১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ইসরাইলের নতুন শর্ত, অনিশ্চয়তায় গাজার যুদ্ধবিরতি

ইসরাইলের নতুন শর্ত, অনিশ্চয়তায় গাজার যুদ্ধবিরতি - ফাইল ছবি

ইসরাইলের নতুন শর্তের কারণে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময় চুক্তি অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে। ইসরাইলের যুদ্ধ মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা হামাসের বিরুদ্ধে আবার যুদ্ধ শুরু করার নিশ্চয়তা চাইবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস বার বার বলে আসছে, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ছাড়া কোনো চুক্তিতে তারা সই করবে না। এখন পণবন্দীদের মুক্তির পর ইসরাইল যদি হামলা করার অধিকার পায়, তবে হামাস কেন যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সই করবে?

ইসরাইলের কান পাবলিক ব্রডকাস্ট জানিয়েছে, ইসরাইলের যুদ্ধ মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে হামাস যদি যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে পণবন্দী চুক্তি লঙ্ঘন করে তবে হামাসের বিরুদ্ধে তারা যুদ্ধ অব্যাহত রাখার নিশ্চয়তা দাবি করবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে।

এই প্রেক্ষাপটে পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে এক ইসরাইলি কর্মকর্তা বলেছেন, এই ইসরাইলি সিদ্ধান্তের কারণে গাজায় আটক বন্দীদের মুক্ত করার চুক্তির সম্ভাবনা কমে যেতে পারে।

এদিকে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ পরিচালক উইলিয়াম বার্নস এবং হোয়াইট হাউসের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক নীতির প্রধান ব্রেট ম্যাকগার্ক মঙ্গলবার মধ্যপ্রাচ্য রওনা হয়েছেন। তারা দোহা ও কায়রোতে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করবেন।

উল্লেখ্য গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তাতে শুরুতে হামাস ইতিবাচকভাবে সাড়া দিলেও ইসরাইলের একের পর এক শর্ত চাপিয়ে দিচ্ছেন।

বাইডেনের ঘোষিত নতুন প্রস্তাবে তিনটি পর্যায় বা ধাপের কথা বলা হয়েছে।

প্রথম পর্যায়টি ছয় সপ্তাহ স্থায়ী হবে। এ সময় যেসব কাজ হবে তার মধ্যে থাকবে : পূর্ণ ও সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি; গাজার সকল জনবহুল এলাকা থেকে ইসরাইলি বাহিনীর প্রত্যাহার; নারী, বয়স্ক ও আহত পণবন্দীদের মুক্তি এবং ইসরাইলি কারাগার থেকে কয়েক শ' ফিলিস্তিনি বন্দীর মুক্তিলাভ। গাজায় আটক আমেরিকান বন্দীদেরও এ সময় মুক্তি দেয়া হবে।

এছাড়া নিহত কয়েকজন বন্দীর মৃতদেহও তাদের স্বজনদের কাছে ফেরত দেয়া হবে।
ফিলিস্তিনি বেসামরিক লোকজন গাজার সব এলাকায় তাদের বাড়িঘরে ফিরে যেতে পারবে। উত্তর গাজাতেও তারা ফিরে যেতে পারবে।
প্রতিটি দিনে ৬০০ ট্রাকভর্তি সাহায্য গাজায় প্রবেশ করবে।

যুদ্ধবিরতির ফলে সাহায্য নিরাপদে এবং কার্যকরভাবে অভাবিদের কাছে নিয়ে যাওয়া যাবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায কয়েক লাখ সাময়িক আশ্রয়, হাউজিং ইউনিটসহ প্রদান করবে।

এই ছয় সপ্তাহের বিরতির সময় ইসরাইল ও হামাস দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য আলোচনা করবে। আর তা বৈরিতা স্থায়ীভাবে বন্ধের ব্যবস্থা করবে। তবে আলোচকদের যদি ছয় সপ্তাহের বেশি সময় লাগে, তবে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি এই সময়ের পরও অব্যাহত থাকবে। সকল চুক্তি নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতার কাজ করে যাবে।

দ্বিতীয় পর্যায়ে অবশিষ্ট সকল জীবিত পণবন্দীকে মুক্তি দেয়া হবে। এদের মধ্যে ইসরাইলের পুরুষ সৈন্যরাও থাকবে। ইসরাইলি বাহিনী গাজা থেকে প্রত্যাহার করে নেবে। হামাস যত দিন তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করবে, তত দিন এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি বহাল থাকবে। ফলে এই চুক্তিই স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পরিণত হবে, বৈরিতার স্থায়ী অবসান হবে।

তৃতীয় পর্যায়ে গাজায় বড় ধরনের পুনর্গঠন হবে। এই পর্যায়ে পণবন্দীদের মধ্যে যারা মারা গেছে, তাদের কারো মৃতদেহ গাজায় থেকে থাকলে তা ফেরত দেয়া হবে।

সূত্র : টাইমস অব ইসরাইল, আল জাজিরা এবং অন্যান্য


আরো সংবাদ



premium cement