১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ব্লিংকেনের রিয়াদ সফরে সৌদি-ইসরাইল স্বাভাবিকীকরণের সম্ভাবনা!

ব্লিংকেনের রিয়াদ সফরে সৌদি-ইসরাইল স্বাভাবিকীকরণের সম্ভাবনা! - ছবি : সংগৃহীত

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টেট অ্যান্টনি ব্লিংকেন গাজায় সর্বশেষ কূটনৈতিক পদক্ষেপ হিসেবে সৌদি আরবের জন্য মেরিল্যান্ডে জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রুস ত্যাগ করার সময় একটি গাড়ি থেকে বের হচ্ছেন

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন গাজায় মানবিক সহায়তা, ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলোর জন্য যুদ্ধ-পরবর্তী রোডম্যাপ এবং মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিয়ে সোমবার ও মঙ্গলবার আঞ্চলিক আলোচনার জন্য রিয়াদে যাচ্ছেন।

স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, 'সেক্রেটারি ব্লিংকেন গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি অর্জনের চলমান প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করবেন যা পণবন্দীদের মুক্তি নিশ্চিত করবে। তার আলোচনায় বলা হবে, কীভাবে হামাসই ফিলিস্তিনি জনগণ এবং যুদ্ধবিরতির মধ্যে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে'।

ব্লিংকেন সৌদি আরবের রাজধানীতে আয়োজিত পারস্য উপসাগরের সীমান্তবর্তী আরব দেশগুলির একটি আঞ্চলিক জোট, উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেবেন।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কার্বি রোববার এবিসির 'দিস উইক' অনুষ্ঠানে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইল এবং হামাস বিদ্রোহীদের মধ্যে গাজায় প্রায় সাত মাসব্যাপী যুদ্ধটিতে ছয় সপ্তাহের একটি যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ অব্যাহত রেখেছে।

যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা কয়েক মাস ধরে চলছে, এবং একটি চুক্তি হতে পারে বলে পর্যায়ক্রমিক সংকেত থাকা সত্ত্বেও, কার্বি আলোচনায় নতুন অগ্রগতির কোনো ইঙ্গিত দেননি।

তিনি বলেন, ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের আশ্বস্ত করেছে যে তারা যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের কথা পুরোপুরি না শুনে গাজার দক্ষিণআঞ্চলের রাফাহ শহরে স্থল সেনা পাঠাবে না। এই ধরনের হামলা সেখানে আশ্রয় নেয়া ১০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনিদের জীবনকে বিপন্ন করবে।

গাজার যুদ্ধ-পরবর্তী রোডম্যাপ

দৈনিক মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি এবং ইসরাইল মানবিক সহায়তা বিতরণের জন্য উত্তাঞ্চলের একটি ক্রসিং এবং আশদোদ বন্দর ব্যবহার করা শুরু করা সত্ত্বেও গাজায় মানবিক সঙ্কট ভয়াবহ পর্যায়ে রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র একটি সামুদ্রিক মানবিক করিডোর প্রতিষ্ঠার জন্য অংশীদারদের সাথে সহযোগিতা করছে। কিন্তু, এই প্রচেষ্টাগুলি অপর্যাপ্ত কারণ গাজার সমগ্র জনগোষ্ঠী দুর্ভিক্ষ এবং অপুষ্টির ঝুঁকির সম্মুখীন।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেন, ওয়াশিংটন ইসরাইলের পাশাপাশি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাস্তব পদক্ষেপসহ ইসরাইলি এবং ফিলিস্তিনি উভয় জনগণের জন্য স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তার অগ্রগতির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ওয়াশিংটন এটাও স্পষ্ট করেছে যে হামাসের এ ধরনের শাসনব্যবস্থায় কোনো ভূমিকা রাখা উচিত নয়।

বিশ্লেষকরা অবশ্য বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই দৃষ্টিভঙ্গিতে অনেক বাধা রয়েছে।

সৌদি-ইসরাইল স্বাভাবিকীকরণের সম্ভাবনা

বাইডেন প্রশাসন একটি সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে যা ইসরাইলের সাথে সম্পর্ককে স্বাভাবিক করতে পারে, যদিও কিছু কর্মকর্তা এবং বিশ্লেষকরা এর সম্ভাবনা খুব কম বলে বিবেচনা করছেন।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান এবং গাজা নিয়ন্ত্রণে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ফিরে আসা প্রত্যাখ্যান করেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই দাবিগুলো ব্যাপকভাবে সমর্থন করে।

সৌদিরা দাবি করেছে, এর পূর্বশর্ত হিসেবে তারা দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানে ইসরাইলের প্রতিশ্রুতি দেখতে চান।

যুক্তরাষ্ট্রের আইডিএফ ইউনিটের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ পর্যালোচনা

মধ্যপ্রাচ্যে ব্লিংকেনের পূর্বনির্ধারিত বৈঠকগুলো এমন সময়ে পড়েছে যখন যুক্তরাষ্ট্র কিছু ইসরাইলি সামরিক ইউনিটকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে কিনা তা নির্ধারণ করতে ইসরাইলি সরকারের কাছ থেকে পাওয়া নতুন তথ্য মূল্যায়ন করছে।

এই ইউনিটগুলো ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার আগে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত।

সমালোচকরা বলছেন, সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের 'ধীরগতি' দেখিয়ে দিচ্ছে যে ইসরাইলকে আলাদাভাবে বিবেচনা করা হয়।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা


আরো সংবাদ



premium cement