১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

গাজার স্কুলে ইসরাইলি হামলা, নিহত ২৭

- ছবি : বিবিসি

গাজায় জাতিসঙ্ঘের একটি স্কুলে বৃহস্পতিবার ইসরাইল বিমান হামলা করেছে, যাতে শত শত বাস্তুচ্যুত লোক আশ্রয় নিয়ে ছিল। স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, মধ্য গাজার দিকে অবস্থিত এই স্কুলে হামলায় কমপক্ষে ২৭ জন নিহত হয়েছে।

ইসরাইলি সেনাবাহিনী বলছে, তারা জাতিসঙ্ঘের যে স্কুলে হামলা করেছে সেটি ‘হামাসের কম্পাউন্ড’ হিসেবে গড়ে উঠেছিল।

স্থানীয় সাংবাদিকরা বলেন, একটা ইসরাইলি যুদ্ধবিমান থেকে নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে স্কুলটির ওপরের তলার শ্রেণিকক্ষে দু’টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়।

হামাসের মিডিয়া অফিস ইসরাইলের এ হামলাকে ‘বেপরোয়া হত্যাকাণ্ড’ বলে অভিযুক্ত করছে। অ্যাম্বুলেন্স এবং উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত ও আহতদের সরিয়ে পাশের হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করে।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে বিধ্বস্ত ক্লাসরুম ও মর্গের সামনে পড়ে থাকা লাশের সারি দেখা গেছে।

অপর একটি ভিডিওতে হামলায় আহত এক নারী চিৎকার করে বলেন, ‘অনেক যুদ্ধ হয়েছে, আমরা অসংখ্যবার উচ্ছেদ হয়েছি। আমার সন্তানেরা যখন ঘুমাচ্ছিল তখন তারা তাদের হত্যা করেছে।’

ইসরাইল যে দাবি করেছে, ওই স্কুলে হামাসের অবস্থান ছিল, সেটিকে নাকচ করে দিয়েছেন হামাস মিডিয়া অফিসের পরিচালক ইসমাইল-আল-থাওয়াবটা।

তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘দখলদাররা এসব মিথ্যাও বানানো গল্প ব্যবহার করে, তারা অসংখ্য উচ্ছেদ হওয়া লোকের সাথে যে নিষ্ঠুর অপরাধ করেছে সেটিকে সঠিক প্রমাণ করতে চায়।’

ইসরাইল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে বলেছে, তাদের যুদ্ধবিমান একটি ‘সুনির্দিষ্ট হামলা চালিয়েছে নুসেইরাত এলাকায় জাতিসঙ্ঘের একটি স্কুলের আড়ালে থাকা হামাস কম্পাউন্ডের ওপর।’

বিবৃতিতে বলা হয় যে তারা ওই সব হামাস ও ইসলামিক জিহাদের ‘সন্ত্রাসীদের’ মেরেছে যারা দক্ষিণ ইসরাইলে গত ৭ অক্টোবর হামলায় অংশ নিয়ে ১২০০ লোককে হত্যা করে ও ২৫০ জনকে বন্দী করে নিয়ে যায়।

হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে এরপর থেকে ইসরাইলের হামলায় গাজায় কমপক্ষে ৩৬ হাজার ৫৮০ জন মারা গিয়েছে।

আইডিএফ জানায় যে তারা বিমান হামলার আগে যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছিল।

তারা বলেছে, ‘যাতে নিরীহ বেসামরিক লোকদের ক্ষতি না হয়।’

এর আগে, ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানায়, তারা বুরেইজ শরণার্থী শিবিরের পূর্বাঞ্চল এবং গাজার কেন্দ্রস্থলে দেইর আল-বালাহ শহরের ওপরে ‘অপারেশনাল নিয়ন্ত্রণ’ নিয়েছে এবং সেখানে অসংখ্য ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।

সেখানকার অধিবাসীরা তীব্র বোমাবর্ষণের কথা জানিয়েছে এবং দাতব্য সংস্থা মেদেসিন্স সান্স ফ্রন্তিয়েরেস (এমএসএফ) বলেছে, মঙ্গলবার থেকে কমপক্ষে ৭০টি লাশ-যাদের বেশিভাগই নারী ও শিশু-একটি স্থানীয় হাসপাতালে আনা হয়েছে।

এমএসএফ বলেছে, তাদের চিকিৎসা দল গাজার কেন্দ্রস্থলে টিকে থাকা একমাত্র কার্যকরী স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা সম্বলিত দেইর আল-বালাহর আল-আকসা হাসপাতালের পরিস্থিতি ‘কল্পনাতীত’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement