২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এআই প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সমঝোতা

এআই প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সমঝোতা - ছবি : সংগৃহীত

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির অপব্যবহার রুখতে রোববার ১৮টি দেশ কোম্পানিগুলোর জন্য কিছু বিষয়ে সুপারিশ করেছে। বাধ্যতামূলক না হলেও এর ফলে ঝুঁকি কমানো সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিশ্বজুড়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির প্রয়োগ যেভাবে বেড়ে চলেছে, মানবজাতির ভবিষ্যতের ওপর তার গভীর প্রভাব নিয়ে তেমন কোনো সংশয় নেই। কিছু বিশেষজ্ঞ এই প্রযুক্তিকে মানুষের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হিসেবেও সতর্ক করে দিচ্ছেন। নতুন এই প্রবণতা চিকিৎসা থেকে শুরু করে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতির সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলছে।

বিভিন্ন দেশ এআই প্রযুক্তির উন্নতির উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাইছে। একইসাথে এমন বিধিনিয়ম ও আইনকানুনের সন্ধান চলছে, যা উন্নতির পথে অন্তরায় না হয়েও বিপদের আশঙ্কা দূর করতে পারে।

বিশ্বায়নের এই যুগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত বিধিনিয়ম যে শুধু জাতীয় স্তরে আবদ্ধ রাখার তেমন কোনো অর্থ নেই, এ বিষয়ে সংশয় নেই। তাই আন্তর্জাতিক স্তরে ঐকমত্য অর্জনের চেষ্টা চলছে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে রোববার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ব্রিটেনসহ মোট ১৮টি দেশ এক আন্তর্জাতিক সমঝোতা চূড়ান্ত করেছে। এর আওতায় কোম্পানিগুলোকে এআই প্রযুক্তির অপব্যবহার রুখতে শুরু থেকেই ‘সিকিউর বাই ডিজাইন’ বা সৃষ্টির স্তরেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হচ্ছে।

২০ পাতার এই সমঝোতা অবশ্য বাধ্যতামূলক নয়। তাতে বেশ কিছু সাধারণ সুপারিশ করা হয়েছে। এআই প্রণালীর অপব্যবহার রুখতে নজরজারি, তথ্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে সুরক্ষা, সফ্টওয়্যার সরবরাহকারীদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়ার মতো পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এই সমঝোতা বাধ্যতামূলক না হলেও এত দেশ মিলে যে তাতে সম্মতি দিয়েছে, সেই বার্তা প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর জন্য বাড়তি গুরুত্ব পাবে বলে ধরে নেয়া হচ্ছে।

মার্কিন সাইবার নিরাপত্তা ও অবকাঠামো নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের প্রধান জেন ইস্টারলি সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, এই প্রথম এত বড় আকারে ঐকমত্য সম্ভব হয়েছে। ফলে এআই প্রযুক্তিতে শুধু নতুন গুণাগুণ যোগ করা এবং যত দ্রুত সম্ভব সেসব সস্তায় বাজারে এনে প্রতিযোগিতায় টেক্কা দেয়া ছাড়াও এই নির্দেশিকায় নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। উপযুক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে তবেই এমন প্রযুক্তি বাজারে আনার সুপারিশ করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা এআই প্রযুক্তির নানা রকম অপব্যবহারের আশঙ্কা তুলে ধরছেন। তাদের মতে, হ্যাকারদের হাতে এমন প্রযুক্তি ব্যাপক গোলোযোগ সৃষ্টি করতে পারে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়ও গুরুতর বিঘ্ন ঘটানো সম্ভব। প্রতারণা, নাটকীয় মাত্রায় কর্মী ছাঁটাই ইত্যাদি ঝুঁকিও রয়েছে।

এআই প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ইউরোপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় কিছুটা এগিয়ে রয়েছে। মার্কিন কংগ্রেসে রাজনৈতিক বিবাদের কারণে অগ্রগতি হচ্ছে না। ইউরোপিয় ইউনিয়ন আইনের খসড়া প্রস্তুত করছে। সম্প্রতি জার্মানি, ফ্রান্স ও ইটালি এ সংক্রান্ত এক সমঝোতায় পৌঁছেছে। তবে এই তিন দেশও বাধ্যতামূলক আইনের বদলে আপাতত কোম্পানিগুলোর উদ্দেশে আত্মনিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানিয়েছে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে


আরো সংবাদ



premium cement