রকার অসম্মান করছি না। আমরা তাদের আন্দোলন পর্যবেক্ষণ করছি। সময়মতো এর সমাধান হয়ে যাবে, এটাই আমরা আশা করি।’

তিনি বলেন, ‘শোকের মাস আগস্ট আবারো ফিরে এসেছে। ১ আগস্ট থেকে আমাদের মাসব্যাপী কর্মসূচি রয়েছে। ভাবগাম্ভীর্যের সাথে এই মাসের কর্মসূচি পালনের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। ঢাকাতে যারা কর্মসূচি নেবেন, তারা কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সাথে মিল রেখে করবেন।’

এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কারণটা আইনগত, রাজনৈতিক নয়। বিএনপি সব কিছুতে রাজনৈতিক গন্ধ পায়। তারা তো আইনি লড়াইও ঠিকমতো করেনি। মাসের পর মাস, এমনকি বছর কেটে গেছে, তাকে আদালতে উপস্থিত হতে দেননি, জামিনও চাননি। তারা আইনি লড়াইয়ে ব্যর্থ। এই শহরে দৃশ্যমান একটা বিক্ষোভ মিছিল খালেদা জিয়ার জন্য করেছে, এমন প্রমাণ পর্যন্ত আমাদের সামনে নেই।’

বিএনপি বলছে, প্রধানমন্ত্রী ভিক্ষার ঝুড়ি নিয়ে চীন গেছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ভিক্ষার ঝুড়ি নিয়ে প্যারিস কনসোর্টিয়াম বৈঠকে তাদের অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান বার বার ছুটে গেছেন, আমাদের কোনো অর্থমন্ত্রী প্যারিস কনসোর্টিয়াম বৈঠকে জাননি। বাজেটের আগেও জাননি।’

আওয়ামী লীগের অবস্থান জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অবস্থান পরিষ্কার, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী পরিপত্র জারি করে কোটামুক্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এতদিন সরকারি কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। এরই মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সাতজন একটা মামলা করেন। হাইকোর্ট একটা রায় দেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে নিয়ম অনুযায়ী সরকারপক্ষ আপিল বিভাগে আপিল করেছে। আমরা আশা করছি, ফুল কোর্টে শিগগিরই শুনানি হবে।’

কোটাবিরোধী নয়, কোটা সংস্কারে আন্দোলন হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারের অবস্থান পরিষ্কার। যারা আন্দোলন করছেন, তাদের এ আন্দোলনকে আমাদের বিভিন্ন মিডিয়া কোটাবিরোধী আন্দোলন বলছে, তবে তারা যেটা বলছে, সেঠা হচ্ছে- তারা কোটা সংস্কার চায়।’

এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক শাম্মি আহমেদ ও উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement