১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ইউক্রেনকে গোপনে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটিএ সিএমএস ক্ষেপনাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপন করছে : ইন্টারনেট -

যুক্তরাষ্ট্র গোপনে ইউক্রেনে দীর্ঘপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে আর কিয়েভ সেগুলো রাশিয়ার আক্রমণকারী বাহিনীগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে শুরু করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন এক মার্কিন কর্মকর্তা। মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ৩০ কোটি ডলারের একটি সামরিক সহায়তা প্যাকেজ অনুমোদন করেছিলেন, এসব অস্ত্র তারই অংশ বলে জানিয়েছেন তিনি। চলতি মাসে অস্ত্রগুলো ইউক্রেনে পৌঁছেছে।
মার্কিন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এসব ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে অন্তত একটি ইতোমধ্যেই ব্যবহার করা হয়েছে, ক্রাইমিয়ায় রুশ লক্ষ্যস্থলগুলোর উদ্দেশে সেটি ছোড়া হয়। এবার বাইডেন ইউক্রেনের জন্য ৬১ বিলিয়ন ডলারের নতুন একটি সামরিক সহায়তা প্যাকেজে স্বাক্ষর করেছেন। বিলটি স্বাক্ষর করে আইনে পরিণত করার পর বাইডেন বলেছেন, ‘এটি আমেরিকাকে আরো নিরাপদ করবে, এটি বিশ্বকেও আরো নিরাপদ করবে।’
যুক্তরাষ্ট্র এর আগে আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেমের (এটিএসিএমএস) মধ্য-পাল্লার সংস্করণ ইউক্রেইনে পাঠিয়েছিল কিন্তু অংশত নিজেদের সামরিক বাহিনী সংশ্লিষ্ট কিছু কারণে আরো শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর বিষয়ে অনিচ্ছুক ছিল।
কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে বাইডেন গোপনে দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রপদ্ধতি পাঠানোর সবুজ সঙ্কেত দেন বলে জানা গেছে। এসব পদ্ধতি সর্বোচ্চ ৩০০ কিলোমিটার দূরে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে পারে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করতে পারি, প্রেসিডেন্টের সরাসরি দিকনির্দেশনায় যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে দীর্ঘপাল্লার এটিএসিএমএস দিয়েছে। ইউক্রেনের অনুরোধে তাদের অভিযানের নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য (যুক্তরাষ্ট্র) এটি ঘোষণা করেনি।’
এসব অস্ত্রের কতগুলো ইতোমধ্যে পাঠানো হয়েছে তা পরিষ্কার হয়নি, তবে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সালিভান জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন আরো পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে। তিনি বলেছেন, ‘এগুলো একটি পার্থক্য গড়ে দেবে। কিন্তু এই মঞ্চ থেকে আমি আগেও বলেছি যে কঠিন সমস্যার দ্রুত সমাধান আনার মতো কিছু নেই।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা রয়টাসর্কে জানিয়েছেন, এই দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রটি গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো ক্রাইমিয়ায় রাশিয়ার একটি বিমানক্ষেত্রে আঘাত হানতে ব্যবহার করা হয়েছিল। নিউ ইয়র্ক টাইমসের ভাষ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাতে অধিকৃত বন্দর শহর বারদিয়ানস্কে রুশ বাহিনীর ওপর হামলা চালাতেও নতুন এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ব্যবহার করা হয়।
‘ইউক্রেনের জন্য আরো সমস্যা তৈরি করবে’
এদিকে ক্রেমলিন গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছে, ইউক্রেনে মার্কিন দূরপাল্লার আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেমের (এটিএসিএমএস) সরবরাহ যুদ্ধের ফলাফল পরিবর্তন করবে না, বরং ইউক্রেনের জন্য আরো সমস্যা তৈরি করবে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি এই সঙ্ঘাতে জড়িত। তারা সরবরাহ করা অস্ত্রের অপারেটিং রেঞ্জ বাড়ানোর পথ অনুসরণ করছে।’ দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘এটি মৌলিকভাবে বিশেষ সামরিক অভিযানের ফলাফলকে পরিবর্তন করবে না। আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জন করব।
তবে এটি ইউক্রেনের জন্য আরো সমস্যা সৃষ্টি করবে।’ আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম (এটিএসিএমএস) ৩০০ কিলোমিটার পর্যন্ত রেঞ্জসহ ইউক্রেনে পাঠানো হবে কি না, তা বাইডেন প্রশাসনের মধ্যে কয়েক মাস ধরে বিতর্কের বিষয় ছিল। তবে মাঝারি পাল্লার এটিএসিএমএস গত সেপ্টেম্বরে সরবরাহ করা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement