ভারতীয় পাটজাতের সাথে টেক্কা দেবে ‘সবুজ সোনা’
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১১ জুন ২০২৪, ০০:১৫
বাংলাদেশে মোট পাটবীজ চাহিদার ৯০ শতাংশের বেশি ভারত থেকে আমদানি করে পূরণ করতে হয়। ফলন ভালো ও সময় কম লাগায় কৃষকদের কাছে ভারতীয় পাটের জাত জেআরও-৫২৪-এর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ভারতীয় এই জাতের পাট বীজের কাছে মার খেয়ে আসছিল বাংলাদেশের জাতগুলো। তবে এবার বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিজেআরআই) বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত ‘বিজেআরআই তোষা পাট ৯ (সবুজ সোনা)’ ভারতের জাতটিকে টেক্কা দেবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিজেআরআই তোষা পাট-৯ এর ফলে বাংলাদেশে ভারতীয় পাট বীজের চাহিদা কমে আসবে বলে মনে করেন কৃষি খাত সংশ্লিষ্টরা।
গতকাল সোমবার রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ের প্রধান কার্যালয়ে বিজেআরআইয়ের কৃষি গবেষণা উইং কর্তৃক ২০২২-২৩ অর্থবছরে একটি জাত ‘বিজেআরআই তোষা পাট ৯ (সবুজ সোনা)’ এবং ৩টি প্রযুক্তি ‘রসুনের নির্যাস দিয়ে পাটের হলুদ মাকড় দমন ; প্রচলিত পাট পচনপদ্ধতির উন্নয়ন ও দেশী পাটের ইন ভিট্রো প্ল্যান্ট রিজেনারেশন প্রটোকল’ হস্তান্তরবিষয়ক একটি কর্মশালায় এসব তথ্য উঠে আসে।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের (বাকৃবি) সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান। বিজেআরআই মহাপরিচালক ড. মো: আবদুল আউয়ালের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) নির্বাহী পরিচালক ড. নাথু রাম সরকার, কেজিএফের জ্যেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ ড. মনোয়ার করিম খান, কেজিএফের পরিচালক (শস্য এবং প্রাকৃতিক সম্পদ) ড. মো: আক্কাস আলী এবং বিএআরসির সদস্য পরিচালক (শস্য বিভাগ) ড. মো: আবদুছ ছালাম।
প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান বলেন, বিজেআরআই তোষা পাট-৯ উদ্ভাবনের ফলে বাংলাদেশে ভারতীয় পাটের জাত জেআরও-৫২৪ এর উৎপাদন এবং পাট বীজের চাহিদা কমে আসবে। ফলে ভারতীয় বীজ আমদানিতে বাংলাদেশের যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয় তা অনেকাংশে কমে আসবে। বিজেআরআইয়ের উদ্ভাবিত এই নতুন জাত (বিজেআরআই তোষা পাট-৯/সবুজ সোনা) কে মাঠে পরিচিতি বাড়ানোর জন্য বিএডিসি এবং ডিএই-কে এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘উৎপাদনকে ঠিক রেখে স্বল্পসময়ের নতুন জাত উদ্ভাবনের ব্যাপারে বিজেআরআইয়ের বিজ্ঞানীদের কাজ করতে হবে। জমির স্বল্পতাকে মাথায় রেখে কিভাবে পাটের উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায় সে লক্ষ্যেও কাজ করতে হবে।’
বিজেআরআইয়ের মহাপরিচালক আউয়াল বলেন, ‘বিজেআরআই কর্তৃক উদ্ভাবিত নতুন এ জাতটি অন্য জাতগুলোর চেয়ে স্বল্প সময়ে ভালো ফলন দেয়। এই জাতের মাধ্যমে আমরা পাট বীজের আমদানিনির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারব বলে আশা করছি। পরীক্ষামূলকভাবে ভালো ফলন দেয়ায় এরই মধ্যে এর চাহিদা কৃষকদের মাঝে বেড়েছে।’ তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে বোরো ধান কাটার পর এই জাতটি বপন করলে একই জমিতে ৩-৪ ফসলের শস্যবিন্যাস আনা সম্ভব।
কর্মশালায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিজেআরআইয়ের পরিচালক (কারিগরি) মো: মোসলেম উদ্দিন, পরিচালক (জুট-টেক্সটাইল) ড. ফেরদৌস আরা দিলরুবা, পরিচালক (কৃষি) ড. নার্গীস আক্তার, পরিচালক (পিটিসি) ড. মাহমুদ আল হোসেন, পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) ড. এস এম মাহবুব আলীসহ বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা