১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
কেন্দ্র দখল করে জাল ভোটের অভিযোগ

ওবায়দুল কাদেরের ভাইয়ের ভোট বর্জন

-

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর কো¤পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গতকাল বুধবার জোরপূর্বক এজেন্ট বের করে দেয়া, এজেন্ট ফরম ছিঁড়ে ফেলা ও কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেন সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই শাহাদাত হোসেনসহ ২ চেয়ারম্যান ও ১ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ।
অপর ২ জন হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ফাতেমা বেগম পারুল (প্রজাপতি)।
ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই ও চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাদাত হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘আনারস মার্কার গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুলের পক্ষ নিয়ে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার (তার ভাই) নেতৃত্বে তার ছেলে তাসিক মির্জা ও ভাগিনারা আমার কর্মী ও এজেন্টদের মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছেন। তারা সাড়ে ৮টার মধ্যে সিল মেরে সব ভোট শেষ করেছে। মেয়র নিজে কেন্দ্রে কেন্দ্রে গিয়ে জাল ভোট মারার অর্ডার দিয়ে নিজে ভোট মেরেছেন। তিনি আরো বলেন, গত রাতে আমার সমর্থকদের বাড়িঘরে ব্যাপক ভাঙচুর, বোমাবাজি ও কুপিয়ে জখম করেছে। যার কারণে অনেক এলাকায় আমার কর্মী ও এজেন্টরা বাড়ি থেকে বের হতে পারেনি। প্রশাসনকে এ বিষয়ে অভিযোগ জানালেও কোনো প্রতিকার পাইনি। এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রী এবং নির্বাচন কমিশনারের কাছে ভোট বাতিল ও পুনঃ তফসিল ঘোষণার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।
অপর দিকে, কো¤পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল বলেন, ‘এখানে ভোটের পরিবেশ আগেও ছিল না। আমরা স্বাধীনভাবে কোনো মত প্রকাশ করতে পারিনি, ভোট চাইতে পারিনি। ভোটারদের কাছে যেতে আমাদেরকে বাধা প্রদান করা হয়েছে। এ জন্য আমি রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। আজ সকালে আমার এজেন্ট যারা কেন্দ্রে গিয়েছে, তাদের এজেন্ট ফরম ছিঁড়ে ফেলেছে, টেবিল ভেঙে প্রত্যেককে মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে। এখন ওপেন সিল মারছে তারা। ভোটাররা কেন্দ্রে আসার সময় তাদের কুপিয়ে ও মাথা ফাটিয়ে ফেলে রেখেছে। তারা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যেতে পারছে না। কিছু কিছু কেন্দ্রে পুলিশ আমাদের ভোটারদের পিটুনি দিয়েছে। এ অবস্থায় আমরা ভোট মেনে নিতে পারি না, চলতে পারে না। এটা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তিনবারের সাধারণ স¤পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেবের মানসম্মানে আঘাত করা হয়েছে। তার উপজেলায় সারা রাত বোমাবাজি করা হয়েছে, মানুষকে জখম করা হয়েছে, মানুষ ভোট দিতে পারছে না। তার ভাতিজা তাসিক ও ভাগিনা রাহাতের নেতৃত্বে ১০-১৫টা অনুমোদনহীন গাড়ি নিয়ে কেন্দ্রে কেন্দ্রে তাণ্ডব চালানো হয়। তাই আমি সেতুমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করবো, এ ভোট বাতিল করে নতুন করে নির্বাচন দেয়া হোক। অপর দিকে, বাদল অনুসারীদের বিরুদ্ধে ভোট কেন্দ্র চরএলাহী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের ভাই খোকনসহ কয়েকজনকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ করেছেন মির্জা অনুসারীরা।
নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কাছে লিখিত ও মৌখিক কোনো অভিযোগ আসেনি। আমি নিজেই কো¤পানীগঞ্জে আছি। কয়েকটি কেন্দ্রে তাদের এজেন্টদেরও পেয়েছি। কোথায়, কোন কেন্দ্রে অভিযোগ, আমাকে সুস্পষ্টভাবে জানানো হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ এ দিকে কো¤পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার প্রার্থীর লোকজনের ওপর ৩ প্রার্থীর লোকেরা হামলা চালিয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement