পুষ্টিহীনতা ও দারিদ্র্যে শিশুর সঠিক বিকাশ হয় না
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০৫
বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশে পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের সঠিক বিকাশ হয় না পুষ্টিহীনতা ও দারিদ্র্যের কারণে। এই শিশুদের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি, প্রাথমিক শৈশব উদ্দীপনা কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ বলে সুপারিশ করেছেন গবেষকরা। গতকাল বৃহস্পতিবার মহাখালীর আইসিডিডিআরবিতে সংশ্লিষ্টরা দীর্ঘ গবেষণার পর এসব তথ্য উপস্থাপন করেন।
গবেষকরা বলেন, একজন মা গর্ভবতী হওয়ার সাথে সাথেই শিশু বিকাশের ভিত্তি গঠিত এবং এটি শিশুর তিন বছর বয়স পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এটি প্রাথমিক শৈশব বিকাশের জন্য ‘সুবর্ণ সুযোগ’ হিসেবে পরিচিত। এই সময়ে শিশুর শেখার অভিজ্ঞতা তার বুদ্ধিমত্তা, আচরণ এবং ব্যক্তিত্বের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। ফলে, শিশুদের সামগ্রিক বিকাশের জন্য তাদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি, সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি, ভালোবাসা, খেলা এবং বেড়ে ওঠার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছেন গবেষকরা।
শিশুর বিকাশকে উন্নত করতে, পরিবারের সবার সাথে বাবার সক্রিয় ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর প্রয়োজনের প্রতি মনোযোগী হওয়া, ভাষা শেখার দক্ষতা বাড়ানোর জন্য কথোপকথনে যুক্ত হওয়া এবং খেলার মাধ্যমে শেখার জন্য বয়স উপযোগী খেলনা প্রদান করা। এমন যৌথ প্রচেষ্টা শিশুর বৃদ্ধি এবং সুস্থতা নিশ্চিত করতে পারে।
আইসিডিডিআরবির এমেরিটাস বিজ্ঞানী ড. জেনা দেরাখশানি হামাদানি এ সম্পর্কিত একটি উপস্থাপনা প্রদান করেন। গবেষণা অনুযায়ী খেলাধুলা ভিত্তিক শিশু লালন-পালন কর্মসূচি শিশুদের জ্ঞানগত, ভাষাগত, শারীরিক এবং আচরণগত বিকাশকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করে।
ড. হামাদানি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ সরকার আইসিডিডিআরবির সাথে অংশীদারিত্বে, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার অধীনে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রাথমিক শৈশব বিকাশ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে যাতে শিশুদের জ্ঞান ও দক্ষতা বাড়ানো যায়। এই কর্মসূচিটি বর্তমানে নরসিংদী, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর জেলার ২১টি উপজেলার ৬১৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকে বাস্তবায়িত হচ্ছে। ৪৮৫ জন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রাথমিক শৈশব বিকাশ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, যারা পরে এক হাজার ৮২১ জন সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মীদের এই সেবা প্রদানে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। এই কর্মসূচির আওতায় ৬-৩৬ মাস বয়সী শিশুর ১৪ হাজার মা অথবা মায়ের পরিবর্তে পরিবারের অন্যান্য যতœদাতারা প্রশিক্ষিত হয়েছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা: সামন্ত লাল সেন, বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা: রোকেয়া সুলতানা এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা: আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ তার স্বাগত বক্তব্যে প্রদান করেন। আইসিডিডিআরবির সিনিয়র ডিরেক্টর ড. শামস এল আরেফিন সমাপনী বক্তব্য দেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা