১৮ মে ২০২৪, ০৪ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫
`


নির্বাচন : বিজয়ী জাতির নেতৃত্বের নৈতিক পরাজয়!

নির্বাচন : বিজয়ী জাতির নেতৃত্বের নৈতিক পরাজয়! - নয়া দিগন্ত

বিজয়ের মাসে আমরা দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ঘোষণা দিয়ে আমাদের জাতিরাষ্ট্রের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর থেকে। ওই ঘোষণাপত্রের পতাকাতলে সমবেত হয়ে পুরো জাতি মিলে যুদ্ধ করে মাত্র ৯ মাসে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে আমরা বিজয়ী হয়েছিলাম। দেশের সূর্যসন্তানরা সেদিন বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলেন। কিন্তু আজকের নেতারা কি সেই মুজিবনগর ঘোষণাপত্র অনুসরণ করতে পারছেন?

বিএনপি তাদের দাবি অনুযায়ী, গণতন্ত্রের জন্য অহিংস আন্দোলন করছে। কিন্তু তার মানে কি জেল-জুলুমের ভয়ে ময়দান ছেড়ে দেয়া? গণতন্ত্র বা দেশ-জাতির কল্যাণের জন্য আন্দোলন কখনো মসৃণ হয় না। রাষ্ট্রযন্ত্র ও ক্ষমতাসীনদের নির্যাতন-নিপীড়ন সব কালেই ছিল। এগুলো ভয় পেলে সাধারণ সমর্থকদের সাথে দলীয় নেতাকর্মীদের পার্থক্য কোথায়? ২৮ অক্টোবর কি পুলিশ একটিও গুলি ছুড়েছিল? শুধু সাউন্ড গ্রেনেড এবং যুদ্ধংদেহী পাঁয়তারা দেখে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে ১০ লাখ লোক নিমিষেই ময়দান ছেড়ে দেবে? পুলিশি অ্যাকশনে স্বল্প সময়ের মধ্যেই রাজপথ ছেড়ে দিয়ে নেতারা আত্মগোপনে চলে গেলেন এবং হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি দিচ্ছেন। এসব কর্মসূচি সরকার বা ক্ষমতাসীনদের উপর কি কোনো ধরনের চাপ ফেলতে পারছে? তারা ২৮ অক্টোবর সমাবেশপূর্ব হোমওয়ার্কের মাধ্যমে বিকল্প পরিকল্পনা না করে দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে সমালোচকরা মনে করেন। তারা আগেই সন্দেহ করছিলেন, ক্ষমতাসীনরা বিএনপিকে নির্বাচনী অরবিটের বাইরে রাখতে চাচ্ছে! কিন্তু বিকল্প পরিকল্পনা প্রস্তুত না থাকায় তারা ক্ষমতাসীনদের কূটকৌশলের কাছে পরাজিত হয়েছেন যদিও সেই কৌশলের নীতি-নৈতিকতার বিষয়ে প্রশ্ন থাকতেই পারে।

আজকের নির্বাচনী রাজনীতিতে অপকৌশলের আঘাতে আঘাতে জর্জরিত করে আওয়ামী লীগ বা ক্ষমতাসীন সরকার বিরোধী শিবিরকে পরাজিত করতে যাচ্ছে। কিন্তু তারা নিজেরাই কি নৈতিকতার কাছে পরাজিত হননি? নিজেরা সব ধরনের স্বাস্থ্যকর ভিটামিন খেয়ে বলিষ্ঠতম হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীর হাত-পা কষে বেঁধে দৌড়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছেন! নির্বাচনের সব স্টেকহোল্ডারকে দলীয়করণ এবং সম্ভব সব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বশীভূত করে ফেলা হয়েছে। নিজেরা স্বাধীন-মুক্তভাবে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করে সর্বশক্তি নিয়োগ করে বিরোধীদের রাজনৈতিক কার্যক্রমে হিমালয়সম বাধার প্রাচীর গড়ে তুলেছেন। মিথ্যা মামলা, হত্যা, গুপ্ত ও প্রকাশ্য হামলা, গ্রেফতার, জেল ইত্যাদির মাধ্যমে বিরোধীদেরকে মাটির নিচে পাঠানো হয়েছে। ২৮ অক্টোবরের আগে-পরে গত পাঁচ মাসে অন্তত ৯৭টি মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ১৫৩২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। (প্রথম আলো, ২৭ ডিসেম্বর-২০২৩) বেশির ভাগ দণ্ডই দুই বছরের অধিক, যেন তারা নির্বাচনের অযোগ্য বলে বিবেচিত হন। গত ১৭ ডিসেম্বর একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিএনপিকে ভোটে আনতে সব চেষ্টাই করছে আওয়ামী লীগ। এমনকি এক রাতে সব নেতাকে জেল থেকে মুক্তির প্রস্তাবেও বিএনপি রাজি হয়নি।’ তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপির ২০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার না করলে বাংলাদেশে আজকে হরতালের দিন গাড়ি চলত না। (নয়া দিগন্ত, ১৮ ডিসেম্বর-২০২৩) এদিকে কুমিল্লার দেবিদ্বারে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর (বর্তমান সংসদ সদস্য) প্রিজাইডিং অফিসারদের নিয়ে গোপন বৈঠক আয়োজন ম্যাজিস্ট্রেট ভণ্ডুল করে দেন বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। (নয়া দিগন্ত, ২৫ ডিসেম্বর-২০২৩) এসবকি রাজনীতির কৌশল হতে পারে?

অন্যদিকে জাতীয় পার্টির সাথে আসন ভাগাভাগির দরবার চলেছে সপ্তাহজুড়ে। এই দেন-দরবারের সময়টুকুতে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু অত্যন্ত সরব থাকলেও চেয়ারম্যান জি এম কাদের ছিলেন জন-অন্তরালে। শোনা যাচ্ছিল, চেয়ারম্যান মহোদয় নির্বাচনে যোগদানের বিপক্ষে ছিলেন! এমতাবস্থায় মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনটিতে জি এম কাদের ‘ভিক্ষার আসন আমরা চাই না’ এই বক্তব্য সাংবাদিকদের দিয়ে নিজ কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। জানা যায়, এরপর সেই কার্যালয়ে অ্যাজেন্সি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেয়। এমতাবস্থায় দীর্ঘক্ষণ পর জাতীয় পার্টি থেকে ঘোষণা আসে, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। এভাবে ঘোষণা আসার প্রক্রিয়াটিতে বিরোধীরা ক্ষমতাসীনদের নীতি-নৈতিকতার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কল্যাণ পার্টির জেনারেল ইবরাহিম, বিপি, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাজাহান ওমর, বিইউ ও উপদেষ্টা একরামুজ্জামানের নির্বাচনে অংশ নেয়াটাও ব্যাপক কৌতূহল এবং আদর্শহীনতার প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে। একই সাথে ১৪ দলীয় জোটের হেভিওয়েট প্রার্থীদের নিজস্ব প্রতীক বাদ দিয়ে ক্ষমতাসীনদের প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার প্রক্রিয়া সংশ্লিষ্ট নেতাদেরকে খাটো করেছে। অন্য দিকে, বিভিন্ন ভুঁইফোড় রাজনৈতিক দলের নির্বাচনকেন্দ্রিক তৎপরতা অপরাজনীতির প্রতিফলন হিসেবেই দেখছেন অনেকে। একটি শক্তিশালী বিরোধী রাজনৈতিক দলে ভাঙনের উদ্দেশ্যে এসব দল গঠন এবং পরোক্ষভাবে লজিস্টিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদান কোনোভাবেই রাজনৈতিক সুনীতি হতে পারে না। কিন্তু আমরা দেখেছি বিএনএম, তৃণমূল বিএনপির মতো সংগঠনগুলোর সদর্প লম্ফঝম্ফ। সাম্প্রতিককালের আরো একটি আলোচিত ও সমালোচিত বিষয় স্পষ্টভাবে বলে দেয়, আমাদের রাজনীতির লক্ষ্য-উদ্দেশ্য কী বা এর লাভ-লোকসান কী? বঙ্গবন্ধু ও অন্যান্য জাতীয় নেতা রাজনীতি করতেন মানুষের কল্যাণের জন্য।

নিজেরা মানুষের জন্য সহায়-সম্পদ বিলিয়ে দিয়ে দেউলিয়া হয়ে যেতেন বা অত্যন্ত সাধারণ জীবন তাদেরকে যাপন করতে হতো। নির্বাচনী প্রার্থীদের হলফনামায় দেখানো সম্পদের হিসাব দেখলে সাধারণের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে- আমাদের মন্ত্রী-এমপিরা গত ১০-১৫ বছর যাবৎ রাজনীতি করে কিভাবে আলাদিনের চেরাগ হাতে পেয়েছেন! দৈনিক প্রথম আলোর এক দিনের প্রতিবেদন দেখলেই দেখা যাবে, আমাদের রাজনীতিবিদরা কিভাবে লাভবান হয়েছেন! নওগাঁর একটি আসনের বর্তমান সংসদ সদস্যের আয় বছরে চার লাখ ৮৩ হাজার টাকা থেকে এক দশকে ১৪০ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে বছরে ছয় কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ভোলার একজন সংসদ সদস্য ২০০৮ সালে বার্ষিক আয় করতেন দুই লাখ টাকার কম। পরপর তিনবারের ওই সংসদ সদস্যের বর্তমান বার্ষিক আয় গত ১৫ বছরে ১৭০ গুণ বেড়ে তিন কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। (প্রথম আলো, ১৬ ডিসেম্বর-২০২৩) আবার হিসাবের মধ্যেও দেখা গেছে বিস্ময়কর তেলেসমাতি! একজন মন্ত্রী হলফনামায় দেখিয়েছেন তিনি ২৫ বিঘা জমির মালিক, যার মূল্য ৩১ হাজার ৫০০ টাকা। আরো কয়েকজন সংসদ সদস্য প্রার্থী তাদের হিসাবে দেখিয়েছেন, ১৪৮ ভরি স্বর্ণ বাবদ ৪০ হাজার টাকা, ২০ বিঘা জমি বাবদ দুই হাজার টাকা, পাঁচ কাঠা প্লট বাবদ ৪০০ টাকা এবং বারিধারায় প্লট বাবদ ১.৩ লাখ টাকার সম্পদের মালিক তারা একেকজন। (ডেইলি স্টার, ২০ ডিসেম্বর-২০২৩) টিআইবির বিশ্লেষণে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের ৮৭ শতাংশ প্রার্থীই কোটিপতি। যেখানে ২০০৮ সালের নির্বাচনে কোটিপতি ছিলেন ২৮ শতাংশ প্রার্থী। ২০০৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আটজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে সর্বোচ্চ ৬,৩৫০ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ১৩০ শতাংশ। (প্রথম আলো, ২৭ ডিসেম্বর-২০২৩) সুতরাং যে জাতি অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছিল সেই জাতির নেতারা কি আজ অনৈতিকতার কাছে পরাজিত হচ্ছেন!

জাতীয় পার্টি যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে তাতে কি নীতি-নৈতিকতার ছিটেফোঁটা রয়েছে? তারা জোটসঙ্গী নয় বলে দাবি করে ২৬টি আসনে নৌকার প্রার্থীর সাথে সমঝোতা করেছেন। তাদের বড় বড় নেতার বিজয় নিশ্চিত করার জন্য নৌকা মার্কার প্রার্থীদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে হয়েছে। গণতন্ত্রের সংস্কৃতিতে এটি অত্যন্ত লজ্জাকর একটি প্রক্রিয়ার অবতারণা করছে ক্ষমতাসীন দল ও জাতীয় পার্টি। জাতীয় পার্টি ২৮৩টি আসনে প্রার্থী দিলেও মাত্র ২৬টিতে বড় নেতাদের বিজয় নিশ্চিত করার জন্য সপ্তাহব্যাপী দেন-দরবার করেছে। অর্থাৎ জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা নিজেদের বিজয় নিশ্চিত করে তৃণমূল প্রার্থীদেরকে ক্ষমতাসীনদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামিয়ে দিয়েছেন। কোনো দলের শীর্ষ নেতৃত্বের জন্য এর চেয়ে বড় বেহায়াপনা আর হতে পারে না! অবশ্য জাতীয় পার্টির এই বেহায়াপনা দলের সৃষ্টির শুরু থেকেই। সেই সময় রাজনীতির ময়দানে তাদের শীর্ষ নেতৃত্বকে বিরোধী জোট বিশ্ববেহায়ার তকমাটি দিয়েছিল। ২০১৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি এই একই ধরনের সার্কাস দেখিয়েছিল। আসন্ন নির্বাচনের বেশ কিছু দিন আগে থেকেই তাদের শীর্ষ নেতা জি এম কাদের অনর্গল সরকারবিরোধী বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন। এরপর হঠাৎ ভারত সফর করে এসে একেবারে সুবোধ বালকের মতো চুপ হয়ে গেলেন। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনটিতে ২৬টি আসনে বিজয়ের নিশ্চয়তা এবং তার সহধর্মিণীর জন্য আওয়ামী লীগের ঢাকার একটি আসন ছেড়ে দেয়ার মাধ্যমে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়ে আবারো তাদের নির্লজ্জতা ও আদর্শহীনতার প্রমাণ দিলো জাতিকে। সবচেয়ে লজ্জাকর হলো- তাদের মহাসবিচকেও নির্বাচনী পোস্টারে লিখতে হচ্ছে যে, ‘তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী!’

নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা লাগাতারভাবে বিভিন্ন বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে বিরোধী সমালোচনাকে যৌক্তিকতা দিচ্ছেন। শুরুতেই তারা ইভিএম নিয়ে বিস্তর সমালোচনার সূত্রপাত করেছেন। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট এমপিকে এলাকাছাড়ার আদেশ দিয়ে পরে পিছু হটেছেন। সেই নির্বাচনের ফল প্রকাশের প্রক্রিয়া বিলম্ব করে পক্ষপাতিত্বের প্রশ্ন তোলার সুযোগ করে দিয়েছেন। গাইবান্ধার উপনির্বাচনে সিসিটিভিতে ব্যাপক কারচুপির ঘটনা প্রকাশ করে বাহবা নিলেও অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ হন। এরপর জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে একজন নির্বাচন কমিশনার অপদস্থ হয়ে বক্তৃতামঞ্চ থেকে নেমে গিয়ে সম্ভাব্য রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ঔদ্ধত্যের কাছে পরাজয় মেনে নিয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপনির্বাচনে উকিল আব্দুস সাত্তারের এক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অপহরণের শিকার হলেও নির্বাচন কমিশন নিষ্ক্রিয়তা প্রদর্শন করেছে। রাজপথে আন্দোলনে থাকা সক্ষম দলগুলোর পরিবর্তে নাম না জানা কয়েকটি ভুঁইফোড় দলকে নিবন্ধন দিয়েছেন! আরপিওতে দেয়া যৌক্তিক কারণে নির্বাচন বাতিল করার ক্ষমতাটুকুও নির্বাচন কমিশন স্বেচ্ছায় পরিত্যাগ করে। কমিশনের সদস্যরা এমনসব বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন যা শুধু ক্ষমতাসীন দলের পক্ষেই যাচ্ছে বলে সমালোচকরা মনে করছেন। কখনো কখনো আবার তারা পরস্পরবিরোধী বক্তব্যও রাখছেন জাতির সামনে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ উপনির্বাচনে ৫৭ সেকেন্ডে ৪৩টি ভোট পড়ার চিত্র প্রকাশিত হলে সিইসি এসবের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করেছেন। সর্বশেষে সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার খর্ব করে নির্বাচনবিরোধী রাজনৈতিক সমাবেশের অনুমতি না দেয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছেন।

সুষ্ঠু নির্বাচনের ফলাফল মেনে না নেয়ায় আমাদের জাতীয় বীরেরা পাকিস্তানি শোষকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন, জীবন দিয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফল নিজেদের মতো করে তৈরি করার জন্য আজ আমাদের নেতারা নীতি-নৈতিকতার ঊর্ধ্বে উঠে ‘সম্ভব-অসম্ভব’ সব কিছুই করছেন। এটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনা থেকে সুস্পষ্ট বিচ্যুতি এবং এতে আমাদের নেতৃত্বের নৈতিক পরাজয় হতে যাচ্ছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করেন।

লেখক : নিরাপত্তা বিশ্লেষক
Email: maksud2648@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement