স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টায় বিশ্বনেতাদের নিন্দা
- বিবিসি ও রয়টার্স
- ১৭ মে ২০২৪, ০০:০৫
স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। হামলার পরই ঘটনাস্থল থেকেই আততায়ী সন্দেহে একজন আটক হয়েছে। হামলার উদ্দেশ্য কী তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট জানা যায়নি। প্রধানমন্ত্রী গুলিবিদ্ধ হওয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য পার্লামেন্টের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যদেশ স্লোভাকিয়ায় রাজনৈতিক সহিংসতার ইতিহাস কম। সেখানে এমন হামলার ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে এর নিন্দা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনসহ ইইউ-এর দেশগুলোর নেতারাও। বাইডেন এ হামলাকে ‘ভয়াবহ সহিংস কাণ্ড’ বলে নিন্দা করেছেন। মার্কিন দূতাবাস স্লোভাকিয়া সরকারের পাশে আছে এবং সহায়তা করতে প্রস্তুত বলে জানান তিনি। ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মাইকেল বলেছেন, এ ধরনের হামলা কিংবা সহিংসতার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ এক্সে এক পোস্টে হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে রবার্ট ফিকোর পরিবার এবং স্লোভাকিয়ার জনগণের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেছেন, এই কাপুরুষোচিত হামলায় তিনি অত্যন্ত মর্মাহত। তিনি সব ধরনের সহিংসতা এবং গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার ওপর আক্রমণের কড়া নিন্দা জানান। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন এ হামলাকে ‘দানবীয় এক অপরাধ’ আখ্যা দিয়েছেন। অন্য দিকে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসও স্লোভাক প্রধানমন্ত্রীর ওপর বুধবারের হামলার কড়া নিন্দা করেছেন বলে জানিয়েছেন তার মুখপাত্র।
স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোকে হত্যার চেষ্টায় পাঁচবার গুলি করা হয়, তবে তার অবস্থা এখন আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন দেশটির এক মন্ত্রী। বুধবার স্লোভাকিয়ার মধ্যাঞ্চলীয় নগরী হ্যান্ডলোভায় সরকারি এক বৈঠক শেষে বের হওয়ার সময় তাকে গুলি করা হয়। সঙ্কটজনক অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে সন্ধ্যার দিকে জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়।
স্লোভাকিয়ার উপ প্রধানমন্ত্রী ও পরিবেশমন্ত্রী টমাস তারাবা বিবিসি নিউজ আওয়ারকে বলেছেন, ‘আমি অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছি। সৌভাগ্যবশত আমি যতদূর জেনেছি, অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। তিনি বেঁচে যাবেন বলে আশা করছি। জীবন সংশয়ের পরিস্থিতি পার হয়ে গেছে।’
পাঁচটি গুলির মধ্যে একটি গুলি ফিকোর পেটে ও আরেকটি এক সন্ধিস্থলে লেগেছে বলে তারা জানিয়েছেন। গণমাধ্যম আক্তুয়ালিতি ডট এসকে এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, অস্ত্রোপচারের পরে ফিকো এখন স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছেন। তার শরীরে কয়েকটি গুলি লেগেছে বলে স্লোভাকিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট কালিনাক এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাতুস সোতাই এস্তোক বলেছেন, ‘এই হত্যার চেষ্টা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরপরই অপরাধীরা এ সিদ্ধান্তটি নিয়েছিল।’ এর আগে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে নগরীর একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখান থেকে জরুরি চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারে করে বানস্কা বাইস্ত্রিকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এপ্রিলে দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ফিকোর মিত্র পিতার প্যালাগ্রিনি জয়ী হয়েছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলেও প্যালাগ্রিনির জয়ের মাধ্যমে ক্ষমতায় ফিকোর নিয়ন্ত্রণ আরো সংহত হয়। তবে ৫৪ লাখ জনসংখ্যার দেশটিতে রাজনৈতিক মেরুকরণ নিয়ে বিতর্ক রয়েই গেছে। নির্বাচনের আগে থেকেই এ নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছিল। অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফেরার পর ফিকো দ্রুত নীতি পরিবর্তন করেন। বিরোধীদলীয় সমালোচকরা একে ‘ক্ষমতা দখল’ বলে অভিহিত করেছেন।
রাশিয়ার সাথে সংলাপ শুরু হওয়ার সময় থেকে তার সরকার ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন কমিয়ে দিয়েছে। স্লোভাকিয়ার গণমাধ্যম জানিয়েছে, হামলাকারী ৭১ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। তিনি একটি শপিংমলের সাবেক এক নিরাপত্তারক্ষী। ইউরোপের মধ্যাঞ্চলীয় ছোট দেশ স্লোভাকিয়া যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য। দেশটিতে রাজনৈতিক সহিংসতার তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য ইতিহাস নেই। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভাদিমির পুতিন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং স্লোভাকিয়ার ইইউ মিত্ররা এ হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা