ব্যারিস্টার সালেহউদ্দিনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ সদস্য (এমএনএ, ১৯৭০, ফরিদপুর-২), গণপরিষদ সদস্য (এমসিএ, ১৯৭২), বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সদস্য (এমপি, ১৯৭৩, ফরিদপুর-৩), বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ব্যারিস্টার সৈয়দ কামরুল ইসলাম মোহাম্মদ সালেহউদ্দিনের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
ব্যারিস্টার সালেহউদ্দিন ১৯৩৭ সালে ২ জুলাই ফরিদপুরের গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি অবিভক্ত ভারতবর্ষের কম্যুনিস্ট পার্টির সদস্য হিসাবে রাজনৈতিক সংগ্রাম শুরু করেন। বাবা সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুল হালিম ছিলেন অল বেঙ্গল মুসলিম স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং দাদা সৈয়দ আব্দুল করিম অবিভক্ত ভারতবর্ষে কংগ্রেসের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। ব্যারিস্টার সালেহউদ্দিন ১৯৫২’র মহান ভাষা আন্দোলনে রাজবন্দী হিসেবে ১৯৫৩ সালে বরিশালের তৎকালীন বিএম ইন্সটিটিউট থেকে ম্যাট্রিকুলেশন, ১৯৫৬ সালে রাজবন্দী হিসেবে বাগেরহাটের পিসি কলেজ থেকে আইএ, ১৯৫৯ সালে যশোরের মাইকেল মধুসূদন কলেজ থেকে বিএ পাস করে ১৯৬৩ সালে লন্ডন গমন করেন। ইনার টেম্পল থেকে ১৯৬৮ সালে ব্যারিস্টারি পাস করে ১৯৬৯ সালে কুইন্স কাউন্সিলর (কিউসি) নির্বাচিত হয়ে ব্রিটিশ হাইকোর্টের কুইন্সবেঞ্চ ডিভিশনে আইন পেশা শুরু করেন।
তিনি পূর্ব-পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ভূমিকা পালন করেন। ৫২’র ভাষা আন্দোলনে ঢাকায় পুলিশের গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ সালে বরিশাল শহরের এক প্রতিবাদ মিছিল থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। স্বাধিকার আন্দোলনে যোগদানের জন্য ব্রিটিশ সরকারের লোভনীয় চাকরি ছেড়ে তিনি দেশে ফিরে ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগের টিকিটে তৎকালীন ফরিদপুর-২ থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ সদস্য (এমএনএ) নির্বাচিত হন।
১৯৭২ সালে গণপরিষদের সদস্য (এমসিএ) হিসেবে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নে দ্বায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে বাংলাদেশের সংবিধানে স্বাক্ষরদান করেন। ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৩ (বর্তমান ফরিদপুর-১, মধুখালী-বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গা) থেকে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হয়ে মওলানা ভাসানীর ন্যাপে যোগদান করে সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করেন। ২১ সেপ্টেম্বর ১৯৮১ সালে তিনি বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি অত্যন্ত সৎ, নির্ভীক, প্রচারবিমুখ, সহজ-সরল জীবনযাপনকারী ছিলেন। ২৪ মে ১৯৮৩ তৎকালীন ঢাকার পিজি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টিসহ বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে ১৮৪ মধ্য বাসাবোতে বাদ আসর দোয়া মাহফিল, ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার বনমালিদিয়া শাহ সৈয়দ হাবিবুল্লাহ মাজার মসজিদ ও ঢাকার বনানী কবরস্থানে বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির উদ্যোগে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি।