১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ক্লাসে উপস্থিতির গুরুত্ব বাড়ছে নতুন শিক্ষাক্রমে

২ বিষয়ে ফেল করলেও কলেজে ভর্তির সুযোগ
-

নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে বেশ কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এসব নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে এখন থেকে সব শিক্ষার্থীকেই ক্লাসে উপস্থিতির বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের ৭০ শতাংশের বেশি ক্লাসে উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অন্যথায় তাকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া হবে না। আবার কোনো শিক্ষার্থী এসএসসিতে দুই বিষয়ে ফেল করলেও তাকে কলেজে ভর্তির সুযোগ দেয়া হবে। তবে তাকে পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ বিষয়ে পাস করতে হবে। আর তিন বা তার বেশি বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হলে একাদশ শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হওয়া যাবে না।
নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে বর্তমানে মূলত দশম শ্রেণীতে নির্বাচনী পরীক্ষায় (টেস্ট) উত্তীর্ণ হলে এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ হয়। কিন্তু নতুন শিক্ষাক্রমে নির্বাচনী পরীক্ষা হবে না। যেসব শিক্ষার্থী নবম শ্রেণী শেষ করে দশম শ্রেণীতে উঠবে, তারাই এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পাবে। নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার মূল্যায়ন কাঠামোর সর্বশেষ প্রস্তাবে এমন তথ্য রয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এনসিটিবি বলছে, তারা আশা করছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) সভায় মূল্যায়নের বিষয়টি তাড়াতাড়ি অনুমোদন হবে।
উল্লেখ্য বর্তমানে যেসব শিক্ষার্থী নবম শ্রেণীতে পড়ছে, তারাই প্রথমবারের মতো নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষা দেবে। নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি পরীক্ষা ২০২৬ সালে নেয়ার পরিকল্পনা করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। তবে এর পরের বছর থেকে সামষ্টিক মূল্যায়নের (বার্ষিক পরীক্ষা) মতো ডিসেম্বরেই এসএসসি পরীক্ষা নেয়া যায় কি না, সে রকম ভাবনাও চলছে। নতুন শিক্ষাক্রমে এখনকার মতো পরীক্ষা হবে না। এসএসসি পরীক্ষার ফলও জিপিএর (গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ) ভিত্তিতে হবে না। নির্ধারিত পারদর্শিতা (নৈপুণ্য) অনুযায়ী সাতটি স্কেল বা স্তরে ফল বা রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করা হবে। এই সাত স্তরের হবে অনন্য, অর্জনমুখী, অগ্রগামী, সক্রিয়, অনুসন্ধানী, বিকাশমান ও প্রারম্ভিক। শিক্ষার্থীর পারদর্শিতা বা নৈপুণ্য (পারফরম্যান্স) অনুযায়ী এ স্তরগুলো নির্ধারণ হবে। যেমন সর্বোচ্চ স্কেল ‘অনন্য’ বলতে বোঝানো হবে শিক্ষার্থী সব বিষয়ে পারদর্শিতার চূড়ান্ত স্তর অর্জন করেছে। রিপোর্ট কার্ডে শিখনকালীন মূল্যায়ন ও পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়নের ফলাফল আলাদাভাবে সাতটি স্তরে হবে। সাতটি স্তরের জন্য থাকবে সাতটি ছক।
এনসিটিবি সূত্র জানিয়েছে, মূল্যায়নের সর্বশেষ প্রস্তাব হলো কোনো শিক্ষার্থী যদি দশম শ্রেণীতে ৭০ শতাংশ কর্মদিবসে উপস্থিত না থাকে, তাহলে সে পাবলিক পরীক্ষা বা মূল্যায়নের জন্য বিবেচিত হবে না। তবে জরুরি বা বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে উপস্থিত হার ৭০ শতাংশের কম হলেও সব বিষয়ের শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের সাথে সম্মিলিত আলোচনার মাধ্যমে কোনো শিক্ষার্থীকে পাবলিক মূল্যায়নে অংশগ্রহণের জন্য বিবেচনা করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে তার জন্য যথেষ্ট যৌক্তিক কারণ এবং তার সপক্ষে যথাযথ প্রমাণ থাকতে হবে। এর আগে গত বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হয়। চলতি বছর দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণীতেও চালু হয় এ শিক্ষাক্রম। ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণীতে চালু হবে নতুন শিক্ষাক্রম। কিন্তু এসএসসির মূল্যায়ন কেমন করে হবে, সেটি চূড়ান্ত করতে পারছে না শিক্ষা বিভাগ।
এনসিটিবি সূত্র জানিয়েছে, তাদের সর্বশেষ প্রস্তাব অনুযায়ী, একেকটি বিষয়ে কয়েকটি পারদর্শিতার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। কোনো বিষয়ে একের বেশি পারদর্শিতার ক্ষেত্রে ‘প্রারম্ভিক’ স্তরে থাকলে শিক্ষার্থী ওই বিষয়ে উত্তীর্ণ হিসেবে বিবেচিত হবে না। আর যদি কোনো বিষয়ে দুইয়ের বেশি (তিন বা তার ততোধিক) পারদর্শিতার ক্ষেত্রে ‘বিকশমান’ বা তার নিচের স্তরে থাকে তাহলেও সে বিষয়ে উত্তীর্ণ হিসেবে বিবেচিত হবে না।
এ ছাড়া কোনো শিক্ষার্থী যদি তিন বা তার বেশি বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হয়, তাহলে পরবর্তী শ্রেণীতে (একাদশ শ্রেণী) উত্তীর্ণ হবে না। কিন্তু কোনো শিক্ষার্থী এক বা দুই বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হলে শর্তসাপেক্ষে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হতে পারবে। সে ক্ষেত্রে পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অনুত্তীর্ণ হওয়া বিষয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে। নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়নের সাথে যুক্ত একটি সূত্র জানিয়েছে, শর্তসাপেক্ষে উচ্চমাধ্যমিকে ওঠা কোনো শিক্ষার্থী যদি নির্ধারিত দুই বছরের মধ্যে অনুত্তীর্ণ হওয়া বিষয়ে উত্তীর্ণ হতে না পারে, তাহলে সে নিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসেবে এইচএসসি পরীক্ষা দিতে পারবে না। কিন্তু এরপরও তার সুযোগ থাকবে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে অনিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে অনুত্তীর্ণ হওয়া বিষয়ে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পাবে।
এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যানের রুটিন দায়িত্বে থাকা সংস্থাটির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো: মশিউজ্জামান বলেন, মূল্যায়নের বিষয়টি এনসিটিবি পর্যায়ে ঠিক করা হয়েছে। এখন এনসিসিসির (মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের সভাপতিত্বে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি) সভায় তা অনুমোদন হলেই সেটি সবাইকে জানিয়ে দেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
‘দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই’ পাটখাতে সংকট সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে : পাট উপদেষ্টা তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবি : ৩ দিন সাগরে ভেসে ছিল শিশুটি বিএসএমএমইউ’র ভিসিকে অবরুদ্ধ করে স্নাতকোত্তর কোর্সে ঢোকার চেষ্টা ১৩ চিকিৎসকের অস্ট্রেলিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশী শিক্ষক নিহত ডিজিটাল যুগে ইসলামিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ও চ্যালেঞ্জ থার্টি ফার্স্ট নাইটে আতশবাজি ও ফানুস নিষিদ্ধ রিজার্ভ বেড়ে এক হাজার ৯০০ কোটির ঘরে এবার শীত কম হবে, নাকি বেশি জনগণের হয়রানি রোধে জমির ডিজিটাল জরিপ করা হচ্ছে : মহাপরিচালক ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় অটোরিকশাচালক নিহত

সকল