জাপানপ্রবাসী স্বামীকে হত্যা করে স্ত্রী ফিরে গেলেন কানাডায়
ফ্ল্যাট থেকে গলিত লাশ উদ্ধার- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৩ জুন ২০২৪, ০০:০০, আপডেট: ০৩ জুন ২০২৪, ০৫:৫৮
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় আরিফুল ইসলাম নামে এক জাপান প্রবাসীকে হত্যা করে পালিয়েছেন তার স্ত্রী। গত শনিবার সন্ধ্যায় বসুন্ধরা সি ব্লকের ২ নম্বর রোডের ১/এ নম্বর বাসার ২০৩ নম্বর ফ্ল্যাট থেকে আরিফুলের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তার বুক ও গলায় ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
কানাডা প্রবাসী পারভীন নামের এক নারীর সাথে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসাটি ১৫ দিনের জন্য ভাড়া নেন আরিফুল। তিনিও জাপান থেকে আসেন, যা তার পরিবারের কেউ জানতেন না। বাসা থেকে নোটারি করা বিয়ের হলফনামা ও হাতে লেখা চিরকুট পাওয়া গেছে। হলফনামা অনুাযায়ী, পারভীন ও আরিফুলের বিয়ে হয়েছে। হাতে লেখা রয়েছে, ‘আমার জীবনের শান্তি নষ্ট করে দিছে এই র্যাপিস্ট ব্ল্যাকমেইলার। সে তার নিজের ইচ্ছায় আমার হাতে ধরা দিছে। নিজের হাতে র্যাপিস্ট ব্ল্যাকমেইলারকে মেরে শান্তি নিলাম।’ পরিবারের দাবি, আরিফুলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, গত ১৭ মে বিকেল ৪টা ৯ মিনিটে আরিফুল ইসলাম ও পারভীন আক্তার একসাথে ওই অ্যাপার্টমেন্টে প্রবেশ করেন। এরপর ১৮ মে ভোর ৬টা ৩১ মিনিটে বাসা থেকে একা বেরিয়ে যান পারভীন। জানা গেছে, আরিফুল জাপান প্রবাসী, আর পারভীন থাকেন কানাডায়। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মাটি প্রপার্টিস নামের একটি ভবনে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ফ্ল্যাট ভাড়া নেন তারা। ১৫ দিন পর শনিবার আরিফুলের লাশ মিলল ওই ফ্ল্যাটে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরিফুলের পরিবারের এক সদস্য বলেন, জাপানে আয়েশা নামে আরিফুলের একজন স্ত্রী রয়েছেন। তবে ধারণা করা হচ্ছে পারভীনের সাথে আরিফুলের পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল, যার কারণে পারভীন কানাডা থেকে ও আরিফুল জাপান থেকে দেশে আসেন। তবে তার দেশে আসার বিষয়টি পরিবারের কাউকে জানাননি।
ভাটারা থানার ওসি কাজী মইনুল বলেন, নিহতের শরীরে বিভিন্ন আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে চার-পাঁচ দিন আগে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি হত্যা মামলা করা হচ্ছে। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি। আরিফুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার কালিকুরপাড়ায়। তিনি শাহজাহান শিকদারের ছেলে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে জাপানে থাকেন। সেখানে এক জাপানি নারীকে বিয়ে করেছেন।
নিহতের ভাই সবুজ বলেন, জাপান থেকে তার স্ত্রী আমাদের ফোন দেয়ার পর আমরা জানতে পারি আরিফ ঢাকায় এসেছে। এর পর থেকে আমরা তাকে বিভিন্ন জায়গায় সন্ধান করতে থাকি। তাকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছিল না। সবুজ বলেন, দেশে থাকতে পারভীন নামে এক নারীর সাথে তার সম্পর্কে ছিল। হত্যায় মেয়েটি জড়িত থাকতে পারে বলে দাবি সবুজের।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার রাজন কুমার সাহা বলেন, আরিফুলের বুক ও গলায় ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে সিআইডি। ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। তিনি আরো বলেন, প্রযুক্তির সহায়তায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পারভীনের সবশেষ অবস্থান শনাক্ত করে পুলিশ। হত্যার পর পারভীন কানাডায় ফিরে গেছেন বলে ধারণা তাদের।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা