১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাজি হলে পদত্যাগের হুমকি ইসরাইলি মন্ত্রীদের

রাফাহতে যুদ্ধ চলছে, প্রাণভয়ে অনেকে শহরটি ছেড়ে যাচ্ছে - বিবিসি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব খোলাসা করেছেন তাতে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রাজি হলে ইসরাইলের দুই উগ্র ডানপন্থী মন্ত্রী ক্ষমতাসীন জোট ছাড়ার ও ভেঙে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন।

অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিস এবং জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির বলেছেন, হামাসকে ধ্বংস করার আগে যেকোনো চুক্তি ইসরাইলের স্বার্থ বিরোধী।

তবে পাল্টা অবস্থান ইসরাইলের বিরোধী জোটের। যুদ্ধবিরোধী এই পরিকল্পনাকে সমর্থন করলে বিরোধী নেতা ইয়ার ল্যাপিড ক্ষমতাসীন নেতানিয়াহু সরকারকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

এর আগে, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নিজেই জোর দিয়ে বলেছিলেন, হামাসের শাসন ও সামরিক ক্ষমতা ধ্বংস না করা এবং সব পণবন্দীকে মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত কোনো স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে যাবে না তারা।

বাইডেনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবটি ছয় সপ্তাহের বিরতির মাধ্যমে শুরু হবে। যেখানে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গাজার জনবহুল এলাকা থেকে প্রত্যাহার করবে। চুক্তি অনুযায়ী পরবর্তীতে সব বন্দীদের মুক্তি, স্থায়ী শত্রুতার অবসান এবং ব্যাপকভাবে গাজা পুনর্নির্মাণ পরিকল্পনা।

প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এই প্রস্তাবের পর শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অর্থমন্ত্রী স্মোট্রিস জানান, তিনি নেতানিয়াহুকে বলেছেন যে হামাসকে ধ্বংস করা এবং সমস্ত বন্দীকে ফিরিয়ে না এনে প্রস্তাবিত রূপরেখায় যদি নেতানিয়াহু রাজি হন তাহলে সরকারের এই প্রক্রিয়ার অংশ হবেন না তিনি।

প্রায় একই মনোভাব প্রকাশ করে বেন-গভির বলেন, এই চুক্তির অর্থ হলো যুদ্ধের সমাপ্তি এবং হামাসকে ধ্বংস করার লক্ষ্য থেকে সরে আসা। তিনি এই চুক্তিকে অপরিণামদর্শী আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এই চুক্তি মানে ‘সন্ত্রাসবাদের’ বিজয়, যা ইসরাইল রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।

তিনি এই প্রস্তাবে রাজি হওয়ার বদলে ‘সরকার ভেঙে দেয়ার’ কথা বলেন।

নেতানিয়াহুর ডানপন্থী জোট পার্লামেন্টে একটি ছোটখাটো সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আছে। বেন-গভিরের ওটজমা ইয়েহুডিত (ইহুদি শক্তি) পার্টির ছয়টি আসন রয়েছে। আর স্মোট্রিসের ধর্মীয় জায়োনিজম পার্টির রয়েছে মাত্র সাতটি আসন। তারা ক্ষমতায় থাকতে জোটবদ্ধ হিসেবে পার্লামেন্টে রয়েছে।

অপরদিকে, ইসরাইলের সবচেয়ে প্রভাবশালী বিরোধী রাজনীতিবিদদের একজন ইয়ার ল্যাপিড। এই সঙ্কটে তিনি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে তার সমর্থনের প্রস্তাব দিয়েছেন। তার দল ইয়েশ আতিদ ২৪টি আসন নিয়ে পার্লামেন্টে রয়েছে। রাজনীতিতে যাদের ভবিষ্যতও বেশ ভালো।

তিনি বলেন, ‘বেন-গভির এবং স্মোট্রিস সরকার ছেড়ে দিলে বন্দী চুক্তির জন্য নেতানিয়াহুর জন্য আমাদের সমর্থন আছে।’

বাইডেনের দেয়া প্রস্তাবে ইসরাইলি সরকারকে রাজি হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তেল আবিবে কয়েক হাজার মানুষ সমাবেশ করে। তারা এসময় নেতানিয়াহুর পদত্যাগও দাবি করেছে। এসময় বিক্ষোভকারী এবং পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তখন কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটকও করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

শনিবার এক যৌথ বিবৃতি মিসর, কাতার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থ্যতাকারীরা ইসরাইল ও হামাস উভয়কেই বাইডেনের দেয়া যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব চূড়ান্ত করার আহ্বান জানিয়েছে।

তারা বলছেন, গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি এবং পণবন্দী, বন্দীদের মুক্তির জন্য চলমান আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তারা জো বাইডেনের রূপরেখার মূল বিষয়গুলোকে চূড়ান্ত করতে হামাস এবং ইসরাইল উভয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকও এই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবনার প্রতি তার সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘হামাস যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা গ্রহণ করলে তার সরকার গাজায় বিপুল পরিমাণ সহয়তা পাঠাতে পারবে।’

এর আগে, হামাসের একজন শীর্ষ রাজনীতিবিদ বলেছিলেন, ইসরায়েল যদি রাজি থাকে তাহলে তারা এই চুক্তিতে যাবে।

তবে শনিবার এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহুর কার্যালয় বলেছে, যুদ্ধ শেষ করতে ইসরাইল যে নীতি গ্রহণ করেছিল তাতে কোনো পরিবর্তন আসেনি।

হামাসের সামরিক ও শাসন ক্ষমতার ধ্বংস, সমস্ত পণবন্দীদের মুক্ত করা এবং গাজা যাতে আর তাদের জন্য হুমকি না হয় তা নিশ্চিত করতেই যুদ্ধনীতি গ্রহণ করেছিল ইসরাইল।

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী অফিসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার আগে ইসরাইল এই শর্ত পূরণের জন্য জোর দিতে থাকবে।

অন্যদিকে মিসর সীমান্তে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরে রাফাহতে শনিবারও ইসরাইলি বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে।

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের উত্তরে গাজা শহরেও গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে।

হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, সঙ্ঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় ৩৬ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরাইলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে এক হাজার ২০০ ইসরাইলিকে হত্যা এবং প্রায় ২৫২ জনকে পনবন্দী করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।
সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement
শেখ হাসিনা চেয়েছিলেন একক কর্তৃত্ব কায়েম করতে : গোলাম পরওয়ার আমেরিকা বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের নতুন প্রেসিডেন্ট রচি, সম্পাদক মশিউর সাভারে ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নে ট্যানারীতে শ্রমিক সমাবেশ ভারতে উপাসনাস্থল নিয়ে আপাতত নতুন মামলা করা যাবে না সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারকে যে বার্তা দিলো পশ্চিমতীরের ইসলামী আন্দোলন প্রধান বিএনপি শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচন চায় না : ড. মঈন খান রাজশাহীতে আরো ২ মামলায় গ্রেফতার সাবেক এমপি আসাদ স্কুলে ভর্তির লটারির ফল জানা যাবে যেভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যারা কথা বলবে তাদের রুখে দিতে হবে : জাহিদ হোসেন পতিত স্বৈরশাসকের জন্য ভারত মায়াকান্না করছে ‘অপশক্তিকে রুখে দিয়ে দেশকে বাঁচাতে হবে’

সকল