এভারেস্ট ও লোৎসে জয়ে দুঃসাহসী অভিযানের গল্প শুনালেন বাবর আলী
- চট্টগ্রাম ব্যুরো
- ৩০ মে ২০২৪, ০০:৫৩
পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ ‘এভারেস্ট’ ও চতুর্থ সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ‘লোৎসে’ জয় করে দেশে ফিরেছেন চট্টগ্রামের সন্তান বাবর আলী। গত মঙ্গলবার বিকেলে নেপাল থেকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। এরপর নিজ শহর চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেন বাবর। রাতে চট্টগ্রামে পৌঁছেন।
বাংলাদেশ থেকে প্রথমবার একই অভিযানে হিমালয়ের দুইটি ৮ হাজার মিটার উচ্চতার পর্বত শৃঙ্গ জয়ের কীর্তি কেবলই চট্টগ্রামের সন্তান বাবরের। গতকাল বুধবার ওই দুঃসাহসী অভিযানের গল্পই বাবর শোনালেন চট্টগ্রাম নগরীর আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য চট্টগ্রাম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলন এবং পতাকা-প্রত্যর্পণ অনুষ্ঠানে।
ডা: বাবর আলী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আশপাশে অনেক লেক সৃষ্টি হয়েছে। তুষারপাতহীন অবস্থা ব্লু আইস বেরিয়ে আসছে। এতে পর্বত আরোহন কঠিন হয়ে উঠছে। শুধু তা-ই নয়, জলবায়ুর এই পরিবর্তনে আশপাশের পরিবেশ প্রতিবেশে বেশ বিরূপ প্রভাব পড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনে দেশের উত্তম স্থান হিমালয়। এটা শুধু পর্বত আরোহন আর নয়, পরিবেশ রক্ষায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে গবেষণার স্থানও।
চট্টগ্রামের হালদা পাড়ের সন্তান চিকিৎসক এবং পর্বতারোহী বাবর আলী ১৯ মে পৃথিবীর শীর্ষ পর্বত এভারেস্ট এবং ২১৮৫ মে চতুর্থ শীর্ষ পর্বত লোৎসে আরোহন করে উড়িয়েছেন লাল-সবুজের পতাকা।
তিনি জানান, এভারেস্ট শীর্ষে প্রায় দেড় ঘণ্টার মতো অবস্থান করেছেন। নেমে আসার সময় এক আহত পর্বতারোহীর জন্য সৃষ্ট মানব জটে প্রায় দেড় ঘণ্টা আটকে ছিলেন। ওই উন্মুক্ত এলাকায় শুরু হয় তুষারঝড়। সৌভাগ্যক্রমে তিনি বড় কোনো দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে যান।
ক্যাম্প-৪ এবং এর ওপরের এলাকায় পর্বতারোহীরা অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করলেও বাবর চেষ্টা করেছেন অভিযানে যতটা সম্ভব কম কৃত্রিম অক্সিজেন নিতে। কারণ তিনি স্বপ্নে দেখেন আগামীতে অক্সিজেন সহায়তা ছাড়াই কোনো আটহাজারী শৃঙ্গ আরোহন করবেন। দুই পর্বতে তার সাথী ছিলেন নেপালের গাইড বাইরে তামাং।
বাবর আরো বলেন, এভারেস্টের উচ্চতা বেশি হলেও লোৎসে আরোহন তুলনামূলক কঠিন। এভারেস্ট ও লোৎসে শিখর থেকে দেখা নিচের পৃথিবীর দৃশ্য এই জীবদ্মশায় ভুলে যাওয়া সম্ভব নয় বলে জানান বাবর আলী।
শিখর থেকে অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে নেমে আসেন বাবর। বেসক্যাম্প থেকে কাঠমান্ডু ফিরেন মাত্র তিন দিনে। নিজের সফলতার পেছনে এই পর্বতারোহী কৃতিত্ব দেন নিজের দীর্ঘদিনের পরিশ্রমকে। এ ছাড়াও তিনি কৃতজ্ঞতা জানান নিজের ক্লাব ‘ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স’, সব পৃষ্ঠপোষক সংগঠন এবং ক্রাউড ফান্ডিংয়ে অংশ নেয়া সব শুভাকাক্সক্ষীদের।
বাবর আলীর সফলতা উদযাপনে আগামী ২ জুন চট্টগ্রাম নগরীতে বিকেল ৫টায় অনুষ্ঠিত হবে চট্টগ্রামের সাইক্লিস্টদের অংশগ্রহণে সাইকেল শোভাযাত্রা এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে বাবর আলী নিজের অভিযানের গল্প শোনাবেন চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে।