১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

বাজেটে ব্যবসায়ীদের ওপর করের বোঝা চাপানো হচ্ছে : এমসিসিআই

-

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়মিত কর প্রদানকারী ব্যক্তি বা ব্যবসায়ীদের ওপর আরো বেশি করের বোঝা চাপানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)। গতকাল শুক্রবার ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমসিসিআই এ কথা জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাজেট বাস্তবায়ন অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। তবে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হলে বাজেট ব্যবস্থাপনার গতিশীলতা, করনীতি সংস্কার, করব্যবস্থার অটোমেশন, কর সংগ্রহে সামগ্রিক সিস্টেম লস কমানো এবং কর প্রশাসনের সক্ষমতা বৃদ্ধি তথা জনগণকে যথাযথ সেবা প্রদানের আরো সুযোগ রয়েছে।
এমসিসিআই সবসময় কর প্রশাসনে অর্থবহ কাঠামোগত পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়ে আসছে, যেন কর প্রশাসন যথাযথভাবে রাজস্ব সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। নিয়মিত কর প্রদানকারী ব্যক্তি বা ব্যবসায়ীদের ওপর আরো বেশি করের বোঝা চাপানো হচ্ছে, বিষয়টি সঠিকভাবে সমাধান করার জন্য এমসিসিআই জোর দাবি জানিয়েছে।
এমসিসিআই জানায়, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সুপারিশকৃত করব্যবস্থার চলমান সংস্কারের শর্তাবলির কারণে চূড়ান্ত বাজেট ঘাটতি বৃদ্ধি পেতে পারে। আইএমএফের ঋণের শর্ত অনুযায়ী কর-জিডিপির অনুপাত শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ হারে বাড়িয়ে ৮ দশমিক ৮ শতাংশে উন্নীত করতে গিয়ে করদাতাদের ওপর বাড়তি করের বোঝা চাপানোর আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। সুতরাং সরকারি প্রকল্পের অর্থায়নের ক্ষেত্রে ব্যয় সীমিত করার জন্য যথাযথ আর্থিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিচ্ছে এমসিসিআই।
বাজেটে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট (১৫৫,৯৩৫ কোটি টাকা) থেকে ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ কম। ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে সরকার দুই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারে; প্রথমত, ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি অর্থনীতিতে একটি ক্রাউডিং আউট (নেতিবাচক) প্রভাব তৈরি করতে পারে, যার ফলে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগকারীদের জন্য অর্থের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। দ্বিতীয়ত, সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়ে, যে চাপ শেষ পর্যন্ত বহন করতে হয় ভোক্তা বা জনগণকে।
বর্তমানে ক্রমাগত মূল্যস্ফীতিতে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েই চলেছে। এ পরিস্থিতিতে ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধি না করে বরং করহার ২৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৩০ শতাংশ নির্ধারণ করাকে এমসিসিআই পুনর্বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করছে। চেম্বার মনে করে করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধি তথা করনেট বৃদ্ধি না করে; শুধু বর্তমান করদাতাদের করহার বৃদ্ধি করলে আশানুরূপ কর জিডিপি অনুপাত অর্জন করা সম্ভব নয়।
আমদানিকৃত পণ্যসামগ্রীর সম্পূরক শুল্কের হার বৃদ্ধি জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করতে পারে বলে চেম্বার আশঙ্কা করছে। উচ্চ দ্রব্যমূল্যের কারণে দরিদ্র ও নিম্নআয়ের মানুষ কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হচ্ছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মূল্যস্ফীতির সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। কিন্তু ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মে মাসের মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ। ফলে টানা ১৪ মাস ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এমসিসিআই মনে করে মূল্যস্ফীতির এই লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত নয়।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement