জার্মানিতে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করবে যুক্তরাষ্ট্র

পশ্চিমা সামরিক জোট নেটো ও ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা জোরদারের অঙ্গীকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র এবার জার্মানিতে দূর-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করতে চলেছে। ২০২৬ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে মোতায়েন হবে এসব ক্ষেপণাস্ত্র। স্নায়ুযুদ্ধের পর এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে।
এসব ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে আছে টোমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এসএম-৬ এবং বিভিন্ন ধরনের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র। বর্তমান ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর চেয়ে এসব ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা অনেক বেশি দীর্ঘ। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির এক যৌথ বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে। জার্মানিতে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের এই ঘোষণা এসেছে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত ন্যাটোর ৭৫তম সম্মেলনে।
১৯৮৮ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার ‘ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস ট্রিটি’র (আইএনএফ) আওতায় এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু ৫ বছর আগে ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র আইএনএফ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়ায় চুক্তিটি ভেঙে যায়। যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দূরপাল্লার মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর পর্যায়ক্রমিক মোতায়েন প্রাথমিকভাবে অস্থায়ী হলেও পরে তা স্থায়ীভাবেই মোতায়েন করা হবে।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘এর ফলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা আরো শক্তিশালী হবে এবং শান্তি নিশ্চিত হবে। সঠিক সময়ে খুবই জরুরি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
তা ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের এই অস্ত্র প্রতিরক্ষার ফলে ন্যাটোর অন্যান্য মিত্র দেশগুলো নিজেদের প্রস্তুত করার সময় পাবে বলে উল্লেখ করেছেন জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি ইউরোপে দূর-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নের জন্য ফ্রান্স, ইতালি এবং পোল্যান্ডের সাথে মিলে একটি খসড়া চুক্তি (লেটার অব ইনটেন্ট) সই করেন। ন্যাটো জোটের তৎপরতাকে রাশিয়া নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তায় মারাত্মক হুমকি হিসেবেই দেখে।
জার্মানিতে মার্কিন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ‘এই নতুন হুমকির জবাব সামরিকভাবেই দেয়া হবে’ বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ। ন্যাটো এবং যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।