৫ দিনেও উদ্ধার হয়নি ঢামেক থেকে চুরি হওয়া নবজাতক
- শামীম হাওলাদার
- ০৯ জুন ২০২৪, ০১:০২
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ২১২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে চুরি হওয়া নবজাতক পাঁচ দিনেও উদ্ধার হয়নি। এদিকে, সাংবাদিকদের সাথে কথা না বলতে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চিঠি দিয়েছেন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: আসাদুজ্জামান।
জানা গেছে, গত ৪ জুন দুপুর দেড়টা থেকে ২টার মধ্যে হাসপাতালের ২১২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে এক নারী চোর নবজাতকটিকে চুরি করে নিয়ে পালিয়েছে। গতকাল পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি নবজাতকটি।
এ ঘটনায় করা মামলার আইও এসআই ফারুক নয়া দিগন্তকে বলেন, গত ৪ জুন নবজাতক চুরির মামলা হয়েছে। যার নং ০৪। তিনি বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা থেকে প্রাথমিক অবস্থায় যা যা করার তা করেছি। তবে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
নবজাতকের বাবা শরিফুল ইসলাম বলেন, পাঁচ দিন অতিবাহিত হলেও তার সন্তানকে উদ্ধার করতে পারেনি কেউ। তিনি বলেন, হাসপাতালের ভিতরেই চোরের বসবাস, তা না হলে গরিব মানুষের বাচ্চা ওয়ার্ডের ভিতর থেকে বাইরে কোনোভাবেই যেতে পারে না। তিনি আরো বলেন, তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে। বর্তমানে সাভার এলাকায় ভাড়া থাকেন তিনি। পেশা দিনমজুর। গত সোমবার রাতে সাভারের কালামপুর থেকে ঢাকা মেডিক্যালের ২১২ নং ওয়ার্ডে ভর্তি হয় তার স্ত্রী সুখী। পরদিন সকাল ১০টার দিকে সুখী আক্তার জমজ দুটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন। শফিকুল বলেন, দুই নবজাতকের মধ্যে আমার বড় মেয়ের জ্বর আসে এবং পাশে থাকা এক মহিলা বলেন, আমার কাছে বাচ্চাটি দিয়ে আপনি বড় বাচ্চার জন্য ওষুধ নিয়ে আসেন। পরে এসে দেখি বাচ্চাসহ মহিলা নেই। এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।
নবজাতকের মা সুখী আক্তার বলেন, আমরা গরিব বলে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে সর্বস্বান্ত হয়ে নিজের সন্তান হারিয়ে ফেলব তা হতে পারে না। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে সন্তান চুরির বিচার চাই বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, আমার দুটি যমজ শিশুর মধ্যে একটির ওজন ছিল এক কেজি ৬০০ গ্রাম ও আরেকটি ওজন ছিল এক কেজি ৫০০ গ্রাম। বর্তমানে ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডের চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছি। আমার অন্য আরেকটি সন্তান এখন ভালো আছে বলে জানান চুরি হওয়া নবজাতকের মা।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, হলুদ ওড়না ও বোরখা পরা এক নারী ওই নবজাতককে কোলে নিয়ে আনসার সদস্যদের সাথে কথা বলে ২১২ নাম্বার ওয়ার্ড ও ২১১ নাম্বার ওয়ার্ড অতিক্রম করে নিয়ে চলে যায়। সিসিটিভিতে আরো দেখা যায় ওই নবজাতককে কোলে করে নিয়ে নির্দ্বিধায় গেট দিয়ে বেরিয়ে যায় অভিযুক্ত ওই নারী।
এদিকে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেবে না বলে একটি চিঠি ইস্যু করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: আসাদুজ্জামান। এতে বলা হয়েছে, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আগত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতিনিধির সাথে অত্র হাসপাতালে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া সাক্ষাৎকার বা বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো। এই চিঠির কপিগুলো হাসপাতালসহ ১৩টি বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে বারবার চেষ্টা করেও পরিচালকের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা