১৭ জুন ২০২৪
`

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার ৩ দেশের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার ৩ দেশের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় - ছবি : ইউএনবি

নরওয়ে, আয়ারল্যান্ড ও স্পেন বুধবার ফিলিস্তিনকে একটি রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিয়েছে। ইসরাইলের সামরিক অভিযানের পর গাজায় মানবিক সঙ্কট নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষোভের মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশ তিনটি।

দেশগুলোর স্বীকৃতির বিষয়ে বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়া ছিল ভিন্ন ভিন্ন। বেশ কয়েকটি দেশ এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।

আরব লীগের মহাসচিব আহমেদ আবুল-ঘেইত বলেছেন, এই স্বীকৃতি ফিলিস্তিনিদের কাছে একটি বার্তা দেয় যে, বিশ্ব তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার রক্ষা করতে এবং একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী।

একটি বিবৃতিতে মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পদক্ষেপ নেয়নি এমন দেশগুলোকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। যা ফিলিস্তিনিদের ন্যায়বিচারের মূল্যবোধ সমুন্নত রাখবে এবং ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য অধিকারকে সমর্থন করবে।

বুধবার জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে যে এটি দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নের দিকে একটি পদক্ষেপের প্রতিনিধিত্ব করে।

বুধবার কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কাতার এই স্বীকৃতিকে স্বাগত জানায় এবং এটিকে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান সমর্থন এবং এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করে।

মন্ত্রণালয় জোর দিয়ে বলেছে,‘গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ এবং এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা অর্জনের একমাত্র নিশ্চয়তা হিসেবে রাজনৈতিক পথে ফিরে আসার প্রয়োজন।’

স্পেন ও আয়ারল্যান্ড ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে এমন খবরের প্রতিক্রিয়ায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, চীন সবসময় ফিলিস্তিনি জনগণের বৈধ জাতীয় অধিকার পুনরুদ্ধারের ন্যায়সঙ্গত দাবিকে সমর্থন করে, দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে সমর্থন করে। প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়া প্রথম দেশগুলোর মধ্যে একটি চীন।

মুখপাত্র আরো বলেন, চীন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফিলিস্তিন-ইসরাইল বিরোধের অবসান ঘটাতে এবং ফিলিস্তিনি সঙ্কটের একটি ব্যাপক, ন্যায়সঙ্গত ও দীর্ঘস্থায়ী মীমাংসার লক্ষ্যে একটি গঠনমূলক ভূমিকা পালনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে কাজ চালিয়ে যাবে।

ইউরোপের মাল্টা, স্লোভেনিয়া ও স্লোভাকিয়া স্বীকৃতি দিয়েছে। এছাড়া স্লোভেনিয়াও প্যালেস্টাইনকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে। চেক প্রজাতন্ত্র, নেদারল্যান্ডস ও লিথুয়ানিয়া এই ইস্যুতে এখনো কিছু জানায়নি।

এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ইসরাইল এটিকে হামাস যোদ্ধাদের জন্য একটি পুরস্কার বলে কটাক্ষ করেছে।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেছেন,‘ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের সিদ্ধান্ত সন্ত্রাসবাদের জন্য একটি পুরস্কার।’

ইসরাইল তাৎক্ষণিকভাবে আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও স্পেন থেকে তার রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করেছে।

এদিকে মার্কিন সরকার ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য আয়ারল্যান্ড, স্পেন ও নরওয়ের পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন। জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের একজন মুখপাত্র সিএনএনকে উদ্ধৃত করে বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের একজন শক্তিশালী সমর্থক এবং তার কর্মজীবন জুড়েই ছিলেন।’

মুখপাত্র আরো বলেন,‘তিনি বিশ্বাস করেন, একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে একতরফা স্বীকৃতির মাধ্যমে নয়, পক্ষগুলোর মধ্যে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে বাস্তবায়িত করা উচিত।’

পর্যবেক্ষকরা উল্লেখ করেছেন, তিনটি দেশের স্বীকৃতি অন্যান্য দেশের জন্য একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য গতি তৈরি করতে পারে। একই সাথে এই পদক্ষেপগুলো ইসরাইলকে আরো বিচ্ছিন্ন করতে পারে। গত মার্চে, স্পেন ও আয়ারল্যান্ডের পাশাপাশি মাল্টা ও স্লোভেনিয়া বলেছিল যে, তারা একটি দ্বন্দ্বের অবসানের লক্ষ্যে‘একটি ইতিবাচক অবদান’ হিসেবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার কথা বিবেচনা করছে।

১৪০টিরও বেশি দেশ ইতোমধ্যে রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। যা সংখ্যায় জাতিসঙ্ঘের সদস্যদের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি প্রতিনিধিত্ব করে। প্রধান পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে কোনোটিই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার পদক্ষেপ নেয়নি, যদিও ফিলিস্তিনিদের জন্য স্বীকৃতির একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন করেছে।

একদিকে ইসরাইলের ওপর কূটনৈতিক চাপ বাড়ছে। অন্যদিকে জাতিসঙ্ঘের সদস্যপদ প্রাপ্তিতে ফিলিস্তিনের প্রতি ক্রমেই আন্তর্জাতিক সমর্থন বাড়ছে। গত ১১ মে জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদ একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়, যেখানে ফিলিস্তিনকে যোগদানের যোগ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এই প্রস্তাবের পক্ষে ১৪৩টি ভোট এবং বিপক্ষে পড়ে মাত্র ৯টি ভোট। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলসহ, অন্য ২৫টি দেশ ভোট প্রদান করা থেকে বিরত থাকে।

ফিলিস্তিনিরা ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমান্ত মেনে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ইসরাইলের পাশাপাশি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছে।

সূত্র : সিনহুয়া/ইউএনবি


আরো সংবাদ



premium cement
ইসরাইলি হামলায় গাজায় নিহত বেড়ে ৩৭,৩৩৭ নেপালের বিপক্ষে সুযোগ পাবেন কি শরিফুল-শেখ মেহেদী বাংলাদেশ-নেপাল : মুখোমুখি দেখায় কারা এগিয়ে ফ্রিজে গরুর গোশত রাখার অভিযোগে গুড়িয়ে দেয়া হলো ১১টি বাড়ি, জব্দ দেড় শতাধিক গরু মুন্সীগঞ্জে পানিতে ডুবে ২ বছরের শিশুর মৃত্যু খালেদা জিয়ার সাথে কর্নেল অলির সাক্ষাৎ দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানালেন রাষ্ট্রপতি ঈদের নামাজের জন্য প্রস্তুত দিনাজপুরের গোর-এ-শহীদ ঈদগা মাঠ, চলবে বিশেষ দুটি ট্রেন ঈদের দিন ঢাকাসহ চার বিভাগে বৃষ্টিপাতের আভাস প্রবাসী আয়ে করের বোঝা, যে সংকট তৈরি হতে পারে সেন্ট মার্টিন-সংলগ্ন বাংলাদেশ-মিয়ানমার পরিস্থিতি : যা বলল আইএসপিআর

সকল