বাড্ডায় বোমাসহ আটক ৩

রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় একটি বাড়িতে তৈরি হচ্ছিল হাতবোমা। সেখানে অভিযান চালিয়ে ৬৫টি বোমা জব্দ করেছে র‌্যাব। সেই সাথে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তারা তিনজনই বোমা তৈরির কারিগর। বোমাগুলো বিস্ফোরণ ঘটালে ৩০ মিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম বলে জানিয়েছে র‌্যাব। বুধবার রাতে পূর্ব বাড্ডার টেকপাড়া এলাকার একটি বাড়ি থেকে বোমাগুলো জব্দ করা হয়।
র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো: ফিরোজ কবীর সাংবাদিকদের জানান, ওই বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ হাতবোমা উদ্ধার করা হয়েছে। বোমাগুলো শূন্যে বিস্ফোরণ ঘটানো সম্ভব। সেইসাথে বোমা তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামও জব্দ করা হয়েছে।
এই বোমাগুলোর সাথে উগ্রবাদীদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা মূলত কাট আউট পদ্ধতিতে কাজ করে। মূলত যারা আটক হয়েছে, তারা টাকার বিনিময়ে কাজটি করে আসছিল। কোথায় এগুলোর ব্যবহার হবে, তা তারা আমাদের জানাতে পারেনি। আমরা ধারণা করছি, বোমাগুলো আজই (বৃহস্পতিবার) পাঠানোর কথা ছিল।
তিনি বলেন, আমরা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারি কয়েকজন উগ্রবাদী বোমা তৈরি করে। গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছে। এই তথ্য পাওয়ার পর গত ৮ থেকে ১০ দিন তাদের নজরদারিতে রাখা হয়। গত ২ থেকে ৩ দিন আগেই আমাদের একটা অভিযান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উগ্রবাদীদের নিজেদের মতানৈক্যের কারণে সেটি আমাদের সুবিধা মতো হয়নি। বুধবার বিকেলে এই স্থানের তথ্য পেয়ে অভিযান চালাই। তারা বাড্ডার এই বাসায় হাতবোমা তৈরি করছিল। অভিযানে বোমা তৈরির সময় তিনজনকে আটক করা হয়। এ সময় বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
তিনজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‌্যাব কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা সজিব নামে একজনের মাধ্যমে ২ থেকে ৩ ঘণ্টার কাজের চুক্তিতে সেখানে এসেছিল। তিনজনই মূলত জুতার কারখানায় কাজ করেন। ২৬ হাজার টাকার চুক্তিতে তারা এ কাজে এসেছিলেন। কথা ছিল এখানে ছোট একটি ঘরে বোমাগুলো তৈরি শেষে দরজায় তালা মেরে চলে যাবেন। আর চাবি নির্দিষ্ট স্থানে মাটি খুঁড়ে রেখে যাবেন। সজিব ছাড়া কেউ জানবে না, কোথায় চাবি। বোমাগুলো রাতেই গাজীপুর যাওয়ার কথা ছিল। গাজীপুর থেকে কার কাছে যাবে সেটা মাসুম নামে একজন জানেন।
তিনি বলেন, আমাদের বোম ডিসপোজাল ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে বোমাগুলোর গঠন, ওজনসহ বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ করে জানিয়েছে, সেগুলো অত্যন্ত বিপজ্জনক। এই বোমাগুলো শূন্যে বিস্ফোরণ ঘটানো সম্ভব, প্রতিটি বোমার বিস্ফোরণ ৩০ মিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম ছিল। সবকিছু বিবেচনায় আমাদের মনে হয়েছে বিপজ্জনক বিস্ফোরক দ্রব্য।