০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯ ধারা সংশোধন চেয়ে আইনি নোটিশ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯ ধারা সংশোধন চেয়ে আইনি নোটিশ - ছবি : সংগৃহীত

সদ্য পাশ হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা সংশোধন চেয়ে সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের এক আইনজীবী।

আগামী ৩০ দিনের মধ্যে ধারাগুলো সংশোধনের উদ্যোগ না নিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মঙ্গলবার সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী এস এম জুলফিকার আলী জুনু রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠান। তথ্যমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, মন্ত্রী পরিষদ সচিব, তথ্য সচিব, আইন সচিবদের নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়েছে, সম্প্রতি তথ্য প্রযুক্তি আইনের আলোচিত কয়েকটি ধারা বিলুপ্ত করে ডিজিটাল নিরাপত্তার আইনের অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। নতুন এই আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩১, ৪৩ ও ৫৩ ধারাগুলো গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং বাক স্বাধীনতা সুরক্ষা অন্তরায় বলে সাংবাদিক নেতারা বিভিন্ন সমাবেশ, মানববন্ধন ও সেমিনারে দাবি করেছেন।

এসব সভা সমাবেশ থেকে এই ধারাগুলো বাতিল ও সংশোধনের প্রস্তাত দাবি করেছে তারা। একই সঙ্গে এই ধারাগুলো সংবাদ কর্মীদের স্বাধীনভাবে সংবাদ পরিবেশনে এবং প্রকাশে অন্তরায় হবে বলেও বিশিষ্ট সম্পাদকেরা অভিমত প্রকাশ করেছেন।

এ অবস্থায় আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এ ধারাগুলো বাতিল করে সংশোধন না করলে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে বলেও তিনি জানান।

উল্লেখ্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাশ হওয়ার পর থেকেই এ আইনকে স্বাধীন সাংবাদিকতায় হাতকড়া উল্লেখ করে আইনটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনের দাবি সম্পাদক পরিষদের 

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিরোধী ৯টি ধারা সংশোধনের দাবিতে মানববন্ধন করেছে সম্পাদক পরিষদ। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। 

মানববন্ধনে সম্পাদক পরিষদের পক্ষ থেকে দাবিগুলো তুলে ধরেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম। তিনি বলেন, কয়েকজন মন্ত্রী বলেছেন আলোচনার দরজা এখনো বন্ধ হয়নি। আমরাও মনে করি আলোচনার দরজা বন্ধ হয়নি। কিন্তু আলোচনার নামে প্রহসন যেন না হয়। এর আগেও আলোচনায় গিয়েছি, আমরা অত্যন্ত বিশ্বাস নিয়ে গিয়েছি। কিন্তু সেই বিশ্বাসের প্রতিফলন এখনো দেখিনি। আলোচনার দরজা খোলা শুনে আমরা খুশি। আমরা আলোচনা করতে চাই, তবে গ্রহণযোগ্য আলোচনা চাই, যে আলোচনা গ্রহণযোগ্য সমাধানের দিকে নিয়ে যাবে। শুধু আলোচনার জন্য আলোচনা নয়। 

মানববন্ধনে সম্পাদক পরিষদের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হওয়ার আগে থেকেই এ আইনের বিভিন্ন ধারা নিয়ে আমরা প্রতিবাদ করে আসছিলাম। আমরা মনে করি, আইনটি স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মুক্ত গণমাধ্যমের পরিপন্থী। এটি শুধু সাইবার জগৎ নয়, স্বাধীন গণমাধ্যমেরও কণ্ঠরোধ করবে। এতে আরো বলা হয়, আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরোধী নই। কেবল আইনের বিশেষ কতগুলো ধারা সংশোধনের দাবি করছি। আগামী সংসদ অধিবেশনেই এই আইন সংশোধনের মাধ্যমে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও স্বাধীন সাংবাদিকতা নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।

মানববন্ধনে সাত দফা দাবি তুলে ধরেন মাহফুজ আনাম। দাবিগুলো হলো- ১. সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতা সুরক্ষার লক্ষ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারা অবশ্যই যথাযথভাবে সংশোধন করতে হবে; ২. এসব সংশোধনী বর্তমান সংসদের (আসন্ন) শেষ অধিবেশনেই আনতে হবে; ৩. পুলিশ বা অন্য কোনো সংস্থার মাধ্যমে কোনো সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালানোর ক্ষেত্রে তাদের শুধু নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু আটকে দেয়ার অনুমতি দেয়া যেতে পারে, তবে কোনো কম্পিউটার ব্যবস্থা বন্ধ করার অনুমতি দেয়া যাবে না। তারা শুধু তখনই প্রকাশের বিষয়বস্তু আটকাতে পারবে, যখন সংশ্লিষ্ট সংবাদ প্রতিষ্ঠানের সাথে আলোচনা করে কেন ওই বিষয়বস্তু আটকে দেয়া উচিত, সেই বিষয়ে যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে পারবে;

৪. কোনো সংবাদমাধ্যমের কোনো কম্পিউটার ব্যবস্থা আটকে দেয়া বা জব্দ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আদালতের আগাম নির্দেশ নিতে হবে; ৫. সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবীদের সাংবাদিকতা দায়িত্বের সাথে সংশ্লিষ্ট অপরাধের ক্ষেত্রে প্রথমেই আদালতে হাজির হওয়ার জন্য তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করতে হবে এবং সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবীদের কোনো অবস্থাতেই পরোয়ানা ছাড়া ও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ ছাড়া আটক বা গ্রেফতার করা যাবে না; ৬. সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবীর দ্বারা সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধেও মামলা দায়েরের গ্রহণযোগ্যতা আছে কি না, তার প্রাথমিক তদন্ত করতে হবে প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে। ওই লক্ষ্যে প্রেস কাউন্সিলকে যথাযথভাবে শক্তিশালী করা যেতে পারে; এবং

৭. এই সরকারেরই পাস করা তথ্য অধিকার আইনকে দ্ব্যর্থহীনভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ওপর প্রাধান্য দেয়া উচিত এবং ওই আইনে নাগরিক ও সংবাদমাধ্যমের জন্য যেসব স্বাধীনতা ও অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে, সেগুলোর সুরক্ষা অত্যাবশ্যকভাবে করতে হবে।

মাহফুজ আনাম বলেন, আমরা আশা করব, আমাদের এই দাবি সরকার গ্রহণ করবে এবং সংসদের শেষ অধিবেশনে যথাযথ সংশোধনী এনে এই আইনটি সবার জন্য গ্রহণযোগ্য করবে। 

মানববন্ধনে সম্পাদকদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, মানবজমিন প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, নিউ এজ সম্পাদক নুরুল কবির, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মনিরুজ্জামান, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, করতোয়ার সম্পাদক মো: মোজাম্মেল হক, ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শহীদুজ্জামান খান, ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক জাফর সোবহান, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ইন্ডিপেনডেন্টের সম্পাদক এম শামসুর রহমান প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement
নিপীড়িতরাই বিজয়ী হ‌বে : রিজভী ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থীদের ওপর ইসরাইলি সমর্থকদের হামলা অবিলম্বে ১০ম ওয়েজবোর্ড গঠন করুন : বিএফইউজে ও ডিইউজে নেতারা হজ ব্যবস্থাপনায় অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে : ধর্মমন্ত্রী ই-মেইলে বোমার হুমকি : বন্ধ দেয়া হলো দিল্লির ১০০ স্কুল হাসপাতালের পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া নির্বাচনের প্রস্তুতি ও প্রচারণা দেখতে আ'লীগকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বিজেপি হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হলেন খালেদা জিয়া বৃহস্পতিবার স্কুল-কলেজ খোলা না বন্ধ, সিদ্ধান্ত জানায়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে আকস্মিক বন্যার সতর্কতা জারি সকল দল-মতের মানুষকে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের

সকল