১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

বাগাতিপাড়ায় প্রতিদিন সোয়া কোটি টাকার আম বিক্রি

বাগাতিপাড়ায় একটি আমের আড়ত : নয়া দিগন্ত -

নাটোরের বাগাতিপাড়া থেকে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার আম ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থনে যায়। এ জন্য উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে আমের আড়ত। এর মধ্যে জেলার সব চেয়ে বড় আমের আড়ত উপজেলার তমালতলায়। এসব আড়তে সারাদিন চলে আম বেচাকেনা। প্রতিদিন প্রায় সোয়া কোটি টাকার আম বেচাকেনা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তমালতলা ছাড়াও উপজেলার বাজিতপুর, বাঁশবাড়িয়া, কৈপুকুরিয়া, পাকা, আজগর মোড়, গালিমপুর, জিগরী, মালঞ্চি, জামনগরসহ আরো কয়েকটি বাজারে দুই-তিনটি করে আমের আড়ত গড়ে উঠেছে। এসব আড়তে দুপুর থেকে আম আসা শুরু করে। বেচাকেনা শেষে প্যাকেজিং করে সন্ধ্যায় গাড়িতে সাজানো হয়। রাতে সেই গাড়িগুলো যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে। এ ছাড়া অনলাইন ও বাগান থেকে সরাসরি ব্যবসায়ীরা আম কিনে নিয়ে যান।
স্থানীয় কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় লক্ষ্মণভোগ, আম্রপালি, গোপালভোগ, হাঁড়িভাঙা, আশ্বিনা, হিমসাগর, দুধসর, ফজলি, বারী-৪ ও তোতাপুরীসহ বিভিন্ন জাতের আমের চাষ হয়। অনেক আগে থেকেই আম এ অঞ্চলের অর্থকরী ফসল হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ হাজার ৩১০ মেট্রিক টন। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০০ টন কম উৎপাদন হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর আমের দাম তিনগুণ বেশি রয়েছে। ফলে কৃষকরা লাভবান হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
কয়েকজন আড়তদারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারি আম ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন বাগাতিপাড়ার আড়তগুলো থেকে আম কেনেন। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, যশোর ও বরিশালসহ দেশের যেসব অঞ্চলে আমের চাহিদা রয়েছে সেই এলাকায় এই আম পাঠান তারা। এখন চলছে পুরোদমে আম বেচাকেনা। সব মিলিয়ে উপজেলা থেকে প্রায় সোয়া কোটি টাকার আম প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যাচ্ছে। আর এই ব্যবসাকে ঘিরে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রায় কয়েক হাজার লোকের কর্মসংস্থানও হয়েছে।
তমালতলার আজমত হোসেনের আড়তে আম বিক্রি করতে আসা শফিকুল ইসলাম বলেন, লক্ষ্মণভোগ জাতের ১৫ মণ এবং আম্রপালি জাতের ১২ মণ আম বিক্রি করতে এসেছিলেন। লক্ষ্মণভোগ এক হাজার ৫০০ টাকা এবং আম্রপালি দুই হাজার ৭০০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন।
তমালতলা আমের আড়তদার ঊষা ফল ভাণ্ডারের মালিক উজ্জ্বল হোসেন বলেন, এ বছর আমের দাম ভালো। প্রতিদিন তার আড়তে প্রায় চার লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকার আম বেচাকেনা হয়। এখন বিক্রি হওয়া প্রতি মণ লক্ষ্মণভোগ আম এক হাজার ৫০০ টাকা থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা, হিমসাগর তিন হাজার ৬০০ থেকে চার হাজার টাকা, আম্রপালি দুই হাজার ৬০০ টাকা থেকে দুই হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তমালতলা আমের আড়তদার সমিতির সভাপতি মোশাররফ হোসেন বলেন, বেশ কয়েক বছর পরে এই বছর আমের দাম ভালো যাচ্ছে। চাহিদাও ভালো রয়েছে, বিক্রিতে কোনো বিড়ম্বনা হচ্ছে না। শুধু তমালতলায় এই বছর ২২টি আমের আড়ত রয়েছে। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় বেশ কিছু আমের আড়ত গড়ে উঠেছে। আর প্রতিটি আড়তেই এখন পুরোদমে আম বেচাকেনা চলছে।
বরিশাল থেকে আম কিনতে আসা পাইকারি ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম বলেন, তমালতলা আমের আড়তগুলো থেকে এক দিন পরপর প্রায় ১০০ মণ বিভিন্ন জাতের আম কিনে বরিশাল পাঠান তিনি। তার মতো এরকম আরো অনেক আম ব্যবসায়ী এই উপজেলা থেকে আম কিনে থাকেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ভবসিন্ধু রায় বলেন, উপজেলায় এক হাজার ২১০ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। চলতি মৌসুমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে আমের উৎপাদন কিছুটা কম হলেও ১৩ হাজার ৩১০ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হবে বলে তিনি আশাবাদী। তবে এ বছর আমের দাম ভালো পাচ্ছেন কৃষকরা। ফলে উপজেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ৮০ কোটি টাকার আম বিক্রি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement
ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচারে ৫৩ নাগরিকের উদ্বেগ ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে দুর্নীতি কে প্রশয় দেয়া হবে না : জাতীয় নাগরিক কমিটি ফতুল্লা থেকে অপহৃত ২ শিশু বরিশাল থেকে উদ্ধার মহানবী সা:-কে নিয়ে কটূক্তি করা শিক্ষককে চাকরিচ্যুতের দাবি টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা ব্যক্তি ট্রাম্প আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য দিবসে রিকের র‌্যালি ও মানববন্ধন অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্সের সভাপতি হাসান শরীফ, সাধারণ সম্পাদক সোহেল চুয়েটে র‌্যাগিংয়ের দায়ে ১১ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার ঢাকায় উচ্চমাত্রার হর্ন ব্যবহার না করতে ডিএমপির নির্দেশনা তামিমের ঝড়ে জয় পেল চট্টগ্রাম তথ্য উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে ধোঁয়াশা, কর্মকর্তা প্রত্যাহার

সকল