১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা ১০ ডলারে নামায় খারাপ প্রভাব পড়েছে : অ্যালিস্টার ডাটন

-

২০১৭ সালে শরণার্থী সঙ্কট শুরু হওয়ার পর থেকে এতে সাড়াদান কার্যক্রমের অর্থায়ন একদম তলানিতে নেমে গেছে। তাদের খাদ্য সহায়তার জন্য প্রতি মাসে প্রতি জনের জন্য তহবিল ১০ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যান্য খাতের তহবিলও উল্লেখযোগ্যভাবে অনেক বেশি কমে গেছে এবং মুদ্রাস্ফীতি প্রায় ১১% পৌঁছেছে। এর আগে জনপ্রতি রেশনের পরিমাণ ছিল ১২ ডলার। এতে রোহিঙ্গাদের জীবনযাপনে প্রভাব পড়ছে। বসবাসের অবস্থারও অবনতি ঘটছে, কারণ বসবাসের ঘরগুলো, পানি ও স্যানিটেশন সুবিধার স্থানগুলো নিয়মিত মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আগের মতো প্রয়োজনীয় তহবিল নিয়ে তাদের পাশে থাকা প্রয়োজন।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন কারিতাস ইন্টারন্যাশনালিজের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যালিস্টার ডাটন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কারিতাস এশিয়ার প্রেসিডেন্ট ড. বেনেডিক্ট আলো ডি’রোজারিও, কারিতাস বাংলাদেশ প্রেসিডেন্ট বিশপ জেমস্ রমেন বৈরাগী, কারিতাস ইন্টারন্যাশনালিজ সেক্রেটারি জেনারেল অ্যালিস্টার ডাটন, কারিতাস বাংলাদেশ নির্বাহী পরিচালক সেবাস্টিয়ান রোজারিও, কারিতাস বাংলাদেশ পরিচালক - অর্থ ও প্রশাসন রিমি সুবাস দাশ, কারিতাস বাংলাদেশ পরিচালক-কর্মসূচি দাউদ জীবন দাস।
অ্যালিস্টার ডাটন বলেন, ২০১৭-২০২৩ পর্যন্ত কারিতাস কক্সবাজার এবং ভাসানচরে রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দানকারী কমিউনিটির সদস্যদের জন্য জরুরি সহায়তা হিসেবে ৪৫ মিলিয়ন ডলারের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এ সময়ে কারিতাস রোহিঙ্গা শরণার্থী সঙ্কটে সাড়া প্রদানে প্রায় এক লাখের মতো ব্যক্তিকে সহায়তা প্রদান করেছে, যার মধ্যে রয়েছে আশ্রয় সহায়তা, সুরক্ষা, দুর্যোগ ঝুঁঁকি হ্রাস কার্যক্রম, শিক্ষা, পানি, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধি। কারিতাস ২০২৪ সালে রোহিঙ্গা ও হোস্ট কমিউনিটির জন্যও সাত মিলিয়ন ডলার সহায়তা প্রদানের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গত ছয় বছরে দুই লাখেরও বেশি শিশুর জন্ম হয়েছে। এ শিশুরা কখনই তাদের নিজ দেশ দেখেনি ও তাদের কোনো জাতীয়তা নেই। তারা রাষ্ট্রহীন। এ বিষয়ে নতুন করে আন্তর্জাতিক মাধ্যমগুলোকে নজর দিতে হবে। রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনসহ অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য মিয়ানমারের ওপর চাপের পাশাপাশি এ অঞ্চল এবং এর বাইরের দেশগুলিকে সমানভাবে দায়িত্ব নিতে হবে।
অ্যালিস্টার ডাটন রোহিঙ্গাদের জন্য শক্তিশালী মানবিক অবস্থান এবং চলমান সহায়তার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান এবং বিশ্ববাসীকে তাদের জন্য আরো সহায়তার আহবান জানান। তিনি বলেন, গত সাত বছর ধরে বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য যে, উদারতা দেখিয়েছে এবং যেভাবে সমর্থন দিয়েছে, তাতে আমি গভীরভাবে অনুপ্রাণিত। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার একাই তাদেরকে সহযোগিতা করবে এটা আশা করা উচিত নয়; অন্যান্য দেশকেও পূর্বের মতো প্রয়োজনীয় তহবিল নিয়ে এ সঙ্কটকালে তাদের পাশে থাকা প্রয়োজন।


আরো সংবাদ



premium cement