গঙ্গা চুক্তি নবায়ন না হলেও পানি পাবে বাংলাদেশ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- কূটনৈতিক প্রতিবেদক
- ২৭ জুন ২০২৪, ০০:০৫
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি নবায়ন না হলেও পানি পাবে বাংলাদেশ। চুক্তি না হলেও এটি অটোমেটিক চলবে। চুক্তিটি সেভাবে করা আছে। তবে গঙ্গা চুক্তি নবায়নের জন্য আমরা ভারত সরকারের সাথে আলোচনা করেছি।
গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন। এর আগে ঢাকায় নিযুক্ত সুইডেনের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেন।
মন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশের সাথে গঙ্গা ও তিস্তা চুক্তির বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিমত পোষণ করেছেন। রাজ্য সরকারের আপত্তির কারণে বাংলাদেশ এর আগেও তিস্তার পানি পায়নি। এবারো বাধা হয়ে সামনে আসছে রাজ্য সরকার। এমন পরিস্থিতিতে কোনো আশা দেখেন কি না?
জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাজ্য এবং কেন্দ্রের বিষয় ভারতের অভ্যন্তরীণ। বাংলাদেশ সরকার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে আলোচনা করে সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি করে। আমি মনে করি, এ প্রশ্নটা ভারত সরকারকে করলেই ভালো হয়। তারাই এটার সঠিক উত্তর দিতে পারবে। কারণ, এটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, তিস্তা নদীর সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের জন্য দ্রুত একটি কারিগরি দল বাংলাদেশে যাবে। কবে নাগাদ কারিগরি দল আসতে পারে-জানতে চাইলে ড. হাছান বলেন, আমরা মাত্র ভারত সফর করে এলাম। কারিগরি কমিটি গঠন করতে হবে। এরপর তারা আসবে। তাই সময়তো একটু লাগবে।
ভারতকে রেল ট্রানজিট দেয়ার ব্যাপারে সমালোচনার জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের সাথে রেল যোগাযোগ তো আছেই। ঢাকা-কলকাতা, খুলনা-কলকাতা, উত্তরবঙ্গ-শিলিগুড়ি রুটে রেল চলছে। ১৯৬৫ সালের আগে ভারতের সাথে অনেক বেশি রেল যোগাযোগ ছিল। ’৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের পর এ যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। যেগুলো বন্ধ হয়ে গেছে, আমরা সেগুলো ধীরে ধীরে চালু করার কাজ করছি। তিনি বলেন, শুধু ভারতের সাথে হচ্ছে তা নয়, আমরা নেপাল ও ভুটানেও যাতে রেল এবং গাড়িতে আসা-যাওয়া করতে পারি, সেটি নিয়েও আলোচনা করছি। আমরা আঞ্চলিকভাবে যেন যোগাযোগ বাড়াতে পারি, সেটা নিয়ে আলোচনা করছি।
গতকাল ভোরে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নুরুল ইসলাম নামে এক বাংলাদেশী নিহত হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, আপনার কাছে খবরটি শুনলাম। আমাকে এটা যাচাই করতে হবে। তবে একটুকু বলতে পারি, আমরা দিল্লি সফরে এবারো আলোচনা করেছি, যাতে সীমান্ত হত্যা শূন্যে নেমে আসে। সীমান্ত হত্যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আশা করি আস্তে আস্তে সীমান্ত হত্যা কমে আসবে এবং এক সময় শূন্যের কোটায় নেমে আসবে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ দলটির অন্য নেতারা চুক্তি আর সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) মধ্যে কোনো পার্থক্য বোঝেন না বলে অভিযোগ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা চুক্তি আর সমঝোতার বিষয়টি বোঝে না তাদের বিষয়ে কি জবাব দেবো, সেটি আমার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। ভারতের সাথে কোনো চুক্তি হয়নি, সমঝোতা হয়েছে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তারা প্রতিবেশীদের সাথে সম্পর্ক ঠিক রাখতে পারেনি। বিএনপি কারণে-অকারণে সরকারের বিরোধিতা করে। যে সমঝোতা স্মারকগুলো হয়েছে, সেগুলোর সবগুলো বাংলাদেশের স্বার্থে হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা