১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

আ’লীগ সরকারের ক্ষমতার প্রহরি হচ্ছে বেনজীর-আজিজরা : রিজভী

বক্তব্য রাখছেন অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী - ছবি : নয়া দিগন্ত

বেনজীর আহমেদ ও আজিজ আহমেদের মতো নিরাপত্তা বাহিনীর অনেক কর্মকর্তা অবৈধ সরকারের প্রহরী হিসেবে কাজ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

রোববার (৯ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে ‘সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ এবং সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদসহ দুর্নীতিবাজ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠনকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে’ এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘আপনাদের দখলদারিত্বের ক্ষমতার প্রহরী এই বেনজীর সাহেবরা, আজিজ সাহেবরা। তারা যে জনগণের ওপর দমননীতি চালিয়েছে সেটা তো আজকে সর্বজনস্বীকৃত। জাপানের অ্যাম্বাসেডর বলেছেন, ২০১৮ সালের নির্বাচন রাতের অন্ধকারে হয়েছে। এই নির্বাচন কারা করেছে? এই আজিজ সাহেব ও বেনজীর সাহেবরা করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা জানতাম সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের একটা নৈতিকতার জায়গা থাকে। কারণ তাদের একটি আলাদাভাবে প্রশিক্ষণ হয়, সবকিছু হয়। কিন্তু এই আজিজ সাহেব সেনাবাহিনীর প্রধান হন কী করে! এটাই তো বিস্ময়কর ব্যাপার।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে যারা অংশগ্রহণ করেছে তাদের বিষয়ে ঐতিহাসিক মন্তব্যগুলো কী ছিল বেনজীর আহমেদের? কত ধমক, কত হুমকি। তিনি তখন সহকর্মীদের বলেছিলেন, ‘অস্ত্র দেয়া হয়েছে আপনাদেরকে কি হাডুডু খেলার জন্য?’

সরকারপ্রধানের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘আপনাদের যদি ন্যূনতম মানবতাবোধ থাকতো, দেশে যদি আইনের শাসন থাকতো সেদিনই তো বেনজীর আহমেদকে গ্রেফতার করতেন। উনি প্রকাশ্যে এই দেশের নাগরিক বিরোধীদলের নেতাকর্মীদেরকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু তাকে গ্রেফতার করেননি, কারণ আপনাদের অবৈধ ক্ষমতার তারা ছিল রক্ষক। আর এই রক্ষক হতে গিয়ে তারা যে কত ভক্ষণ করেছে সেটা এখন দেখা যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, “জাতীয় নির্বাচনের পরে এই আজিজ সাহেব বলেছিলেন, স্বাধীনতার পরে নাকি এত সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি! অর্থাৎ যে নির্বাচন ২০১৮ সালের নিশিরাতে হয়েছিল, যে নির্বাচনকে দেশের মানুষ মিডনাইটের নির্বাচন বলে। আর সেই নির্বাচনকেই তিনি তকমা দিলেন ‘স্বাধীনতার পরে সবচেয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন’ হিসেবে।”

রিজভী বলেন, নিপীড়নের ভয়ে, গুমের ভয়ে, বিচারবহির্ভূত হত্যার ভয়ে, ক্রসফায়ারের ভয়ে দুর্বৃত্তায়ন, লুণ্ঠনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দল, এমনকি গণমাধ্যমের কর্মীরাও কেউ কথা বলার সাহস পায়নি। একজন প্রখ্যাত সাংবাদিক বলেছেন, ‘আমরা অনেক কিছুই জানতাম কিন্তু লিখতে সাহস পাইনি, প্রকাশ করতে আমরা ভয় পেয়েছি। কারণ সরকার আমাদের পাশে থাকবে না, সরকার থাকে বেনজীরদের পক্ষে, সরকার থাকে আজিজদের পাশে।’

এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘তিনি এত কথা বলেন কিন্তু প্রতিদিন সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিকদেরকে হত্যা করা হচ্ছে, এর প্রতিবাদ করতে পারেন না।’

বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন বিশ্বের বর্তমান যে পরিস্থিতি সেই পরিস্থিতি অনুযায়ী জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, বাজেট সেইভাবে দিতে হয়েছে, উপায় নাই। কিন্তু মন্ত্রী-এমপি ও তাদের আত্মীয়-স্বজন যত টাকা লুট করেছে, এই টাকা তো বাংলাদেশে নেই, পাচার করেছে। না হলে ১ লাখ ৮২ হাজার টাকা ঋণখেলাপি হয় কি করে? বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির কথা বলেন, বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে তো মুদ্রাস্ফীতি বাড়েনি। যুদ্ধের পরেও ইউরোপে মুদ্রাস্ফীতি হয়নি, আমেরিকায় বেকারত্বের সংখ্যা সবচাইতে কম।’

সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement