সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীত হচ্ছে

এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি)-এর অর্থায়নে ‘সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক পৃথক এসএমভিটি লেনসহ ৪-লেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পের দুটি পৃথক প্যাকেজের পূর্তকাজের ঠিকাদার নিয়োগসহ ছয়টি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এ ছাড়া পদ্মা সেতুর ব্যয় আরো ২৫০ কোটি টাকা বাড়ানোর প্রস্তাবও অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এগুলোতে মোট ব্যয় হবে ২ হাজার ৯০৩ কোটি ৫৬ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। গতকাল শনিবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ক্রয় কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো: মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে দুটি পৃথক প্রস্তাবে এআইআইবি-এর অর্থায়নে ‘সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক পৃথক এসএমভিটি লেনসহ ৪-লেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পের দুটি পৃথক প্যাকেজের (প্যাকেজ নং ডব্লিউপি-০১ ও ডব্লিউপি-০৩) পূর্তকাজের ঠিকাদার নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। দুটি প্যাকেজের কাজই পেয়েছে চায়না ন্যাশনাল কেমিক্যাল কমিউনিকেশন্স কনস্ট্রাকশন গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড। এর মধ্যে প্যাকেজ নং ডব্লিউপি-০১-এর পূর্তকাজ সম্পাদনে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৬০ কোটি ৭১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। আর প্যাকেজ নং ডব্লিউপি-০৩-এর পূর্তকাজ সম্পাদনে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩৮৬ কোটি ১২ লাখ ২ হাজার টাকা।
তিনি জানান, বৈঠকে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের নদী শাসন কাজে সময়সীমা বেড়ে যাওয়ায় নিয়োগকৃত চীনা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের দাবিজনিত কারণে ব্যয় বাড়ার একটি ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, এটি নদী শাসন কাজের দ্বিতীয় ভেরিয়েশন প্রস্তাব। ভেরিয়েশন প্রস্তাবে ব্যয় বাড়ছে ২৪৯ কোটি ৪২ লাখ ৫২ হাজার টাকা। শতকরা হিসাবে ব্যয় বাড়ছে মূল চুক্তি মূল্যের ১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
সমন্বয় ও সংস্কার সচিব জানান, নদী শাসন কাজের মূল চুক্তিমূল্য ছিল ৮ হাজার ৭০৭ কোটি ৮১ লাখ ৪১ হাজার টাকা। ব্যয় বাড়ার পর সংশোধিত চুক্তিমূল্য দাঁড়াচ্ছে ৯ হাজার ৮৩৪ কোটি ৭৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। নদী শাসনের কাজটি করছে চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন।
তিনি জানান, বৈঠকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত (জাতীয়) দরপত্রের মাধ্যমে দুটি পৃথক প্রস্তাবে ২ কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল এবং ১ কোটি ১০ লাখ লিটার রাইস ব্রান তেল ক্রয়ের দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রাইস ব্রান তেল ক্রয়ে দ্বিতীয় দফা দরপত্র আহ্বান করা হয়।
সমন্বয় ও সংস্কার সচিব জানান, প্রতি লিটার ১৫০ টাকা ৪৮ পয়সা দরে সিটি এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকে ২ কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ে ব্যয় হবে ৩৩১ কোটি ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এর আগে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৫০ টাকা ৯০ পয়সা দরে কেনা হয়েছিল। আর প্রতি লিটার ১৪৭ টাকা ৩৫ পয়সা দরে মজুমদার প্রোডাক্ট লিমিটেড থেকে এবং ১ কোটি ১০ লাখ লিটার রাইস ব্রান তেল ক্রয়ে ব্যয় হবে ১৬২ কোটি ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এর আগে প্রতি লিটার রাইস ব্রান তেল ১৫১ টাকা ২৫ পয়সা দরে কেনা হয়েছিল। তিনি জানান, এ ছাড়া বৈঠকে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআইসি)-এর জন্য রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)-এর ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড থেকে নবম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন সার ৩২২.৫০ ডলার হিসাবে এতে মোট ব্যয় হবে বাংলাদেশী মুদ্রায় ১১৪ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এর আগে প্রতি মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ২৭১.৫০ ডলার দরে কেনা হয়েছিল।