ঈদযাত্রায় একদিন কষ্ট হলে কী এমন আসে যায় : ওবায়দুল কাদের
ঢাকা সিটিতে ঈদের সময় খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধের নির্দেশ- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ৩১ মে ২০২৪, ০০:০৫
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, একদিন একটু সমস্যা হোক না, হোক। বাড়ি যাবে আনন্দ করবে, সেখানে একদিন না হয় একটু কষ্ট হলোই, তাতে কী এমন আসে-যায়!
গতকাল দুপুরে ঈদুল আজহা উপলক্ষে সড়কপথে যাত্রী সাধারণের যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘœ করার লক্ষ্যে করণীয় ঠিক করতে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় তিনি এ কথা বলেন। মৃদু ক্ষোভ প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, যানজট ও দুর্ঘটনা নিয়ে লেখালেখি হলেও দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যে আমূল পরিবর্তন ও উন্নয়ন হয়েছে, তা নিয়ে গণমাধ্যমে কোনো প্রশংসা নেই।
ঈদপরবর্তী নজরদারি কমানোর কারণে সড়কে দুর্ঘটনা বেড়ে যায়। এই দুর্ঘটনাই সবচেয়ে বড় দুর্ভাবনা। দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সড়কে তদারকি বাড়ানোর নির্দেশ দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, হেলপার যেন ড্রাইভার না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে। হেলপার ড্রাইভার হলে তো দুর্ঘটনা হবেই।
ঈদযাত্রা যানজটমুক্ত রাখতে ঢাকার প্রবেশপথসহ বিভিন্ন পয়েন্টে বাড়তি নজরদারি ও গাড়ি সরবরাহ পর্যাপ্ত রাখার নির্দেশনা দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আসা যায় ৩০/৪০ মিনিটে আর আর ঢাকায় হানিফ ফ্লাইওভারে দেড় দুই ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। গাড়ির চাপে স্থবির হয়ে থাকে হানিফ ফ্লাইওভার। নিচের দিকের কিছু কারণে এই সমস্যাটা। তবে জাতীয় স্বার্থেই এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।
ঈদে ঘরমুখো মানুষের কাছে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে বাস মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া দিতে গিয়ে অনেক সাধারণ যাত্রীর কাছে অর্থ থাকে না। জনগণের স্বার্থে বাস মালিকরা অতিরিক্ত ভাড়া বন্ধে কঠোরভাবে মনিটরং করার অনুরোধ করছি। বিআরটিসিও এই কাজটা করে। মন্ত্রী বলেন, ঈদুল আজহায় সড়কে সড়কে পশুবাহী গাড়ির চাপ থাকে যা রোজার ঈদে থাকে না। পশুবাহী গাড়ি ও পশুরহাট নিয়ে বাড়তি মনোযোগ দিতে হবে। গাজীপুরে বিআরটিএ প্রকল্পে আগে যানজট ছিল এখন নেই। ঈদযাত্রায় বিশেষ করে সমস্যা দেখা দেয় গার্মেন্টে ছুটির দিনে। বিশেষত চন্দ্রায়। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় হাটতে থাকে। গাড়ি প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকে। সেখানে বিআরটিসি গাড়ি রাখতে হবে। শ্রমিকদের বাড়ি যাওয়ার একটা অস্থিরতা থাকে। সেটা সামাল দিতে হবে প্রয়োজনীয় গাড়ি সরবরাহ করে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, পশুবাহী গাড়ি তো ধীর গতিতে চলবে। তবে গাড়ির যেন ফিটনেস থাকে। প্রথম কথা ফিটনেস। ঢাকা শহরের লক্করঝক্কর গাড়ি। রং দিয়ে কী করবেন। জীর্ণশীর্ণ চেহারার কতগুলো গাড়ি যেমন মালঞ্চ, প্রতিদিনই দেখি তাকানো যায় না। বাংলাদেশ এত এগিয়ে গেল আর বাস মালিকদের দৃষ্টিভঙ্গি এত নিচে নেমে গেল! রাস্তায় এত ভিজিট করার পরও পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি! এ সময় ঈদের আগে ঢাকা শহরে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, বৃষ্টির সময় খোঁড়াখুঁড়িতে শহরে যানজট সৃষ্টি হয়। নির্মাণাধীন রাস্তার কাজ অন্তত ৭ দিন বন্ধ রাখতে হবে। সিএনজি স্টেশন ঈদের আগে ৭ দিন এবং পরে ৫ দিন সার্বক্ষণিক খোলা রাখতে হবে। বৃষ্টির সময় এসেছে, এখন কিসের খোঁড়াখুঁড়ি! ঢাকার দুই সিটিতে ঈদের সময় খোঁড়াখুঁড়ির কাজ কঠোরভাবে বন্ধ রাখতে হবে। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর মেরামতের কাজ ঈদের আগেই শেষ করার নির্দেশ দেয়ার পাশাপাশি নতুন করে কোথাও কোনো খোঁড়াখুঁড়ি করে ঈদযাত্রায় যেন জনভোগান্তি সৃষ্টি করা না হয়, সে বিষয়েও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন তিনি।
সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, হেলমেট ছাড়া কেউ যেন মোটরসাইকেল চালাতে না পারে সেজন্য বিশেষ নজর রাখতে হবে। বিশেষ করে যারা রাজনীতি করে তারা এটা মানতে চায় না। হেলমেট ছাড়া সিএনজি স্টেশনে কেউ যেন তেল নিতে না পারে, আমি মন্ত্রীর লোক, এমপির লোক... এসব বলে কেউ যেন ছাড় না পায়। ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সভায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী, সেতু বিভাগের সচিব মো: মনজুর হোসেন, ডিএমটিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক, বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার, বিআরটিসি’র চেয়ারম্যান মো: তাজুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙ্গা ও মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহসহ অন্যান্য অংশীজনদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা