গাজায় সব নিয়ম লঙ্ঘন করেছে ইসরাইল : ন্যাটো
- আরটি
- ২৬ জুন ২০২৪, ০০:০৫
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইল যে গণহত্যা চালাচ্ছে, তা ‘বিদ্রোহ দমনের’ সব নিয়মকানুন লঙ্ঘন করেছে। সেইসাথে একে কেবল ‘ফিলিস্তিনি জাতিকে ধ্বংস করার’ পরিকল্পিত প্রচেষ্টা বলেই ব্যাখ্যা করা যায়। ন্যাটোর সাবেক বিশ্লেষক ও সুইজারল্যান্ডের গোয়েন্দা কর্মকর্তা কর্নেল জ্যাক বাউড এই মন্তব্য করেছেন।
রুশ নিউজ চ্যানেল আরটিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বাউড বলেন, ইসরাইল রাজনৈতিক দিক দিয়ে হামাস সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করছে না, যা সাধারণত বিদ্রোহ দমনের ক্ষেত্রে করা হয়। বরং তেলআবিব নৃশংস উপায় অবলম্বন করছে, যার একমাত্র লক্ষ্য গোটা ফিলিস্তিনি জাতিকে ধ্বংস করা।
যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সোমবার গাজা থেকে বন্দীদের উদ্ধার করার পর, গাজায় ফের আগ্রাসন শুরু করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। এদিনই কর্নেল বাউডের এই সাক্ষাৎকার প্রচারিত হলো। নেতানিয়াহু গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজা আগ্রাসনের প্রধান লক্ষ্য হিসেবে বহুবার হামাসের বিরুদ্ধে ‘সার্বিক বিজয়ের’ দাবি করেছেন। তবে যুদ্ধ-পরবর্তী পরিকল্পনা হিসেবে তিনি গাজা উপত্যকার ওপর ‘পূর্ণ নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ’ প্রতিষ্ঠার কথাও তুলে ধরেছেন।
কর্নেল বাউড এ সম্পর্কে বলেন, ইসরাইল রাজনৈতিক উপায়ে হামাস সমস্যার সমাধান করতে এ কারণে চায় না যে, তারা জাতি হিসেবে ফিলিস্তিনিদের নির্মূল করতে চায়। ন্যাটোর সাবেক এ কর্নেল সরাসরি বলেন, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে শুধু ইহুদিরা বসবাস করবে- ইসরাইল শুরু থেকেই এই নীতি অবলম্বন করে এসেছে। এই নীতি বাস্তবায়ন করার কাজে যেকোনো পাশবিকতা চালাতে তারা পিছপা হবে না। তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য ফিলিস্তিন নামক ভূখণ্ডকে ফিলিস্তিনিমুক্ত করা।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু কখনোই গাজাকে নির্জন উপত্যকায় পরিণত করার কথা বলেননি। তবে তার মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য বিশেষ করে অর্থমন্ত্রী স্মোটরিচ ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা মন্ত্রী বেন গাভির গাজা থেকে সব ফিলিস্তিনিকে বিতাড়িত করার দাবি তুলেছেন। এমনকি তারা পরমাণু বোমা মেরে গাজাকে শেষ করে দেয়ার কথাও বলেছেন। গত বছর ইসরাইলের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়ের ফাঁস হওয়া এক নথিতে দেখা গেছে, সেখানে গাজার ২৩ লাখ ফিলিস্তিনিকে মিসরে কিংবা কোনো পশ্চিমা দেশে শরণার্থী হিসেবে পাঠিয়ে দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ফিলিস্তিনি শিশুকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার চেষ্টা মার্কিন নারীর
সিএনএন থেকে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে এক নারীর বিরুদ্ধে তিন বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি-আমেরিকান মুসলিম মেয়ে শিশুকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। মায়ের ফিলিস্তিনি পরিচয় জানার পর একটি অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের সুইমিং পুলে শিশুটিকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার চেষ্টা চালান টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা এলিজাবেথ উলফ (৪২)। তার বিরুদ্ধে শিশু হত্যার চেষ্টা এবং আঘাতের অভিযোগ এনেছে টেক্সাস পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সময় উলফ ঘোর নেশাগ্রস্ত ছিলেন।
ঘটনাটি ঘটেছে ১৯ মে। এ দিন শিশুটির মা হিজাব পরিহিত অবস্থায় সন্তানদের নিয়ে পুলে যান। এ সময় উলফ তাকে ধর্ম ও জাতীয়তা নিয়ে প্রশ্ন করা শুরু করেন। পরিচয় নিশ্চিত হয়েই ওই নারীর পুলে থাকা দুই সন্তানের ওপর চড়াও হন তিনি। শিশুটির মা পুলিশকে জানান, ফিলিস্তিনি পরিচয় পেয়ে প্রথমে তার ছয় বছর বয়সী ছেলেকে ধরার চেষ্টা করেন উলফ। কিন্তু ছেলেটি উলফের কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরে যায়, তবে তার হাতে আঁচড় লাগে। ছেলেটি ছিটকে যাওয়ার পর তিন বছরের মেয়েটির ওপর চড়াও হন উলফ। মেয়েটিকে তিনি পানির নিচে চেপে ধরেছিলেন।
ঘটনার দিন উলফকে আটক করা হলেও জামিনে পরদিনই তিনি স্থানীয় ট্যারান্ট কাউন্টি কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে যান। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করে ফিলিস্তিনি ওই মা বলেন, “আমরা মার্কিন নাগরিক হলেও মূলত ফিলিস্তিন। আমি জানি না, সন্তানদের নিয়ে কোথায় গেলে আমরা নিরাপদে থাকতে পারবো। আমার দেশ একটি যুদ্ধের মধ্যে আছে এবং আমরা এখানেও সেই ঘৃণারই মুখোমুখি হচ্ছি।”
তিনি আরো বলেন, “আমার মেয়ে আতঙ্কিত হয়ে আছে। যখনই আমি অ্যাপার্টমেন্টের দরজা খুলি, সে দৌড়ে পালিয়ে যায় আর আমাকে বলে যে সে ভয় পাচ্ছে যে ওই নারী এসে আবার তার মাথা পানিতে ঠেসে ধরবে।” মানবাধিকার কর্মীরা জানিয়েছেন, গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ইসলামভীতি, ফিলিস্তিনবিরোধী পক্ষপাত এবং ইহুদিবিদ্বেষ বেড়েছে। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, এ ঘটনার খবরে তিনি ‘গভীরভাবে মর্মাহত’। সংঘটিত এই ঘটনায় একটি ঘৃণাত্মক অপরাধের তদন্ত দাবি করেছে আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনসের (সিএআইআর) টেক্সাস শাখা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা