আনার হত্যা : ভারতীয় গোয়েন্দারা খুঁজছে যেসব প্রশ্নের জবাব
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৪ মে ২০২৪, ০৮:৫৮
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশ পুলিশ যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে, তাদের জেরা করতে বাংলাদেশে পৌঁছেছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডির একটি দল। বৃহস্পতিবারই ঢাকায় পৌঁছেছেন সিআইডির গোয়েন্দারা। ‘খুন’ সম্পর্কে এখনো অনেক প্রশ্নের উত্তর অধরা। তার খোঁজেই বাংলাদেশে গিয়ে ধৃতদের জেরা করবেন ভারতের গোয়েন্দারা।
বৃহস্পতিবার এই ঘটনার সাথে সম্পর্কযুক্ত সন্দেহভাজন এক যুবককে পশ্চিমবঙ্গ থেকে আটক করেছে কলকাতা সিআইডি। তার নাম জুবের। তিনি সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। সিআইডি সূত্রে খবর, ‘খুনে’ অভিযুক্ত একজন এই জুবেরের সাথে দেখা করেছিলেন। কেন তার সাথ দেখা করা হয়েছিল, আজিমের ‘লাশ গায়েবের’ সাথে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সে বিষয়েও বাংলাদেশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে চান ভারতীয় গোয়েন্দারা।
ভারতীয় সিআইডির তদন্তে উঠে এসেছে, আজিম কলকাতায় আসার অনেক আগেই এখানে চলে এসেছিলেন অভিযুক্তেরা। শহরে বসেই তারা ‘খুনের’ ছক কষেছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। দুই অভিযুক্ত কলকাতার সদর স্ট্রিটের একটি হোটেলে ছিলেন ২ মে থেকে ১৩ মে পর্যন্ত। উল্লেখ্য, ১২ তারিখ কলকাতায় আসেন আজিম। অর্থাৎ, তার আসার অন্তত ১০ দিন আগে কলকাতায় এসে পড়েছিলেন ওই দুই অভিযুক্ত। তারা হোটেল ছাড়েন আজিম আসার এক দিন পরেই। গোয়েন্দাদের অনুমান, এই ১০ দিন ধরে শহরে থেকে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন অভিযুক্তেরা।
সিআইডির সামনে এখন মূল প্রশ্ন, আজিমের লাশ কোথায়? কিভাবে তা ‘লোপাট’ করা হলো? গোটা পরিকল্পনার নেপথ্যে ‘মাস্টারমাইন্ড’ কে? ‘খুনের’ কারণ কী এবং পশ্চিমবঙ্গের কেউ এই ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত কি না। বাংলাদেশে গিয়ে ধৃতদের জেরা করে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজবেন গোয়েন্দারা। বাংলাদেশ পুলিশের কাছ থেকেও সংগ্রহ করা হবে তথ্য।
গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় এসেছিলেন আজিম। প্রথমে তিনি উঠেছিলেন বরাহনগরের এক বন্ধুর বাড়িতে। সেখান থেকে দু’দিন পর নিখোঁজ হয়ে যান। তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে ১৮ মে নিখোঁজ ডায়েরি করেন ওই বন্ধু। উদ্বিগ্ন পরিবারের সদস্যেরা বাংলাদেশ সরকারের সাথে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে যোগাযোগ করা হয় ভারত সরকারের সঙ্গে। তার পর সংসদ সদস্যের খোঁজ শুরু হয়।
পুলিশের অনুমান, নিউ টাউনের এক অভিজাত আবাসনের ফ্ল্যাটে ছিলেন আজিম। সেখানে খাটের কোণে, দরজার পাশে এখনো লেগে আছে ‘রক্তের দাগ’। ফ্ল্যাট থেকে পাওয়া গেছে একটি গ্লাভ্সের খালি প্যাকেটও। আবাসনের সিসিটিভি ফুটেজে কয়েকজনকে ট্রলি ব্যাগ নিয়ে বের হতে দেখা গেছে। সেই ব্যাগেই আজিমের ‘লাশ গায়েব’ করা হয়েছে কি না, খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। তাদের মতে, বাংলাদেশে গিয়ে সেখানকার প্রশাসনের সাথে কথা বললে এবং ধৃতদের জেরা করতে পারলে অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলতে পারে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা