বিপণিবিতান শপিংমলে ঈদের আমেজ নেই
- আবুল কালাম
- ১৪ জুন ২০২৪, ০০:০৫
আর মাত্র সপ্তাহ শেষে ঈদুল আজহা। সময় ঘনিয়ে এলেও রাজধানীর বিপণিবিতান ও শপিংমলে ঈদের আমেজ নেই। সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি বিক্রেতারা দোকান খুলে বসে থাকলেও ক্রতার দেখা মিলছে না। একই অবস্থা ফুটপাথেও। প্রতিদিন দোকানিরা কাপড় গয়নাসহ নানাসামগ্রী নিয়ে বসলেও বিক্রি হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিক্রেতারা।
রাজধানীর একাধিক শপিংমল ঘুরে দেখা যায় বিক্রি তেমন নেই। দোকানে দোকানে অলস সময় পার করছেন বিক্রেতারা। একধিক দোকানে দেয়া হয়েছে ছাড়। কিন্তু তাতেও ক্রেতা মিলছে না। এর বাইরে ক্রেতা টানতে কোথাও চলছে অফারের ছড়াছড়ি। কিন্তু তাতেও যেন ক্রেতার মন গলছে না। ফলে ক্রেতাহীন দোকানে গল্প গোজবে সময় কাটছে বিক্রিয়কর্মীদের।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতি বছর দুই ঈদে ব্যবসা দুইভাবে হয়। প্রথমত, রমজানের ঈদে বিপণিবিতান শপিংমল ক্রেতায় একাকার হয়ে যায়। আর কোরবানির ঈদে কাপড়ের ব্যবসা কম হয়। তখন কোরবানির পশুর বাজার সরব হয়ে ওঠে। তাই একটার সাথে আরেকটা এক করে ফেলা যাবে না। কম বেশির তফাৎ করা যেতে পারে। সে হিসেবে এখন কোরবানির সিজনে কাপড়ের ব্যবসা ভালো না। তবে অন্যান্য বছরের চেয়ে বিক্রি কম।
তাদের ভাষ্য, প্রতি বছর এমন সময়ে মার্কেটে যত ক্রেতা আসতেন এবার তার অর্ধেকের চেয়েও কম। কারণ ব্যাখ্যা করে তারা বলেন, মানুষের হাতে টাকা নেই। অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে মানুষ এখন একান্ত প্রয়োজন ছাড়া শখের কাপড় কেনে বলে মনে হয় না। তা ছাড়া এখন কোরবানির সময়। সামর্থ্যবানদের সামনে গরু কেনার বড় একটা বাজেটের চাপ। ফলে কাপড় এবং কোরবাণির পশু একসাথে দুই ব্যয় কয়জনের সাধ্যে আছে। এমনটা থেকেই মানুষ শপিংমলে আসছেন না। বসুন্ধরা শপিংমলে একাধিক বিক্রতা জানান, এখন বিক্রির সময় হলেও তারা ক্রেতা পাচ্ছেন না। যারা আসছেন তারা দরদাম করেই চলে যাচ্ছেন। আর যে দু-একজন কেনেন তারা একান্ত প্রয়োজনের বাইরে পণ্য কিনছেন না।
ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, সকাল থেকে দোকান বন্ধের আগ পর্যন্ত কিছু দোকানে সামান্য বিক্রি হলেও এমন দোকানও আছে যারা সারা দিনে কোনো বিক্রিও করতে পারছে না। এভাবে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে তারা বলেন, প্রতিদিন দোকানে বিক্রি না হলেও নিয়মিত কিছু খরচ আছে। যেমন দোকান ভাড়া, কর্মচারী বেতন, বিদ্যুৎ বিল, দুপুরের খাওয়া এসব মিলে প্রতিটি দোকানে দৈনিক দুই হাজার টাকা খরচ আছে। এমন অবস্থায় ব্যবসা না হলে মাস শেষে ভর্তুকি দিতে হয়। এমতাবস্থায় ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন মন্তব্য করে তারা বলেন, এক মাস বা দুই মাস না হয় ভর্তুকি দেয়া যায়। কিন্তু তা যদি মাসের পর মাস চলে তবে কি আর ব্যবসা টিকিয়ে রাখা যায়?
বসুন্ধরায় আড়ংয়ের আউটলেটের একজন বিক্রয়কর্মী জানান, প্রতি বছর এ সময় তাদের ক্রেতার ভিড় হলেও এবার চেয়ে কম। তার ভাষ্য, সারা বছরই তাদের নিয়মিত কিছু ক্রেতা থাকেন। ঈদ এলে তা বাড়ে। সে হিসেবে এবার তেমন বাড়েনি। তবে যা বিক্রি আছে তা একেবারে খারাপ বলা যাবে না।
গাউছিয়া মার্কেটে কসমেটিকসের বিক্রিয়কর্মী রিফাত আলম জানান, তাদের দোকানে নিয়মিত কিছু ক্রেতা আছেন। তাতে করে সারা বছরই কমবেশি বিক্রি আছে। তবে ঈদসহ উৎসব ঘিরে বিক্রির চাপ বাড়ে। কিন্তু গত কয়েক মাস থেকে বিক্রি আগের চেয়ে কম। আর ঈদ ঘিরেও তা বাড়েনি। প্রতি বছর এমনটা হয় না জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষের হাতে টাকা না থাকার প্রভাবে বিক্রি কমছে। ফলে ঈদ এলেও বিক্রি বাড়েনি।
নিউ মার্কেটের সামনে ফুটপাথে কাপড় বিক্রেতা রঞ্জু জানান, বিক্রি কম। মানুষ এখন আর আগের মতো কিনে না। ঈদে তারা বেশি প্রত্যাশা করেন জানিয়ে তিনি বলেন, ঈদে এমন অবস্থা হলে পরে কি হবে তা নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় আছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা