১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

আজাদ কাশ্মিরে দাবি মেনে নেয়ায় বিক্ষোভ স্থগিত

-

আটা, ময়দা, জ্বালানিসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে আজাদ কাশ্মির। এর পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ২৪ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি (৮৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) ভর্তুকি ঘোষণা দেন গত সোমবার। এর একদিন পর গতকাল মঙ্গলবার আয়োজকরা বিক্ষোভ স্থগিত করেছেন। কাশ্মিরে আটা ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত শুক্রবার থেকে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছেন হাজার হাজার মানুষ।
আজাদ কাশ্মিরে বিক্ষোভে নেতৃত্বদানকারীদের একজন শওকত নওয়াজ মীর। তিনি বলেন, ‘সরকার আমাদের সব দাবি মেনে নিয়েছে।’ সহিংসতায় নিহতদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তবে বিক্ষোভে নিহতদের সম্মান জানাতে মঙ্গলবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ধর্মঘট পালন করে তারা। দিনটিকে কালো দিবস ঘোষণা করে তারা।
কাশ্মিরে গত সপ্তাহের শেষের দিক থেকে বিক্ষোভ ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানকার কর্তৃপক্ষ মোবাইল পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে। কাশ্মিরের স্কুল, গণপরিবহন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ আঞ্চলিক রাজধানী মুজাফফরাবাদে পাকিস্তানের আধা-সামরিক বাহিনী রেঞ্জার্সের সদস্যদের মোতায়েন করে। বিক্ষোভের ফুটেজে দেখা যায়, উভয়পক্ষ পরস্পরকে রড দিয়ে আঘাত করছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি এবং কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে।
বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সাথে সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। সহিংসতায় আহত হয়েছেন আরো শতাধিক। কাশ্মিরের কর্তৃপক্ষ বলেছে, চলমান বিক্ষোভ-সহিংসতায় নিহত চারজনের মধ্যে পুলিশের এক কর্মকর্তাও রয়েছেন। পাকিস্তানের সামরিক হাসপাতালের এক চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি বলেছে, বিক্ষোভে যে চারজন নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে অন্তত দু’জন সরাসরি গুলির আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন।
কাশ্মিরের মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা গোষ্ঠী দ্য জয়েন্ট আওয়ামী অ্যাকশন কমিটি প্রথম এই বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল। বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মঙ্গলবার ‘কালো দিবস’ ঘোষণা করে গোষ্ঠীটি। আজাদ কাশ্মির আধা-স্বায়ত্তশাসিত একটি অঞ্চল। যেখানে এই অঞ্চলের নিজস্ব আঞ্চলিক সরকার রয়েছে। সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে বৈরী দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্ঘাতের অন্যতম উৎসও এই কাশ্মির।
দিল্লি ও ইসলামাবাদ-উভয়ই হিমালয় ঘেঁষা এই অঞ্চলের সম্পূর্ণ মালিকানা দাবি করে। এখন পর্যন্ত কাশ্মির অঞ্চলকে নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মাঝে অন্তত দু’বার যুদ্ধ হয়েছে। এ ছাড়াও উভয় দেশের মাঝে একবার ছোট পরিসরের সঙ্ঘাত শুরু হলেও তা শেষ পর্যন্ত যুদ্ধে গড়ায়নি। বর্তমানে উভয় দেশই কাশ্মিরের একটি করে অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ করছে।


আরো সংবাদ



premium cement