অস্ট্রেলিয়ায় পার্লামেন্ট ভবনের ছাদে ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিক্ষোভ
- রয়টার্স
- ০৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০৫
অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় পার্লামেন্ট ভবনের ছাদে উঠে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করেছেন চারজন। ফিলিস্তিনের সমর্থনে ব্যানার টানান তারা। বৃহস্পতিবার ‘ফিলিস্তিন মুক্ত হবে’ লেখা ব্যানার টানিয়ে বিক্ষোভে তারা ইসরাইলকে যুদ্ধাপরাধের জন্য অভিযুক্ত করেন। এই অভিযোগে চার বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে ক্যানবেরা পুলিশ।
এই বিক্ষোভের আগে একই দিনে ফিলিস্তিনকে সমর্থন দেয়ার জেরে বরখাস্ত হয়ে পদত্যাগ করেন অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের এক মুসলিম সিনেটর। সিনেটর ফাতেমা পেম্যান লেবার পার্টি থেকে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রস্তাবের সমর্থনে ভোট দিয়েছিলেন। এর পরই লেবার পার্টির তোপে পড়েন তিনি। তাকে দল থেকে বরখাস্ত করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার পদত্যাগ করেন ফাতেমা। অস্ট্রেলিয়ান লেবার পার্টি বলেছে, দলের নীতিগত অবস্থানকে কেউ দুর্বল করে দিলে তাকে ‘কঠোর শাস্তি’ পেতে হয়। দলীয় নীতি ভঙ্গ করার জন্যই ফাতেমা পেম্যানকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতেই নিরাপত্তার বেড়াজাল ভেদ করে পার্লামেন্টের ছাদে অবস্থান নেয় ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীরা। অস্ট্রেলিয়ার আইনপ্রণেতারা এ বিক্ষোভকে নিরাপত্তার গুরুতর লঙ্ঘন বলে নিন্দা করেছেন। খবরে বলা হচ্ছে, পার্লামেন্টের ছাদে কালো পোশাক পরা মোট চারজন ফিলিস্তিনপন্থী উঠেছিল। প্রায় এক ঘণ্টা পার্লামেন্টের ছাদে ছিল তারা। একটি ব্যানারে লেখা ছিল ‘নদী থেকে সমুদ্র পর্যন্ত, ফিলিস্তিন মুক্ত থাকবে।’ বিক্ষোভকারীদের একজন মেগাফোনে ইসরাইলি সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে বক্তৃতা দেন। যদিও এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরাইল।
ওদিকে, বিক্ষোভকারীরা সেøাগান দিয়ে বলেছে, ‘আমরা ভুলব না, আমরা ক্ষমা করব না। আমরা প্রতিবাদ চালিয়ে যাব।’ এ ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় পার্লামেন্ট ভবনে। রয়টার্সের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ঘটনার সময় পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকজন সদস্য ভবনের প্রধান প্রবেশপথে দাঁড়িয়ে লোকজনকে ওই পথ এড়িয়ে যেতে বলেন। আরো কয়েকজন সদস্য ছাদে উঠে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন।
ফিলিস্তিনপন্থীদের এই বিক্ষোভ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশের উপস্থিতিতে বিক্ষোভকারীরা তাদের ব্যানার গুটিয়ে নেয়। অস্ট্রেলিয়ার ছায়া মন্ত্রিসভার স্বরাষ্ট্রবিষয়ক মুখপাত্র জেমস পিটারসন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বলেন, ‘এটি পার্লামেন্টের নিরাপত্তার গুরুতর লঙ্ঘন। এ ধরনের অনুপ্রবেশ ঠেকানোর জন্য অনেক খরচ করে ভবনটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছিল। এ ঘটনার তদন্ত করা প্রয়োজন।’
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইলের চালানো হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৩৮ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং উপকূলীয় ছিটমহল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গত মাসে জাতিসঙ্ঘের একটি তদন্তে দেখা গেছে, ইসরাইলের কর্মকাণ্ড মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। কারণ, প্রচুর বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অস্ট্রেলিয়া বেশ কয়েকটি ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভের স্থান হয়ে উঠেছে। প্রধান শহরগুলোতে সাপ্তাহিক বিক্ষোভ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে কয়েক মাস ধরেই বিক্ষোভ চলছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা