১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

আমার আবিষ্কার করা বিমানের সুফল বাংলাদেশও পাচ্ছে : ড. হুমায়ুন

-

চালকবিহীন হেলিকপ্টার ও বিমানের আবিষ্কারক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আমেরিকার বোয়িং কোম্পানিতে ঊর্ধ্বতন বিজ্ঞানী হিসেবে কর্মরত ড. হুমায়ুন কবির বলেছেন, আমেরিকায় আমার আবিষ্কার করা বিমানের সুফল বাংলাদেশও পাচ্ছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কটিয়াদী রিপোর্টার্স ইউনিটির আয়োজনে বিজ্ঞানীকে সংবর্ধনা দেয়া ও মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
কটিয়াদী রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি অধ্যক্ষ ফ হ আলমগীর জোয়ারদারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক রফিকুল হায়দার টিটুর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন কটিয়াদীর সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. হুমায়ুন কবির। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তার সহধর্মিণী ফরিদা কবির। অনুষ্ঠানের শুরুতেই কটিয়াদী রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংবাদিকরা তাকে এবং তার সহধর্মিণীকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শৈশব ও কৈশোরের জীবন বর্ণনা করতে গিয়ে বিজ্ঞানী ড. হুমায়ুন কবির বলেন, তিনি ১৯৫৫ সালে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চন্ডীপাশা ইউনিয়নের বড় আজলদী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বয়স তিন মাস তখন তার মা তাকে নিয়ে তার বাবার কাছে ঢাকায় চলে যান। সেখানে তার যখন পাঁচ বছর থেকে প্রাথমিক শিক্ষালাভের জন্য তার নানার বাড়ির একটি প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি করানো হয়। তিনি যখন চতুর্থ শ্রেণীতে উড়োজাহাজ কিভাবে বানানো যায় তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতেন। তাছাড়া তিনি গণিত বিষয়ে খুব পারদর্শী ছিলেন। তিনি কৃতিত্বের সাথে পঞ্চম শ্রেণীর গণ্ডি পেরিয়ে তার নিজ বাড়ি বনগ্রাম ইউনিয়নের বনগ্রাম আনন্দ কিশোর উচ্চবিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হন। ছোটকাল থেকে তিনি মেধাবী ছিলেন বলে তাকে পিছপা হতে হয়নি। তিনি ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে শুরু করে দশম শ্রেণীতে সবসময় প্রথম হতেন। তারপর মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি মুক্তিবাহিনী হিসেবে দেশকে তিনি শত্রুর কবল থেকে মুক্ত করেন। কিন্তু তার জীবনের সবচেয়ে ট্র্যাজেডি হলো ওই মুক্তিযুদ্ধে তার পরম প্রিয় বাবাকে হারান। তারপর তিনি আবার বনগ্রাম আনন্দ কিশোর উচ্চবিদ্যালয় থেকে মেট্রিক পরীক্ষা দেন। ওই পরীক্ষায় তিনি স্টার মার্ক পেয়েছিলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোন মানুষের অদম্য ইচ্ছা থাকলে সব কিছুই সম্ভব। মানুষের মেধাকে সঠিক পথে কাজে লাগালে সে অবশ্যই সফল হবে। একজন মানুষ কোটি কোটি মানুষের উপকারে আসতে পারে, যদি তার মেধাকে ভালো পথে কাজে লাগায়। সুশিক্ষিত হয়ে দেশের, দশের, সারা পৃথিবীর উপকারে লাগতে পারে। কষ্টকে জয় করেই আমি আজ এই অবস্থানে।
নয়া দিগন্ত সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিমান তৈরি অনেক ব্যয়বহুল। প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয় যা আমাদের দেশের ক্ষেত্রে তা কখনো সম্ভব নয়। উন্নত দেশ ছাড়া এটি অনেক দুরূহ ও কঠিন কাজ। আমার তৈরি কয়েকটি বিমান আমেরিকা সরকার বিক্রি করছে। বাংলাদেশ কয়েকটি বিমান এনেছে। ফলে সরাসরি না হলেও এর সুফল পাচ্ছে বাংলাদেশ।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, কটিয়াদী সরকারি পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বদিউল আলম মাহফুজ। বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর মোহাম্মদ মোস্তফা, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি (বীমা) কটিয়াদী এরিয়া ম্যানেজার আব্দুল মান্নান স্বপন, কটিয়াদী ইতিহাসগ্রন্থের লেখক সারোয়ার হোসেন শাহীন। সাংবাদিক ছাইদুর রহমান নাঈম। দৈনিক নয়া দিগন্ত প্রতিনিধি ফখর উদ্দিন ইমরান, সাংবাদিক ধ্রব রঞ্জন দাস, মাসুম পাঠান, মিজানুর রহমান, মাসুম বিল্লাহ তাহের প্রমুখ।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement