বিনিয়োগকারীরা ট্রেডে সতর্ক মূলধন কমলেও লেনদেন বৃদ্ধি
ডিএসইতে ৫২ শতাংশ বিক্রির চাপের বিপরীতে ক্রেতা ৪৮ শতাংশ- বিশেষ সংবাদদাতা
- ০৮ জুন ২০২৪, ০২:২৭
জাতীয় বাজেটকে কেন্দ্র করে সপ্তাহজুড়ে নানান গুঞ্জন ছিল পুঁজিবাজারে। বিশেষ করে ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স আরোপকে কেন্দ্র করে বিনিয়োগকারীরা বেশ সতর্ক অবস্থায় লেনদেন করেছে। যার কারণে পুরো সপ্তাহজুড়েই ছিল বিক্রির চাপ। অনেকটাই সঙ্কট ছিল ক্রেতার। বিশেষ করে সপ্তাহের প্রথম দিকে। ফলে সার্বিকভাবে উত্থান-পতনের মধ্য দিয়েও টাকায় লেনদেন আগের সপ্তাহের থেকে সদ্য বিদায়ী সপ্তাহে বেড়েছে ১৫.৭৫ শতাংশ। যদিও বেশির ভাগ কোম্পানি দরপতনের জালেই ছিল। বিশ্লেষকরা বলছেন, ডিএসইতে মিশ্র পারফরম্যান্স দেখা গেছে। ঢাকা পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক টানা চার সপ্তাহ ধরে তার হারানোর ধারাকে বাড়িয়েছে কারণ ট্রেডিং ফ্লোরজুড়ে একটি গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ দৃঢ় রয়েছে। জাতীয় বাজেট ঘোষণাকে ঘিরে উদ্বেগের কারণে বিনিয়োগকারীরা বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে সজাগ ছিলেন। যদিও বিনিয়োগকারীদের একটি অংশবিশেষ সেক্টর বা নির্দিষ্ট স্ক্রিপগুলোতে অবস্থান নিতে চেয়েছিলেন; যাতে দ্রুত লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। এসব কারণে লেনদেন বেড়েছে।
সাপ্তাহিক লেনদেনে ডিএসইর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, পুরো সপ্তাহে উত্থান-পতনে সূচক থেকে পয়েন্ট আসা-যাওয়ায় এখনো ঘাটতি রয়েছে। ডিএসইএক্স থেকে ১৪.৬৪ পয়েন্ট, ডিএসই-৩০ সূচক থেকে ১৬.৮০ পয়েন্ট, ডিএসই শরিয়াহ ৬.৯৪ পয়েন্ট এবং এসএমই সূচক থেকে ৯.৯৭ পয়েন্ট হারিয়েছে। টাকায় গড় লেনদেন আগের সপ্তাহের থেকে ১৫.৭৫ শতাংশ বেড়েছে। গেল সপ্তাহে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ৪৬ হাজার ৪৭৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে যা ছিল ছয় লাখ ৪৮ হাজার ৯২২ কোটি টাকা। বাজার মূলধন দুই হাজার ৪৪৪ কোটি টাকা কমেছে। আর এই কমার হার হলো ০.৩৮ শতাংশ। বিদায়ী সপ্তাহে টাকার অঙ্কে মোট লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ২৫৮ কোটি টাকা। এর আগের সপ্তাহে যা ছিল এক হাজার ৯৫০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। সদ্য বিদায়ী সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৫১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৯০ কোটি ১৪ লাখ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে গড়ে লেনদেন বেড়েছে ৬১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
শেয়ার লেনদেনের পরিমাণ আগের সপ্তাহের থেকে ৮.২৮ শতাংশ বেড়েছে। আগের সপ্তাহের থেকে ৩০৭ কোটি ২৮ লাখ টাকার বেশি বেচাকেনা হয়েছে। ব্লক মার্কেটে গত সপ্তাহে মোট ২২৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকার এবং এসএমইতে ৬২ কোটি ২৮ লাখ টাকার বেচাকেনা হয়েছে। বেচাকেনা বা লেনদেনে ইতিবাচক চিত্র দেখা গেলেও সাড়ে ৪৯ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দরপতনের শিকার ছিল। ৪১২টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিলেও দর বৃদ্ধিতে লাভবান হয়েছে ১৬৭টি কোম্পানি। দরপতনে লোকসানে ২০৪টি, দর অপরিবর্তিত ছিল ২২টির। তবে ১৯টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নেয়নি। খাতগুলোর মধ্যে ব্যাংক, সাধারণ বীমা, মিউচুয়াল ফান্ড, ফার্মা, বস্ত্র ও খাদ্য খাতের কোম্পানিগুলোর বেশির ভাগই লোকসানে ছিল।
আর চট্টগ্রাম পুঁজিবাজার বা সিএসইতে প্রধান সূচক সিএএসপিআই সোয়া শ’ পয়েন্টের বেশি হারিয়েছে। সিএএসপিআই ১২৫.৩৬ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ১২৪.৭৮, সিএসসিএক্স ৭৮.৬৫ পয়েন্ট এবং এসএমই সূচক ৩৯.৭৮ পয়েন্ট কমেছে। চার কোটি ৩৫ লাখ ৮৬ হাজার ৯০৯টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড হাতবদল হয়েছে ৪৩৩ কোটি ১৮ লাখ ৮০ হাজার ৬০০ টাকা বাজারমূল্যে। ৩১৫টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিলেও দর বৃদ্ধিতে ছিল ১২৬টি, দরপতনের শিকার ১৬০টি এবং ২৯টির দর অপরিবর্তিত ছিল। বাজার মূলধনে এ শ্রেণীর শেয়ারের অংশ ৭৫.০১ শতাংশ, বি শ্রেণীর ২৩,৪৮ শতাংশ, এন শ্রেণীর ০.৯৭ শতাংশ এবং জেড শ্রেণীর ০.৫৩ শতাংশ ছিল বলে সিএসইর সাপ্তাহিক তথ্য থেকে জানা গেছে।
প্রাতিষ্ঠানিক বিশ্লেষক রয়েল ক্যাপিটালের বিশ্লেষণ হলো, বাজারে গেল সপ্তাহে ক্রয় ও বিক্রির চাপ প্রায়ই কাছাকাছি ছিল। বিক্রির চাপ ছিল ৫২ শতাংশ এবং কেনার চাপ ছিল ৪৮ শতাংশ।
বাজারমূল্যে ৯টি খাতের কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে। আর ৯টি খাতের দরপতনের শিকার। বাজার মূলধনে অংশীদারিত্ব রয়েছে এ শ্রেণীর শেয়ারের ৮২.৫ শতাংশ, বি শ্রেণীর ১৩.৯ শতাংশ, এন শ্রেণীর ১.৪ শতাংশ এবং জেড শ্রেণীর ২.২ শতাংশ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা