জার্মানিতে ২ যুগের মধ্যে প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট
- রয়টার্স
- ২৭ মে ২০২৪, ০০:০৫
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ তিন দিনের এক রাষ্ট্রীয় সফরে জার্মানিতে গিয়েছেন। এটি ২৪ বছরের মধ্যে প্রতিবেশী দেশটিতে ফ্রান্সের কোনো প্রেসিডেন্টের প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর। এ সফরকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নীতিনির্ধারণকারী ফ্রান্স ও জার্মানির পারস্পরিক সম্পর্কের ‘স্বাস্থ্য পরীক্ষা’ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সফরে জার্মানির রাজধানী বার্লিন, পূর্বাঞ্চলীয় ড্রেসডেন ও পশ্চিমাঞ্চলীয় মুনস্টারে যাবেন মাক্রোঁ। রোববার জার্মানিতে পৌঁছানোর পর বার্লিনে দেশটির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক ভাইটার স্টাইনমায়ারের সাথে বৈঠকের মধ্য দিয়ে সফর শুরু করেন মাক্রোঁ ।
আগামী মাসে ইইউয়ের পার্লামেন্ট নির্বাচন। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইইউয়ের দুই বৃহত্তম শক্তি- ফ্রান্স ও জার্মানি, নিজেদের মধ্যে ঐক্য তুলে ধরতে চায়। ইউক্রেইন যুদ্ধ ও নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য নির্বাচন নিয়ে চাপে আছে ইউরোপ। মাক্রোঁ ও জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বের ধরন খুব আলাদা রকমের। শলজ ২০২১ সালে জার্মানির চ্যান্সেলরের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে প্রতিরক্ষা থেকে পারমাণবিক শক্তির মতো বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের মধ্যে প্রকাশ্যে বিরোধ ঘটেছে। পরে তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের মধ্যে সমঝোতায় পৌঁছান।
বার্লিনের জ্যাক দ্যুলো ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞ ইয়ান ভেয়ানাট বলেছেন, ‘জার্মানি ও ফ্রান্সের সম্পর্কে উত্তেজনা রয়েছে, এর আংশিক কারণ তারা কিছু জটিল বিষয় নিয়ে কাজ করছে।’- এ দুই দেশ ইইউয়ের পূর্বমুখী সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও একমত হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। ইউরেশিয়া গ্রুপ থিঙ্ক ট্যাঙ্কের ইউরোপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজতবা রহমান বলেন, ‘তাদের সম্পর্ক কাজ করছে- সর্বোচ্চ রাজনৈতিক স্তরে এটি দেখানোর প্রয়াসেই এ সফর, কিন্তু এখনো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলোতে তাদের মধ্যে মৌলিক ফারাক রয়ে গেছে।’
ইউরোপের প্রতিরক্ষা প্রশ্নে দুই পক্ষের মধ্যে এ ধরনের একটি গুরুতর ফারাক সামনে চলে আসবে যদি ট্রাম্প আবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের তুলনায় ইউরোপের অনেক কম অনুমানযোগ্য নির্ভরযোগ্য মিত্র বলে বিবেচনা করেন। চলতি বছরেই ট্রাম্প বলেছেন, যদি ন্যাটোর প্রতিরক্ষা বাজেটে অবদানের ক্ষেত্রে ইউরোপের দেশগুলো পিছিয়ে থাকে, তাহলে এর সদস্য দেশগুলোকে রাশিয়া ভবিষ্যৎ হামলা থেকে কোনো সুরক্ষা দেবেন না তিনি; বরং রাশিয়াকে ‘তাদের যা ইচ্ছা তাই’ করতে উৎসাহিত করবেন।
ইউরোপের আকাশ প্রতিরক্ষায় অধিকাংশ মার্কিন প্রযুক্তি কেনার বিষয়ে জার্মানির সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচক তারা। অপর দিকে জার্মানির যুক্তি, মার্কিন আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্য কোনো বিকল্প নেই, আর রাশিয়ার শত্রুতা মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি নিতে নিজেদের প্রতিরক্ষাশিল্প গড়ে তোলার জন্য অপেক্ষা করার মতো সময়ও ইউরোপের নেই।