০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`


মন্ত্রীদের হুঁশিয়ারি ব্রেক্সিট ইস্যুতে কঠোরতায় ভেঙে যেতে পারে ব্রিটেন

-

যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভার সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন যে, ব্রেক্সিট পরিকল্পনা নিয়ে কঠোর অবস্থান কেবল ব্রিটেনের ভাঙনকেই ত্বরান্বিত করবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যেতে ব্রেক্সিটপন্থীদের নতুন প্রচেষ্টার মধ্যেই দেশটির মন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’কে এই হুঁশিয়ারি জানালেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ডাউনিং স্ট্রিট থেকে এক বিবৃতিতে আগামী মার্চে ব্রিটেনের ইইউ ত্যাগের ছয় মাস আগে চুক্তিতে না পৌঁছানো এবং চলমান অচলাবস্থার জন্য ব্রাসেলসকে দায়ী করেন মে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেন, ‘পুরো প্রক্রিয়ায় আমি ইইউকে সম্মানের সাথে দেখেছি। যুক্তরাজ্যও ইইউর কাছে এমনটা প্রত্যাশা করছে।’ গত সপ্তাহে সালজবার্গে আয়োজিত ইইউ সম্মেলন থেকে ফিরে বৃহস্পতিবার এই মন্তব্য করেন মে।
এ দিকে ইইউ সম্মেলন থেকে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র খালি হাতে ফেরাকে ব্রিটিশ গণমাধ্যম মানহানিকর হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। সর্বশেষ এ ঘটনাটি মে’র কনজারভেটিভ পার্টির ইইউ সংশয়বাদীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে, যারা দলীয় প্রধানকে কঠোর হওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন। সালজবার্গ সম্মেলন থেকে দৃশ্যত খালি হাতে ফিরে আসাকে বিপর্যয়কর হিসেবে উল্লেখ করে সিনিয়র সংরক্ষণবাদী নেতারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে সুয়েজ সঙ্কটের মতো বড় কূটনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারেন এবং চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট কার্যকর করলে তা যুক্তরাজ্যের ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে হুমকির মুখে ফেলবে। সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ব্রেক্সিট নিয়ে থেরেসা মের সমর্থন খুবই কমে গেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়েও কথা বলেছেন।
ব্রেক্সিট নিয়ে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরে মূল সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে ইইউ সদস্য রাষ্ট্র আয়ারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড অংশের মধ্যে বাণিজ্যের শর্ত নির্ধারণ নিয়ে। আইরিশ সীমান্তের বিষয়ে ইইউর পরামর্শ হচ্ছে; নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ইউরোপীয় বাজারের অংশ হিসেবে থাকবে। আর বাকি যুক্তরাজ্য ইইউ থেকে আলাদা হয়ে যাবে। কিন্তু ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিকভাবে এবং সাংবিধানিকভাবে যুক্তরাজ্যকে বিভক্ত করে ফেলবে।
আগামী অক্টোবরে ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে যদি চূড়ান্ত ব্রেক্সিট পরিকল্পনা উপস্থাপন করা না যায় তাহলে এ বিষয়ে আগামী নভেম্বরে বিশেষ বৈঠক আহ্বান করাও সম্ভব হবে না। সে েেত্র আগামী ২৯ মার্চের মধ্যে ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার যে সিদ্ধান্ত থেরেসা মে নিয়েছেন তা বাস্তবায়ন করতে হলে চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট কার্যকর করতে হবে, যা ‘নো ডিল-ব্রেক্সিট’ নামে আখ্যায়িত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মেকে তার মন্ত্রিসভার সহকর্মীরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট কার্যকর করা হলে (হার্ড ব্রেক্সিট) যুক্তরাজ্য ভেঙে যেতে পারে। মূলত সালজবার্গ সম্মেলনের পরই ব্রেক্সিট নিয়ে নিজেদের এমন ভাবনার কথা জানিয়েছেন এই সংরক্ষণবাদী রাজনীতিবিদরা। ওই সম্মেলনে ইইউ নেতারা খুব স্পষ্ট করেই বলেছেন যে, থেরেসা মে যেভাবে ব্রেক্সিট চুক্তি চূড়ান্ত করতে চাচ্ছেন তা কার্যকর করা সম্ভব নয়। এর প্রেেিত বর্তমানে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে তার কিছু সহযোগী ইইউর সাথে এমন বাণিজ্য চুক্তি করার পরামর্শ দিচ্ছেন যাতে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের মূল ভূমিতে পৃথক বাণিজ্যিক আইন কার্যকর হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement