দেশের ১০০ উপজেলা এখনো কালাজ্বরপ্রবণ
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৫ জুন ২০২৪, ০০:০৫
দেশের ২৬ জেলার ১০০ উপজেলা এখনো কালাজ্বরপ্রবণ। এখনো ৫০ শতাংশ কালাজ্বরের রোগী পাওয়া যায় ময়মনসিংহ অঞ্চলে। তবে রোগটি জনস্বাস্থ্য সমস্যা ঘোষণা করায় রোগ কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ২০২৫ সালের মধ্যে কালাজ্বরের সংক্রমণ বন্ধ করতে চায় এবং ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে কালাজ্বর মুক্ত করতে চায়। কালাজ্বর চিকিৎসায় সেন্টার অব এক্সিলেন্স (সিওই) হিসেবে কাজ করছে মহাখালীস্থ জাতীয় সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল। এই হাসপাতালে ২০০০ সালের আগে বছরে ৩ থেকে ৪ হাজার কালাজ্বরের রোগী চিকিৎসা নিতে আসত কিন্তু এখন তা কমে বছরে ১০০’র নিচে নেমে এসেছে। তবু কিছু কিছু মানুষ কালাজ্বরে এখনো আক্রান্ত হচ্ছে না।
একধরনের বেলে মাছির কামড়ে কালাজ্বর হয়ে থাকে। এ রোগে আক্রান্ত হলে দেহের রং পরিবর্তন হয়ে যায় এবং শরীর রক্তশূন্য হয়ে যায়। একনাগাড়ে দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে জ্বর হলে, প্লীহা বড় হয়ে গেলে, ওজন কমে গেলে, রক্তস্বল্পতা, দুর্বলতা ও শক্তি পাওয়া না গেলে কালাজ্বর হতে পারে। তবে এসব লক্ষণ দেখা দিলে পরীক্ষা করতে হবে কেবল কালাজ্বরপ্রবণ এলাকার বাসিন্দা হলে। সময়মতো চিকিৎসা না হলে প্রায় ৯৫% কালাজ্বর রোগীর মৃত্যু হয়।
বৃহস্পতিবার মহাখালীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে কালাজ্বর সেন্টার অব এক্সিলেন্স (সিওসি) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন এমেরিটাস অধ্যাপক প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা: এ বি এম আব্দুল্লাহ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডা: সাবেরা সুলতানা, ডা: কবিতা সিং। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিডিসি’র সহকারী পরিচালক ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা: এম এম আখতারুজ্জামান। ধন্যবাদ জানান সিডিসির পরিচালক অধ্যাপক ডা: শেখ দাউদ আদনান। সভাপতিত্ব করেন সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা: আরিফুল বাশার।
এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, কালাজ্বর প্রতিরোধ কল্পে এর বাহক নির্মূলে কাজ করতে হবে। ডা: সাবেরা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কালাজ্বর প্রোগ্রাম ও সেন্টার অব এক্সিলেন্সকে (সিওই) সার্বিক সহায়তা করে যাবে। এ সময় তিনি কালাজ্বরপ্রবণ এলাকা ময়মনসিংহ ও উত্তরবঙ্গের দিনাজপুর, রংপুর অঞ্চলে আরো দুটি সিওই প্রতিষ্ঠা করার অনুরোধ করেন।
প্রসঙ্গত, ১৮২৪- ১৮২৫ সালে যশোরে কালাজ্বরের প্রাদুর্ভাব ঘটে যাতে ওই অঞ্চলে ৭৫ হাজার জনেরও বেশি লোক মারা গিয়েছিল। পরবর্তীতে এই রোগটি বিভিন্ন শহর ও লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৫৩ সাল থেকে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে ডিডিটি ব্যবহার করে ছিটানো কার্যক্রমের কারণে ম্যালেরিয়ার পাশাপাশি কালাজ্বরের প্রাদুর্ভাব উল্লেখযোগ্য হারে কমে যেতে থাকে। পরে ১৯৮০’র দশকে ডিডিটি ছিটানো কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কালাজ্বরের প্রার্দুভাব আবার দেখা দিতে শুরু করে এবং ১৯৯৪ হতে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ৭৩ হাজার ৪৬৭ জন রোগী শনাক্ত হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা