বেতন চাওয়ায় বরিশালে শ্রমিকদের ওপর গুলি আহত ১০

জুতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফরচুন সুজ লিমিটেডে হামলা করেছে শ্রমিকরা। বকেয়া বেতন চাইতে গেলে এই ঘটনার সূত্রপাত। কারখানার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা শ্রমিকদের ওপর ১০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেছে। এতে অন্তত চার শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। অপর দিকে শ্রমিকদের ছোড়া ইটের আঘাতে কাউনিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান এবং পাঁচ আনসার সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। অভিযোগ রয়েছে, এর আগেও বেতন-ভাতা চাওয়ায় কয়েকবার ফরচুন কোম্পানির বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল বিসিকে অবস্থিত কারখানায় এই ঘটনা ঘটে। কারখানাটি বিপিএলে ফরচুন বরিশাল টিমের মালিক ও বিসিক শিল্পনগরী ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমানের।
আন্দোলনকারী শ্রমিক নিপা হালদার গণমাধ্যমকে বলেন, কোম্পানি কথা দিয়েছিল প্রতি মাসের ৮ তারিখের মধ্যে বেতন দিবে। কিন্তু তা না দিয়ে এক মাসের বেতন পরের মাসের ২৫ তারিখেরও পরে দেয়। আমরা ফরচুন সুজের কাছে দুই মাসের বেতন পাবো। আজকে সেই বেতন চাইতে গেলে কোম্পানি দুই মাসের বেতন না দিয়ে ১৫ দিনের বেতন দিতে রাজি হন। এতে কিছু শ্রমিক কারখানা থেকে বের হয়ে গেলে তাদের আনসার ক্যাম্পে ধরে এনে মারধর করে। এই শ্রমিক দাবি করেন, মারধরের একপর্যায়ে গুলিও করে আনসার সদস্যরা।
আরেক আন্দোলনকারী ইউনুস বলেন, এখন পর্যন্ত ৪-৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। শ্রমিকদের যখন মারধর করে তখন ফরচুন সুজের মালিক মিজান ঘটনাস্থলে ছিলেন। তার নির্দেশেই শ্রমিকদের ওপর গুলি চালায় আনসার সদস্যরা। এর আগেও বেতন-ভাতা নিয়ে অনেকবার ফরচুন কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের মারধর করেছে। টাকা না দিয়ে অনেককে বের করে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এরা কথায় কথায় শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন করে বলে একাধিক সূত্র জানায়।
আরেক আন্দোলনকারী শ্রমিক নাসরিন বলেন, বেতন চেয়েছি। বেতন দিবেন না। ভালো কথা, আমার শ্রমিক ভাইদের মারবে কেন? এই খবর শুনে আমরা সবাই জড়ো হয়ে মিছিল করছি। অতিউৎসাহী কেউ কেউ কারখানায় ইট মেরে জানালার গ্লাস ভেঙেছে। এর সাথে শ্রমিকদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এখানে প্রায়ই শ্রমিকরা নির্যাতনের শিকার হয় বলে জানান তিনি।
আনসার সদস্য ইউসুফ আলী বলেন, শ্রমিকরা কারখানার কাছে বেতন পাবে। তারা আন্দোলনে নেমে প্রথমেই এসে আমাদের আনসার সদস্যদের ক্যাম্পে হামলা চালায়। আমরা উপরের নির্দেশে ১০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করি। এতে কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন। কেউ নিহত হয়েছেন কি না জানা নেই।
বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করছি। এখন পর্যন্ত চারজন শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিস্তারিত পরে জানাবো।