শাহজাদপুরে দুই গ্রুপে সংঘর্ষ নিহত ৩, আহত ১৭
লক্ষ্মীপুরে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, যুবক-যুবতীর লাশ উদ্ধার- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ২১ জুন ২০২৪, ০২:৪০
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে দুই গ্রুপে সংঘর্ষে তিনজন নিহত ও অপর ১৭ জন আহত হয়েছেন। লক্ষ্মীপুরে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে এক স্বামী। এ ছাড়া নোয়াখালীর সেনবাগ এবং কুমিল্লার দেবিদ্বার থেকে দুই যুবক-যুবতীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার চর বর্ণিয়া গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপে সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। ঈদুল আজহার পরদিন সকালে উপজেলার গালা ইউনিয়নের চর বর্ণিয়া উত্তরপাড়া গ্রামের আখের শেখ ও একই গ্রামের দক্ষিণপাড়ার সায়েম উদ্দিন গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে ছানোয়ার হোসেন (৩২) নামে এক যুবক ঘটনাস্থলেই নিহত হন। ছানোয়ার হোসেন চর বর্ণিয়া দক্ষিণপাড়ার খোদা বক্স মোল্লার ছেলে।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন। গুরুতর আহত তামিম হোসেন গালিবকে (১৫) গত বুধবার সকালে ঢাকায় নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। নিহত তামিম হোসেন গালিব উপজেলার গালা ইউনিয়নের চর বর্ণিয়া গ্রামের দক্ষিণপাড়ার আবদুস সোবহানের ছেলে। নিহত ছানোয়ার হোসেন ও কিশোর তামিম হোসেন গালিব উভয়ই সায়েম উদ্দিন গ্রুপের সমর্থক ছিলেন।
অন্য দিকে সংঘর্ষে গুরুতর আহত ফরহাদ হোসেন (৩৫) গত বুধবার রাতে ঢাকায় মারা যায়। নিহত ফরহাদ হোসেন চর বর্ণিয়া উত্তর পাড়ার আবদুর রাজ্জাকের ছেলে এবং প্রতিপক্ষ আখের শেখ গ্রুপের সমর্থক ছিলেন। এই ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেছে নিহতদের পরিবার। এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শাহজাদপুর থানার ওসি আসলাম হোসেন জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে উপজেলার গালা ইউনিয়নের চর বর্ণিয়া গ্রামে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঈদুল আজহার পরদিন মঙ্গলবার সকালে চর বর্ণিয়া গ্রামের আখের গ্রুপ ও সায়েম গ্রুপের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘণ্টাব্যাপী দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। খবর পেয়ে শাহজাদপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, পারিবারিক কলহের জেরে লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে স্ত্রী শাহনাজ বেগমকে (২৫) কুপিয়ে হত্যা করেছে স্বামী শিহাব উদ্দিন। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে পাষন্ড স্বামী সিহাব। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার চর সেকান্দর এলাকার সুজনগ্রামে ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শাহনাজ বেগম ওই এলাকার বাসিন্দা। ঘাতক সিহাবের বাড়ি একই উপজেলার শ্যামলগ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘ দিন ধরে রামগতি উপজেলার সুজন গ্রামের একটি মসজিদে মুয়াজ্জিনের কাজ করতেন শিহাব উদ্দিন। এই সুবাধে ওই এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে স্ত্রী শাহনাজ বেগমসহ বসবাস করতেন তিনি। সকালে অন্যত্র খাসি জবাই করে বাসায় ফিরেন শিহাব। এ সময় পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার একপর্যায়ে শিহাবের হাতে থাকা ধারাল চুরি দিয়ে স্ত্রী শাহনাজ বেগমকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে শিহাব। পরে ঘরে শাহনাজ বেগমের লাশ ফেলে পালিয়ে যায় শিহাব। ঘটনার কিছুক্ষণ পর ঘর থেকে রক্ত বের হতে দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মোসলেহ উদ্দিন জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সংশোধিত
নোয়াখালী অফিস জানায়, নোয়াখালীর সেনবাগে ডোবা থেকে এক অজ্ঞাত যুবতীর (২৩) গলিত লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে উপজেলার বীজবাগ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ বালিয়াকান্দি গ্রামের একটি ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, উপজেলার দক্ষিণ বালিয়াকান্দি গ্রামের বালিয়াকান্দি ডিগ্রি কলেজের পার্শ্ববর্তী একটি ডোবা মৎস্য চাষ করার জন্য লিজ নেয় স্থানীয় কিছু যুবক। সকাল ১০টার দিকে ওই ডোবার কচুরিপানা পরিষ্কার করতে যায় কয়েকজন শ্রমিক। শ্রমিকদের একজন যুবতীর লাশটি কচুরিপানার নিচে দেখে স্থানীয় ইউপি সদস্যকে খবর দেন। পরে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। লাশটি পুরো পচে গেছে বলেও জানান স্থানীয়রা।
সেনবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হেলাল উদ্দিন বলেন, উদ্ধার হওয়া যুবতীর বয়স প্রায় ২৫ বছর। ধারণা করা হচ্ছে লাশটি দু-তিন মাস আগের হবে। তবে এখন পর্যন্ত লাশটির পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তিনি আরো বলেন হাত-পা নেই এবং একটি বোরকা পরা ছিল যুবতীর গায়ে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি জানান, কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ বাজারের খেয়াঘাট এলাকা থেকে ভাসমান অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এক যুবকের গলিত লাশ উদ্ধার করেছে দেবিদ্বার থানা পুলিশ। সে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার বিবির বাজার ইউনিয়নের অরন্যপুর গ্রামের আনার হোসেনের ছেলে আজাদ (২৭)।
থানা পুলিশ জানায়, কুমিল্লা নগরীর টিক্কারচরে গোমতী নদীর ব্রিজ পারাপারের সময় নদীতে পড়ে গত ছয় দিন নিখোঁজ ছিলেন আজাদ। পরে তার স্বজনরা ডুবুরি দিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছিল। কিন্তু তাকে আর পাওয়া যায়নি। নিখোঁজের ছয় দিন পর জাফরগঞ্জ খেয়াঘাট এলাকায় ভাসমান লাশ দেখে স্থানীয়রা দেবিদ্বার পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে তার পরিচয় শনাক্ত করেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা